বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুরকাণ্ডে মৃত ছাত্রের পরিজনজদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মৃত ছাত্রের মামার বাড়ি গিয়ে তাঁর মা-বাবা এবং মামাদের সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু। সেখানে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘দ্রুত বিচার চাইলে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রার্থনা করুন।’’
এর আগে বুধবার মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। সেখানে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আশ্বাস দেন, এই ঘটনার বিচার হবেই। কারণ, বিষয়টি দেখছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নদিয়ার বগুলায় গিয়ে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শুক্রবার ওই ছাত্রের মায়ের সঙ্গে আলাদা করে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন শুভেন্দু। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের ১৭ জনের একটি দল ছিল। তাতে ছিলেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারও। সেখানে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। অন্য দিকে, শুভেন্দুদের এই সফরকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
শুভেন্দু ওই পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বলেন, ‘‘আমরা সহানুভূতি জানিয়েছি। উনি (মৃতের বাবা) ঘটনার ইতিমধ্যেই অনেক বার প্রেস স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। বাকি কিছু অকথিত তথ্য ছিল। সেগুলো আমাদের জানিয়েছেন। আমি ওঁদের বলেছি, আপনারা এই বিষয়ে যদি সুবিচার পেতে চান, তাহলে আপনাদের উচিত আদালতের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করা। কারণ, এখন হাওয়া গরম আছে। সরকার চাপে আছে। তাই সরকার ৮-৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু চার্জশিট হবে না। আবার ট্রায়াল কোর্টে গিয়ে দ্রুত বিচার হবে না। গত ১২ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে অনেক স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে একই ঘটনা ঘটতে দেখেছি আমরা।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে কয়েক জন গ্রেফতার হয়েছেন, এদের অধিকাংশ ওই ঘরে থাকতেন বলে জানিয়েছেন। অরিত্র বলে এক জন ধরা পড়েনি। তারও একটা ভূমিকা আছে।’’
অন্য দিকে, মৃতের পরিবারের তরফে বলা হয় বিরোধী দলনেতা তাঁদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান। শুভেন্দু জানান, ওই ছাত্রের মৃত্যুতে গোটা ব্যবস্থাকে একটি প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুরে সিসিটিভি নিয়ে এত আপত্তি কেন? যাদবপুরে রাজ্য সরকারের মদতে ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’কে মদত দিতে চায় ওরা। কারণ, ওরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘হেট ক্যাম্পেন’ করার জন্য কাজ করে।’’
বিরোধী দলনেতার এই সফর প্রসঙ্গে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু যেখানেই রাজনীতির গন্ধ পান, সেখানেই ছুটে চলে যান। এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা নিয়েও উনি রাজনীতি করতে পারেন, সেটা ভেবেই অবাক লাগছে।’’
উল্লেখ্য, যাদবপুরকাণ্ডে শুক্রবার আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। এ নিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ জন।