আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে বিক্ষোভ জুনিয়র চিকিৎসকদের। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র মহিলা চিকিৎসককে খুনের ঘটনায় রাজ্যের একের পর এক সরকারি কলেজে প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর মধ্যে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতির ডাক দিলেন। শনিবার সকাল থেকে আর রোগী দেখছেন না তাঁরা। অন্য দিকে, হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বাড়ছে। জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবি করেছেন তাঁরা।
শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হলে স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের এক চিকিৎসকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন সহকর্মীরা। দেহের পাশেই পড়েছিল অন্তর্বাস। ওই খবর ছড়িয়ে পরার পরেই শুরু হয় উত্তেজনা। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মা। মৃতা তরুণীর বাবা-মা দাবি করেন, খুন করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। এর মধ্যে উঠে আসছে যৌন হেনস্থা করে খুনের তত্ত্বও। ইতিমধ্যে জরুরি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত ক্ষেত্রে কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। শনিবার এক জনকে গ্রেফতার করা হলেও বিক্ষোভ থেমে নেই। মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে আরজি কর থেকে শ্যামবাজার মোড়ের দিকে এগিয়ে যান জুনিয়র চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক-খুনের ঘটনার প্রভাব পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে। জায়গায় জায়গায় শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। শুক্রবার রাতেই মোমবাতি মিছিল করেছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া চিকিৎসকেরা। শনিবার সেই আঁচ আরও তীব্র হল। সকালেই জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন তাঁরা।
বর্ধমান তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার রোগীদের কাছে বড় ভরসার জায়গা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। তাই জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে রোগী পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কত ক্ষণ চলবে, তা নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পিজিটি, চিকিৎসক পড়ুয়ারা-সহ জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতির পাশাপাশি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ বসেছেন।
আরজি করের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আরজি করের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের কাজের পরিবেশ যেন ভাল থাকে। পরিষেবা দেওয়ার কাজ যেন ভাল ভাবে করতে পারি।’’ একটি বিবৃতিতে মোসুমি জানিয়েছেন, চিকিৎসক, নার্স থেকে যে কোনও কর্মী হাসপাতালে কোনও রকম অবাঞ্ছিত ঘটনার মুখোমুখি হলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।