এইচএমপিভি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ কেন্দ্রের। — প্রতীকী চিত্র।
দেশের কোথাও অস্বাভাবিক ভাবে শ্বাসজনিত রোগের বৃদ্ধি হয়নি। সব রাজ্যকে নিয়ে বৈঠকের পর এ কথা জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সোমবার কর্নাটক, তামিলনাড়ু, গুজরাতে শিশুদের শরীরে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণের খবর মেলে। মুম্বই থেকে কলকাতায় আসা এক শিশুও সম্প্রতি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে সুস্থও হয়ে গিয়েছে। তবে দেশবাসীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। এই আবহে সোমবার সব রাজ্যকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব। ভার্চুয়ালি ওই বৈঠকে যোগ দেন রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যসচিব ও অন্য আধিকারিকেরা। দেশের কোন প্রান্তে শ্বাসজনিত রোগ কতটা দেখা যাচ্ছে, তা নিয়ে পর্যালোচনা করতেই এই বৈঠক করে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
বৈঠকের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশের কোথাও সাধারণ শ্বাসজনিত রোগ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়নি। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সেন্টিনেল জনজাতির ক্ষেত্রেও কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। সেন্টিনেল দ্বীপে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ। ওই জনজাতির স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখে কেন্দ্রের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। সোমবারের বৈঠকে আইসিএমআরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব জানান, এইচএমপিভি নিয়ে অযথা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। ২০০১ সাল থেকে এই ভাইরাস গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে রয়েছে।
এমন অবস্থায় তাই সব রাজ্যকে শ্বাসজনিত অসুস্থতার উপর আরও বেশি করে নজর রাখা এবং পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। সাধারণত শীতকালে শ্বাসজনিত অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থাকে বলেও বৈঠকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব। তিনি জানান, সাধারণত এই ভাইরাসের সংক্রমণে হালকা কিছু প্রভাব পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সংক্রমণের পর শরীর নিজে থেকেই সুস্থ হয়ে যায়। এইচএমপিভির সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে সচেতনতা বৃদ্ধিরও প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। বিশেষ করে সাবান এবং জল দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাত চোখে, নাকে বা মুখে না দেওয়া, হাঁচি-কাশির সময়ে নাক-মুখ ঢেকে নেওয়ার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, যাঁদের শরীরে কোনও উপসর্গ রয়েছে তাঁদের খুব কাছাকাছি না যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
সম্প্রতি চিনে এইচএমপি ভাইরাসের একটি প্রজাতির কারণে অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন। তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে ভারত-সহ বিশ্বের অন্য প্রান্তের সাধারণ মানুষের মনেও। সোমবার ভারতেও বেশ কয়েক জন শিশুর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণের খবর মিলেছে। একটি ভিডিয়ো বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নড্ডা জানান, যে কোনও বয়সের মানুষই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। শীতকালে এবং বসন্তের শুরুর দিকে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে বলেও জানান তিনি।