Abhishek Banerjee

কোচবিহারের ‘হারানো জমি’ পুনরুদ্ধারে অভিষেক, ‘বিজেপির’ মাথাভাঙায় লক্ষ জমায়েতের লক্ষ্য

রাত পোহালেই মাথাভাঙায় জনসভা করবেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক। এই সভার আগের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
মাথাভাঙা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৪৯
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

গত বিধানসভা ভোটে রাজ্য জুড়ে সবুজ ঝড় দেখা গেলেও কোচবিহারে পর্যুদস্ত হতে হয়েছিল শাসকদলকে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এ বার ‘হারানো জমি’ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জেলায় আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাত পোহালেই মাথাভাঙায় জনসভা করবেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সভার আগের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। শাসক দলের দাবি, অভিষেকের এই সভায় ‘রেকর্ড’ ভিড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্তত ১ লক্ষ মানুষের জমায়েত হতে পারে বলে অনুমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের।

শনিবার দুপুর ২টোয় মাথাভাঙা কলেজ মাঠে জনসভা করবেন অভিষেক। সভার প্রস্তুতির শেষবেলায় এখন মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে জোরকদমে। গোটা এলাকা তৃণমূল আর অভিষেকের ছবি দেওয়া ব্যানার-ফ্লেক্সে মুড়ে ফেলা হয়েছে। প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বার বার তল্লাশিও করছেন সভার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বিশেষ পুলিশকর্মীরা। স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে এলাকা। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা হয়েছে মাঠ চত্বর। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলের কর্মী-সমর্থকদের সভাস্থলে নিয়ে আসার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছেন নেতৃত্বই। বাস, পিক আপ ভ্যান মিলিয়ে অন্তত কয়েক হাজার গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। কোচবিহারের জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভায় এক লক্ষ মানুষের জমায়েত হবে।’’

Advertisement

অভিষেক যে মাথাভাঙায় সভা করতে চলেছেন, সেই জায়গাটি এখন গেরুয়া প্রভাবিত এলাকা বলেই পরিচিত। মাথাভাঙা মহকুমায় দুই বিধানসভা— মাথাভাঙা ও শীতলখুচি তো বটেই, লাগোয়া কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভাও বিজেপির দখলে। এই তিন এলাকায় রাজবংশী ভোটার যথেষ্ট। যাঁদের অনেকের মধ্যে ‘রাজ্য’ নিয়ে আবেগ রয়েছে। আবার শীতলখুচি, সিতাই ও মেখলিগঞ্জ বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া। সেখানকার সংখ্যালঘু মানুষ আবার রাজ্য ভাগের বিরুদ্ধে। শাসকদলের অন্দরের খবর, তৃণমূল স্তরে খোঁজখবর নিয়ে দেখা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষও রাজ্য ভাগের ‘তত্ত্বে’ বিশ্বাস করছেন না। তাই উত্তর এবং দক্ষিণ বঙ্গের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের আবেগের কথা মাথায় রেখে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, রাজ্য ভাগের প্রশ্নে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে চাইছে তৃণমূল। এখন অভিষেক বিজেপির উদ্দেশে কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে সকলে। শুধু তা-ই নয়, ‘রাজ্য ভাগ’ সংক্রান্ত বিষয়ে দলীয় নেতৃত্বের কী ভূমিকা পালন করা উচিত, তার কোনও দিকনির্দেশ তিনি দেন কি না, সে দিকেও নজর রয়েছে।

শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়েও সম্প্রতি বেশ কয়েক বার সরগরম হয়েছে জেলার রাজনীতি। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের পিছনে অন্তর্দ্বন্দ্বও বড় অংশে দায়ী। সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় তৃণমূলের অঞ্চল কমিটি এবং ব্লক কমিটির ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বার বার প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। অঞ্চল ও ব্লক কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রায়ই দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে দেখা গিয়েছে দলের নিচুতলার কর্মীদের। জেলার এক নেতার কথায়, ‘‘জেলা এবং ব্লক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে বহু জায়গায় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে।’’ গত সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের মতো কোচবিহারেও দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে অভিষেক কিছু বার্তা দেন কি না, সে দিকে নজর রয়েছে দলের কর্মীদের।

আরও পড়ুন
Advertisement