যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুরকাণ্ডে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার ওই তিন জনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয় বলেই জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১২।
গত বুধবার গভীর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচ থেকে নগ্ন ও অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। পর দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’তে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। মৃতের বাবার ‘খুন’-এর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে গ্রেফতার হন সৌরভ চৌধুরী নামে এক যুবক। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক। এর পরে ধাপে ধাপে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছে শেখ নাসিম আখতারকে। তিনি রয়ায়ন বিভাগের প্রাক্তনী। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা তিনি। হিমাংশু কর্মকার নামে আরও এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জে। এ ছাড়া সত্যব্রত রায় নামে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র। তাঁর বাড়ি হরিণঘাটায়।
উল্লেখ্য, এই সত্যব্রতই ঘটনার দিন অর্থাৎ, বুধবার রাতে ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে, হস্টেলে ‘পলিটিসাইজ়ড’ হচ্ছে। ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছিলেন, হস্টেল থেকে এক ছাত্রকে ঝাঁপ দিতে বলা হচ্ছে। সেই সত্যব্রতকেও টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে পুলিশের তদন্তে উঠে আসছে র্যাগিং নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শুক্রবার প্রথম বর্ষের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রস্টার তৈরি করে তাঁদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করাতেন হস্টেলের সিনিয়ররা। তাঁদের মধ্যে প্রাক্তনীরাও ছিলেন। প্রথম বর্ষের ওই আবাসিকদের দাবি, তাঁদের দিয়ে শৌচালয় এবং নিজেদের ঘর পরিষ্কার করাতেন হস্টেলের ‘দাদা’রা। এমনকি, সিনিয়রদের মধ্যাহ্নভোজের জন্য ভাত বেড়ে দেওয়া থেকে ঘুমের সময় মশারি টাঙিয়ে দেওয়ার মতো কাজও করতে হত।