আসানসোলে অবরোধে পুলিশের সঙ্গে বচসায় বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। ছবি: পাপন চৌধুরী।
সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদ করায় দলের যুব সংগঠনের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ মিথ্যা মামলা করেছে, এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। আচমকা অবরোধে জিটি রোডে তীব্র যানজট হয়। পড়ুয়া বোঝাই পুলকার-সহ নানা যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশের তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে অবরোধ তোলা হয়। পুলিশের দাবি, অনুমতি না নিয়ে মিছিল করায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অগ্নিমিত্রা অভিযোগ করেন, রবিবার বারাবনির পানুড়িয়ায় দলের যুব মোর্চার উদ্যোগে সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করা হয়। সেই মিছিলে যোগ দেওয়া তিন
যুব নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন অযোগ্য ধারায় মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘এ ভাবে বিজেপির কর্মীদের ভয় দেখিয়ে প্রতিবাদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। এরই প্রতিবাদে অবরোধ করেছি।’’ মঙ্গলবার বিকেল সওয়া ৩টে থেকে ভগৎ সিংহ মোড় চৌমাথায় অবরোধ শুরু হয়। স্কুল ফেরত পড়ুয়া বোঝাই পুলকার-সহ বিভিন্ন যানবাহন রাস্তার পাশে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের বড় বাহিনী। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে পুলিশের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হলে অগ্নিমিত্রা অবরোধ তুলে নেন।
পুলিশ কমিশনারেট সূত্রের দাবি, সে দিন বারাবনিতে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার মিছিল পুলিশের অনুমতি নিয়ে করা হয়নি। অনুমতি ছাড়া মিছিলে বাধা দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে তিন জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করা হয়েছে।
ওই মিছিল পুলিশের অনুমতি ছাড়াই করা হয়েছিল, তা স্বীকার করেন বিজেপির বারাবনি ২ মণ্ডল সভাপতি উজ্জ্বল ধীবর। তিনি বলেন, ‘‘মিছিল করতে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়। তবে তা নেওয়া হয়নি। দলকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তার পরেও মিছিল করা হয়েছে।’’ মিছিলকে অবৈধ ঘোষণা করে উজ্জ্বলের একটি ভিডিয়ো-বার্তা (আনন্দবাজার সেটির সত্যতা যাচাই করেনি) সমাজ মাধ্যমেও ছড়িয়েছিল। উজ্জ্বল বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি আমিই পোস্ট করেছিলাম। সেটি পরে মুছে দিয়েছি। এ বিষয়ে দলকে বিশদে জানিয়েছি।’’
দলের মণ্ডল সভাপতির এমন মন্তব্যে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বই সামনে এসেছে বলে দাবি তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের কে নেতা, তা নিয়েই লড়াই চলছে। অবৈধ কাজ করে এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি করছে, আবার সেই অনিয়ম ঢাকতে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলে ব্যস্ত সময়ে রাস্তা অবরোধ করছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পুরো বিষয়টির উপরে নজর রেখেছি। তবে পুলিশ বিজেপি কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে। এর প্রতিবাদ চলবে।’’