মনমোহন সিংহের প্রয়াণে একাংশের ‘নীরবতা’ নিয়ে সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের শেষকৃত্য ঘিরে ইতিমধ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে কংগ্রেসের চাপানউতর শুরু হয়েছে। বিতর্কের আবহে এ বার সমাজমাধ্যমে সরব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্রীড়া এবং চলচ্চিত্র জগতের একাংশ মনমোহনের প্রয়াণে ‘নীরব’ বলে মনে করছেন অভিষেক। সরাসরি কারও নামোল্লেখ করেননি তৃণমূল নেতা। ক্রীড়া এবং চলচ্চিত্র দুনিয়ার ওই ব্যক্তিত্বদের এমন মনোভাব বেশ কিছু ‘অস্বস্তিকর’ প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে বলে মত অভিষেকের। তাঁরা কেন্দ্রের বিরাগভাজন হওয়ার ভয় পাচ্ছেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সাংসদ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লি এমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মনমোহন। দেশে অর্থনৈতিক সংস্কার এবং উদারনীতির জন্য পথকে প্রশস্ত করার জন্য তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে দলমতনির্বিশেষে ভারতের সব রাজনীতিকের থেকে তো বটেই, আন্তর্জাতিক মহল থেকেও শোকবার্তা এসেছে। শনিবার দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্যের সময়ে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগেও।
তবে মনমোহনের প্রয়াণের পর থেকেই কেন্দ্রের সঙ্গে চাপানউতর শুরু হয় কংগ্রেসের। প্রথমে শেষকৃত্যের স্থল নিয়ে টানাপড়েন দেখা দেয়। পরে নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। সেখানে গান্ধী পরিবার এবং কংগ্রেসের অন্য নেতাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্যের সময়ে কেন্দ্র মনমোহনের প্রতি ‘অশ্রদ্ধা’ প্রদর্শন করেছে বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। শনিবার বিকেলে শ্মশানে ‘অব্যবস্থা’র অভিযোগ তুলে সরব হন কংগ্রেস নেতারা। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। এই বিতর্কের আবহে এ বার মনমোহনের প্রয়াণে ক্রীড়া এবং চলচ্চিত্র দুনিয়ার একাংশের ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অভিষেকও।
অভিষেক সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “তথাকথিত ‘আইকন’দের অনেকেরই জাতীয় স্তরের কোনও প্রসঙ্গে চুপ থাকা রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে।” এমন ঘটনা এই প্রথম নয় বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতা। তাঁর বক্তব্য, অতীতে কৃষক আন্দোলন বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনের সময়েও এই একাংশের ব্যক্তিত্ব ‘চুপ’ থেকেছেন। বর্তমানে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়েও ওই একাংশ ‘নীরব’ রয়েছেন বলে অভিযোগ অভিষেকের। তৃণমূল নেতার বক্তব্য, এই ব্যক্তিত্বেরা সাধারণ মানুষের প্রশংসা পেয়ে খ্যাতি এবং অর্থ উপার্জন করেছেন। অথচ যখন তাঁদেরকে দেশের প্রয়োজন, তখন ন্যূনতম নৈতিক পদক্ষেপ করতে তাঁরা লজ্জা পাচ্ছেন। এমন অবস্থায় জীবনে চলার পথে কাদের অনুকরণ করা উচিত, সে বিষয়ে পুনরায় ভেবে দেখার প্রস্তাব দিয়েছেন অভিষেক।