মৃত বিজেপি যুবনেতা রাজু সরকার।
বিজেপি যুবনেতার মৃত্যুতে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করল কলকাতা পুলিশ। সোমবার রাতে হেস্টিংসে বিজেপির সদর দফতরে ঠিক কি ঘটেছিল তা জানতে শুরু হয়েছে তদন্তও। এ ব্যাপারে বিজেপির ১০-১২ জন নেতা কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে মৃত নেতা রাজু সরকারের ময়নাতদন্তের পরই তদন্তের প্রক্রিয়াটি পুরোদমে শুরু হবে।
বিজেপির সদর দফতরে সংঘর্ষের ঘটনার পর দলের যুবনেতা রাজু সরকারের মৃত্যু নিয়ে সোমবার রাত থেকেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। একদিকে যখন তৃণমূলের একাধিক নেতা বিজেপির অফিসে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তখন বিজেপি জানতে চেয়েছে, অসুস্থ নেতাকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা না দিয়ে কেন অন্যত্র রেফার করেছিল সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম? বিজেপি নেত্রী অর্চনা মজুমদার, যিনি পেশায় একজন চিকিৎসকও, মঙ্গলবার এ নিয়ে নেটমাধ্যমে একটি পোস্টও করেছেন। অর্চনা লিখেছেন, ‘জীবনের শেষ লড়াই রাজু লড়তে পারত যদি রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম ওকে ভর্তি করে ওর চিকিৎসা করত, ওকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করত রেফার না করে।’ এর মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে বিজেপি যুবনেতার মৃত্যুতে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে হেস্টিংস থানার পুলিশ। যদিও রাজুর পরিবার এখনও এ নিয়ে পুলিশের কাছে বা প্রকাশ্যে কোনও অভিযোগ জানায়নি।
জীবনের শেষ লড়াই রাজু লড়তে পারতো যদি রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম ওকে ভর্তি করে ওর চিকিৎসা করতো, ওকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতো রেফার না করে।
— Dr. Archana Majumdar (@DrArchanaWB) July 27, 2021
না ফেরার দেশে চলে যাওয়া রাজুর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। @BJYMinWB @BJP4Bengal pic.twitter.com/St3ktMrIrc
বিজেপির যুব সহসভাপতি রাজু সরকারের মৃত্যুতে শোক জানাচ্ছি। যোগাযোগ রাখত। দেখা করেছিল ক'দিন আগে। হোয়াটসঅ্যাপ করত। যন্ত্রণায় ছিল। বিজেপি দপ্তরে কী ঘটেছিল, নানারকম কথা আসছে। আশা করি উপস্থিতরা তথ্যগোপন বা বিকৃত করবেন না। আচমকা এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে মানতে কষ্ট হচ্ছে।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 26, 2021
পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই দায়ের করেছে মামলাটি। শুধু তা-ই নয়, লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার তরফে তদন্তও শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই বিজেপির হেস্টিংস অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। কীভাবে হাতহাতির ঘটনার সূত্রপাত, সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা। একইসঙ্গে মৃত নেতার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। বিজেপি-র সর্বোচ্চ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে কী ভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
একটি অসমর্থিত সূত্রের খবর, সৌমিত্র খাঁ-এর গোষ্ঠীর সঙ্গে রাজু সরকারের গোষ্ঠীর অশান্তি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। বরাবরই এই দু’জনের মধ্যে বৈরিতা ছিল। সোমবার দু’দলের হাতাহাতির জেরে উত্তেজনা ছড়ায়। সেই সময়েই হৃদরোগে আক্রান্ত হন রাজু। প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতালে পরে সেখান থেকে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।