অভিনেতার জন্মদিনের চার দিন বাদেই তাঁর কেরিয়ারের প্রথম ছবির মুক্তি। নায়ক-নায়িকা দু’জনেই নতুন। তবে বক্স অফিসে সেই ছবি দুর্দান্ত সাড়া ফেলে। এমনই সফল হয় যে, ২৫ বছর পর চলতি মাসে পুনর্মুক্তি পেতে চলেছে হৃতিক রোশনের ছবি ‘কহো না… প্যার হ্যায়’।
চলতি মাসে ৫১ বছরে পা দিলেন বলি অভিনেতা হৃতিক রোশন। পিতা এবং বলিপাড়ার অন্যতম ছবিনির্মাতা রাকেশ রোশনের হাত ধরে বড় পর্দায় পা রাখেন হৃতিক। ২০০০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় হৃতিকের প্রথম ছবি ‘কহো না… প্যার হ্যায়’।
‘কহো না… প্যার হ্যায়’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন রাকেশ। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন রাকেশের ভাই রাজেশ রোশন। ছবির চিত্রনাট্য বহু দিন আগে লিখলেও নায়ক-নায়িকা কে হবেন তা নির্ধারণ করতে পারছিলেন না রাকেশ।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাকেশ তাঁর পুত্রের কেরিয়ারের প্রথম ছবি নিয়ে আলোচনা করেন। ছবির অভিনেত্রী কী ভাবে বাছাই করা হয়েছিল তা নিয়েও কথা বলেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে রাকেশ জানান, তিনি যখন অন্য ছবির কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন তখন তাঁর ছায়াসঙ্গী হতেন হৃতিক। ক্যামেরার পিছনে থেকেই দক্ষ হয়ে উঠছিলেন তিনি।
রাকেশ জানান, ‘কহো না… প্যার হ্যায়’ ছবির চিত্রনাট্য লেখার সময় হৃতিকের সঙ্গে আলোচনা করতেন তিনি। এমনকি চিত্রনাট্যের কিছু কিছু জায়গায় হৃতিক কাহিনির মোড় বদলের পরামর্শও দিয়েছিলেন।
রাকেশ বলেন, ‘‘হৃতিক গোড়া থেকেই ‘কহো না… প্যার হ্যায়’ ছবির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ছিল। ওর উপর আমার ভরসা ছিল। আমি জানতাম পর্দায় ও নিপুণ ভাবে মুখ্যচরিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারবে।’’
‘কহো না… প্যার হ্যায়’ ছবিতে হৃতিকের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল বলি অভিনেত্রী অমিশা পটেলকে। হৃতিকের মতো অমিশাও ছিলেন নবাগতা।
কানাঘুষো শোনা যায়, সেই চরিত্রের জন্য প্রথমে পছন্দ করা হয়েছিল করিনা কপূর খানকে। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন।
করিনা প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে চিন্তায় পড়ে যান ছবির নির্মাতা। এ দিকে ছবির শুটিংয়ের দিনও এগিয়ে আসতে থাকে।
রাকেশ জানান, ‘কহো না… প্যার হ্যায়’ ছবির শুটিং শুরু হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে অমিশাকে পছন্দ করেন নির্মাতারা। বলিপাড়ার সঙ্গে কোনও যোগসূত্র ছিল না অমিশার।
পুত্রের কেরিয়ারের প্রথম ছবি। কিন্তু তার জন্য কেন নতুন মুখ বেছে নিলেন সেই প্রসঙ্গে রাকেশ বলেন, ‘‘নায়ক-নায়িকা দু’জনেই নতুন ছিল। কিন্তু আমি ঘাবড়াইনি। আসলে আমি সব সময় চেনা ছন্দ ভেঙে কাজ করতে চেয়েছিলাম।’’
রাকেশ বলেন, ‘‘আমি চিত্রনাট্য নিয়ে এত নাড়াচাড়া করেছিলাম যে, এই ছবির জন্য নতুন মুখের প্রয়োজন তা বুঝতে পেরেছিলাম। হৃতিক এবং অমিশাকে দেখে মনেই হয়নি যে ওরা প্রথম বার বড় পর্দায় অভিনয় করছে।’’
১৯৮৭ সালে ‘খুদগর্জ়’ ছবির মাধ্যকমে পরিচালনা শুরু করেছিলেন রাকেশ। তার পর ‘খুন ভরি মং’, ‘কিষণ কানহাইয়া’, ‘কর্ণ অর্জুন’-এর মতো হিন্দি ছবি পরিচালনা করেছিলেন তিনি।
নিজের কেরিয়ার প্রসঙ্গে রাকেশ বলেন, ‘‘আমি বার বার নিজের ধারা নিজেই ভেঙেছি। কাজ করতে করতে হঠাৎ এক দিন ভাবলাম রোম্যান্টিক ছবি বানাব। তার পর ‘কহো না… প্যার হ্যায়’ ছবির চিত্রনাট্য নির্মাণ করে ফেললাম।’’
পুত্রকে নিয়ে পরিচালক রাকেশের মন্তব্য, ‘‘অনেকে ভেবেছিলেন ‘কহো না… প্যার হ্যায়’-এর পর হৃতিককে আমি এমন অভিনেতা হিসাবে দেখাব যে নৃত্যেও সমান পারদর্শী। কিন্তু আমি ওকে ‘ডান্সিং স্টার’ হিসাবে দেখাইনি। ‘কোই…মিল গয়া’ ছবিতে হৃতিককে একদম অন্য রকম চরিত্রে দেখিয়েছিলাম।’’
সব ছবি: সংগৃহীত।