—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পুজোর পরে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া কার্যত থমকে রয়েছে জেলায়। প্রশাসনের তথ্য বলছে, পুজোর পরে ১ শতাংশ বাড়িতেও জলের সংযোগ দিতে পারেনি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর (পিএইচই)। যদিও সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যের তৃতীয় (৬৯.৪%) স্থানে রয়েছে জেলা। তার আগে রয়েছে নদিয়া (৮৭.৩৬%) ও পশ্চিম বর্ধমান (৭০.২২%)। পিএইচই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বৈঠক করেছেন। তার পরেই জলের সংযোগ দেওয়ার কাজে গতি আনতে পিএইচই-র বর্ধমান ডিভিশন বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মঙ্গলকোট, কেতুগ্রামের মতো কয়েকটি ব্লকে পাম্প চালু করা যাচ্ছে না বলে পিএইচই’র দাবি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব বাড়িতে জলের পাইপ গেলেও মাসের পর মাস জল মিলছিল না, সে সব বাড়িতে জল পৌঁছে দেওয়ায় উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। পুলিশ ও পিএইচই যৌথ অভিযান করে জানিয়েছিল, বেআইনি ভাবে জলের সংযোগ নেওয়া হচ্ছে। পাম্পের মাধ্যমে জল তুলে শৌচাগারেও ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ‘প্রভাব খাটিয়ে’ চাষের জমিতে দলের পাইপ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় ‘দুর্নীতি’ করেছেন ঠিকাদারদের একাংশ। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বেআইনি সংযোগ কাটতে ও যত্রতত্র জলের পাইপ টানার প্রবণতায় লাগাম পরাতে ফের অভিযান চালানো হয়।
জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, “প্রায় ২৮০০টি বেআইনি সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছে। এর ফলে, পাইপ লাইনের শেষ পর্যন্ত জল পৌঁছচ্ছে। জলের চাপও ভাল থাকছে বলে জানা যাচ্ছে। নিয়মিত নজরদারি করতে বলা হয়েছে।” রিপোর্ট অনুযায়ী, জামালপুর (৪৬৭), ভাতার (৩৮২) ব্লকে বেআইনি জলের সংযোগ বেশি পেয়েছেন পরিদর্শনকারীরা। রায়না ১, কালনা ১-২, পূর্বস্থলী ১ ব্লকেও দু’শোর বেশি বেআইনি সংযোগ কেটেছে পিএইচই। কেতুগ্রাম ১ ব্লকে বেআইনি সংযোগ মেলেনি। মঙ্গলকোটের ১১টি ও কেতুগ্রাম ২ ব্লকে মাত্র ৩২টি বেআইনি সংযোগ কাটতে পেরেছে পিএইচই।
কাজে গতি আনার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পিএইচই-র বর্ধমান ডিভিশনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার গোপেন পাল। সূত্রের খবর, পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার নাম করে বেআইনি কাজকর্ম করার জন্য ন’জন ঠিকাদারকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল। তিন জনের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া, রাস্তা কাটার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন আটকে থাকা, খণ্ডঘোষে রেল লাইনের জায়গা ব্যবহারে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় প্রকল্পের গতি শ্লথ হয়েছে।
পিএইচই’র দাবি, জেলায় ৫৫টি পাম্প হাউসের জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ আটকে ছিল। কয়েকটি জায়গায় দেওয়া হয়েছে। কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটেই প্রায় ৪০টি জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ এখনও না মেলায় পাম্প হাউসের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
গোপেন বলেন, “বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে। ওই সব পাম্প হাউস চালু হয়ে গেলে এক ধাক্কায় ৫০ হাজারের বেশি বাড়িতে জলপৌঁছে যাবে।”