নাম না করে দিলীপকে খোঁচা বাবুলের গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিজেপি-র নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানালেন সদ্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সেই শুভেচ্ছার মাধ্যমে অবশ্য পরোক্ষে বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই খোঁচা দিয়েছেন বাবুল। প্রসঙ্গত, বুধবার বাবুলের আসানসোলের সংসদপদে ইস্তফা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লোকসভার স্পিকার দিল্লিতে না থাকায় বিষয়টি একদিন পিছিয়ে গিয়েছে। আপাতত ঠিক হয়েছে বাবুল সাংসদপদে ইস্তফা দেবেন বৃহস্পতিবার। তার পর তিনি দিল্লি বসবাস আপাতত গুটিয়ে কলকাতায় ফিরে আসবেন।
বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনে দিলীপকে নিয়ে একটি উত্তর সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবুল নিজের ফেসবুকে সেটি ‘শেয়ার’ করেন। সঙ্গে স্টেটাস দেন, ‘অবশেষে একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি হল| সুকান্তর জন্য আমার অনেক শুভেচ্ছা রইল..এটাই কাম্য যে রাজনৈতিক বৈরিতা যেন শত্রুতা না হয়।’ বাবুলের পোস্টে বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপের নাম কোথাও বলা নেই। কিন্তু যে লেখাটি তিনি ‘শেয়ার’ করেছেন সেটি দিলীপকে নিয়েই লেখা। সেই লেখার সঙ্গে সুকান্তকে ‘উচ্চশিক্ষিত’ বিজেপি সভাপতি বলে ঘুরিয়ে দিলীপকেই খোঁচা দিয়েছেন বাবুল।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলে যোগ দিয়ে বাবুল বলেছিলেন, কী ভাবে বাংলা বলতে হয়, তা শেখার জন্য দিলীপকে তিনি ‘বর্ণপরিচয়’ উপহার দিতে চান। দিলীপের সঙ্গে বাবুলের বিবাদ রাজ্যের রাজনৈতিক মহল তো বটেই, বিজেপি-র অন্দরেও অজানা ছিল না। বাবুল বিজেপি-তে থাকার সময়েও বরাবর দুই মেরুতে অবস্থান করতেন মেদিনীপুর ও আসানসোলের দুই সাংসদ। নানা বিষয়ে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন দু’জনে। এমনকি, দিলীপের ‘লাগামহীন’ বক্তব্য প্রসঙ্গে টেলিভিশন বিতর্কেও দিলীপ-বাবুল মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। যে দিন বাবুল রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, সে দিনও বাবুল সাংসদ পদ ছাড়বেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘মাসির গোঁফ হলে মাসি বলব না মেসো বলব, তা ঠিক করব। আগে তো মাসির গোঁফ হোক!’’ অর্থাৎ, বাবুল আগে তাঁর কথামতো রাজনীতি ছাড়ুন। ঘটনাচক্রে, বাবুল রাজনীতি ছাড়ার কথা বলেও রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
তবে বিজেপি শিবিরের একাংশের বক্তব্য, বাবুল প্রসঙ্গে দিলীপের বিভিন্ন মন্তব্য দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভাল ভাবে নেননি। মন্ত্রিত্ব হারানোর দিনে বাবুল যা টুইট করেছিলেন তা নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। আবার ঘটনাপ্রবাহ বলছে, বাবুল দল ছাড়ার কয়েকদিনের মধ্যে দিলীপকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিষয়টি কাকতালীয় কি না, তা নিয়েও বিজেপি-র অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, দিলীপের অপসারণের পরেও বাবুল টুইট করে বলেনছিলেন, ‘বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই আমি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। তবে মজা করে এটুকু বলতে পারি, আমার দেওয়া বর্ণপরিচয়টা দিলীপ ঘোষের কাজে লাগবে। কারণ উনি সুকান্ত মজুমদারকে অভিনন্দন জানিয়ে যে টুইট করেছেন সেখানেও ভুল বাংলা লিখেছেন।’