(বাঁ দিক থেকে) জেপি নাড্ডা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অধীর রঞ্জন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
স্যালাইন-কাণ্ডে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎ প্রকাশ নড্ডা ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দল পাঠানোর আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য মেদিনীপুরের ঘটনায় দোষী চিকিৎসকদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছে।
মেদিনীপুরে নিষিদ্ধ স্যালাইন ব্যবহারের জেরে প্রসূতির মৃত্যু এবং আরও কয়েক জনের গুরুতর অসুস্থতার কথা জানিয়ে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নড্ডার কাছে উপযুক্ত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। রাজ্যে এখন ব্যবহৃত ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ যে ২০২৩ সালেই কর্নাটক সরকার কালো তালিকাভুক্ত করেছিল, সেই তথ্য স্মরণ করিয়ে অধীর অভিযোগ করেছেন, তদন্তের নামে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা এবং এর পুনরাবৃত্তি আটকাতে কড়া পদক্ষেপের দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতাকেও তিনি লিখেছেন, সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রীয় সহায়তা নিক রাজ্য সরকার। এমন ঘটনার গোড়া পর্যন্ত পৌঁছনো জরুরি।
রাজ্য সরকার স্যালাইন-কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তার প্রেক্ষিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী যিনি, পুলিশ-সিআইডি’র মন্ত্রীও তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য-অপরাধের তদন্ত করবে তাঁরই পুলিশ! অপরাধী-পুলিশ সব মিলেমিশে একাকার!’’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত করছে। সিআইডি তদন্তে সম্ভাব্য সব দিকই খতিয়ে দেখে নিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে যে ভাবে বিষয়টি নিয়ে কুৎসা ও রাজনৈতিক আক্রমণ করা হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হচ্ছে, ওখানে একটা ভয়ঙ্কর অপকীর্তি ঘটেছে। সিনিয়র তিন চিকিৎসক, অ্যানাস্থেসিয়া যাঁর করার কথা, তাঁরা কেউ ছিলেন না। সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে কোন পিজিটি কাজ করেছেন, সে সব নামও পাওয়া গিয়েছে। জুনিয়রদের দিয়ে ওটি করাবেন, আর রোগী মরবে! দোষী চিকিৎসকদের গ্রেফতার করা হোক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘একই চিকিৎসক, একই সময়ে দু’টি ওটি করছেন, এমন তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে। এঁরাই রাত জেগে ‘দাবি এক দফা এক’ করেছেন। স্যালাইনে ত্রুটি থাকলে ব্যবস্থা হবে। কিন্তু বিরোধীরা কুৎসা করছে, তখন আমাদের কাছে যে তথ্য আসছে, তা-ও আমরা জানাতে থাকব।’’