Primary School

স্কুলে কমছে পড়ুয়া, ভর্তির আর্জি নিয়ে পথে শিক্ষকেরা

গত কয়েক বছর ধরে কাটোয়া শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে পনেরোর নীচে নেমে এসেছে বলে শিক্ষাদফতর সূত্রের খবর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৬
উদ্যোগী হয়েছে কাটোয়ার কোশিগ্রাম গোরক্ষতলা হরিজন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়।

উদ্যোগী হয়েছে কাটোয়ার কোশিগ্রাম গোরক্ষতলা হরিজন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। —নিজস্ব চিত্র।

দিন যত যাচ্ছে, সরকার পোষিত প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা ততই কমছে। আবার অভিভাবকদের মধ্যেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর প্রবণতা। গত কয়েক বছর ধরে কাটোয়া শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে পনেরোর নীচে নেমে এসেছে বলে শিক্ষাদফতর সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে চিন্তিত স্কুল পরিদর্শক থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষকেরা।

Advertisement

এই প্রেক্ষিতে বছর শেষে স্কুলে ছাত্র টানতে উদ্যোগী হয়েছে কাটোয়ার কোশিগ্রাম গোরক্ষতলা হরিজন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। নতুন বছরে স্কুলে ভর্তির কর্মসূচি পালন করা হয় স্কুলের তরফে। বৃহস্পতিবার ওই স্কুলের শিক্ষকেরা ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামে পরিবেশ-সংক্রান্ত সচেতনতা প্রচার চালান। পাশাপাশি, নতুন বছরে সরকারি স্কুলে ছাত্রভর্তি করানোর আর্জি জানানো হয় অভিভাবকদের কাছে। ছাত্রদের হাতে ছিল নানা পোস্টার। কোনওটিতে লেখা— ‘জলের কল খুলে রাখব না, জল অপচয় করব না’, আবার কোনও পোস্টারে লেখা—‘যেখানে সেখানে জমা জলে, ডেঙ্গুর মশা বেড়েই চলে’। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর আবেদন। ছড়ার মাধ্যমে পোস্টারে লেখা রয়েছে সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর নানা সুবিধার কথাও। পড়ুয়াদের নিয়ে সচেতনতা পদযাত্রার পরে এ দিন মিড-ডে মিলে পড়ু্য়াদের আলুর দম, চিকেন কষা, চাটনি ও মিষ্টি খাওয়ানো হয়। স্কুলে ছাত্র টানতে শিক্ষকদের এই উদ্যোগে খুশি গ্রামের বাসিন্দারা।

কোশিগ্রামে হরিজন পাড়ায় ওই স্কুলটি কাটোয়া পশ্চিম চক্রের অধীনে। স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৫১ পড়ুয়া রয়েছে সেখানে। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা তিন। তথ্য বলছে, কয়েক বছর ধরে সরকারি স্কুলে নতুন বছরে ছাত্র ভর্তির সংখ্যা কমছে। গ্রামাঞ্চলে এখনও স্কুলে ভর্তির সংখ্যা তুলনায় কিছুটা ভাল থাকলেও শহরের স্কুলগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। তাই, শহরের হাওয়া গ্রামের স্কুলে যাতে না পড়ে, সে কারণেই এই কর্মসূচি বলে ওই স্কুলের তরফে জানানো হয়।

কোশিগ্রামের বাসিন্দা শ্রাবণী দাস, তাঁরা মাঝি বলেন, “সরকারি স্কুলে নানা সুযোগ সুবিধা থাকলেও একটু অবস্থা সম্পন্নদের কাটোয়া শহরে বেসরকারি স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করাতে দেখি। আমাদের মতো গরিব মানুষের সরকারি স্কুল ছাড়া কোনও গতি নেই। তাই স্কুলের পড়াশোনার মান ভাল হওয়া উচিত। নতুন বছরে যাতে স্কুলে ছাত্রের সংখ্যা বেশি হয় তার জন্য পড়ুয়াদের নিয়ে নানা সামাজিক বার্তা নিয়ে পদযাত্রা হয়েছে। দেখে বেশ ভাল লাগল।”

কোশিগ্রাম গোরক্ষতলা হরিজন অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত সাহা বলেন, “নতুন বছরে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ করেছি। তারই একটা কর্মসূচি হিসেবে পড়ুয়াদের নিয়ে গ্রামে পদযাত্রা হয়েছে। মিড-ডে মিলেও ছিল স্পেশাল মেনু”। কাটোয়া পশ্চিমচক্রের স্কুল পরিদর্শক ফ্যান্সি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।”

Advertisement
আরও পড়ুন