Kolkata Police

পুলিশের গাড়ি থেকে ‘কেপি’ লেখা স্টিকার খুলতে নির্দেশ

বৃহস্পতিবার থেকেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের গাড়ি দাঁড় করিয়ে স্টিকার খোলানো হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

Advertisement
চন্দন বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৬
নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরেও পুলিশের গাড়িতে লাগানো রয়েছে ‘কেপি’ স্টিকার। বৃহস্পতিবার, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে।

নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরেও পুলিশের গাড়িতে লাগানো রয়েছে ‘কেপি’ স্টিকার। বৃহস্পতিবার, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

শব্দের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠছিল বার বার। পুলিশি অভিযানে বিষয়টি নজরেও আসে একাধিক বার। তাই এ বার পুলিশকর্মীদের গাড়ি থেকে ‘কেপি’ লেখা স্টিকার খুলতে কড়া নির্দেশ দিল লালবাজার। ‘কলকাতা পুলিশ’ লেখা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশিকা না থাকলেও গাড়ি বা বাইক থেকে ‘কেপি’ লেখা সরাতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের গাড়ি দাঁড় করিয়ে স্টিকার খোলানো হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

Advertisement

কলকাতা পুলিশকর্মীদের একাংশ অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের ব্যক্তিগত গাড়িতে ‘কেপি’ লেখা স্টিকার ব্যবহার করেন। নিজেদের কলকাতা পুলিশকর্মী বোঝাতে গাড়ি বা বাইকের পিছনে বা সামনে স্থানাভাবে সংক্ষেপে ‘কেপি’ স্টিকার লাগান অনেকে। মূলত, লালবাজারের নিচুতলার পুলিশকর্মীদের বাইক বা গাড়িতেই ওই স্টিকার দেখা যায়। নজরদারির জন্য ট্র্যাফিক সার্জেন্টের ব্যবহার করা কলকাতা পুলিশের নিজস্ব গাড়িতেও ‘কেপি’ স্টিকার লাগানো থাকে।

সব ধরনের গাড়ি থেকেই ওই স্টিকার খুলতে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। দিন পাঁচেক আগে লালবাজারের তরফে প্রতিটি গার্ড, ডিভিশন এবং থানায় এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল। যে সব কর্মীরা ‘কেপি’ লেখা স্টিকার ব্যবহার করেন, তাঁদের সতর্ক করে তা খুলতেও বলা হয় নির্দেশে। কিন্তু তার পরেও অধিকাংশ গাড়িতেই ‘কেপি’ স্টিকার লাগিয়ে বহাল তবিয়তে যাতায়াত চলছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ফের কড়া নির্দেশ গিয়েছে বলে খবর। প্রয়োজনে জরিমানার পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে লালবাজারের তরফে।

কিন্তু কেন হঠাৎ ‘কেপি’ স্টিকার খুলতে তৎপরতা, তা নিয়ে ধন্দে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশ। সূত্রের খবর, গত কয়েক সপ্তাহে পুলিশি নজরদারিতে একাধিক ভুয়ো ‘কেপি’ স্টিকার লাগানো গাড়ি নজরে আসে। গাড়িতে ‘কেপি’ স্টিকার লাগানো থাকলেও সেই গাড়ির চালক বা তাঁদের পরিবারের কেউ
কলকাতা পুলিশের কর্মী নন। এই স্টিকার লাগানোর কারণ জিজ্ঞাসা করায় কেউ নিজেদের ইংরেজির ‘কে’ এবং ‘পি’ শব্দ মিলিয়ে কোনও দোকানের নাম উল্লেখ করে তার কর্মী বোঝাতে ‘কেপি’ লেখার যুক্তি দেখিয়েছেন।

কেউ আবার নিজেকে শহরের কোনও এক এলাকার বাসিন্দা বোঝাতে বাইকে ‘কেপি’ শব্দের স্টিকার লাগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে গেলে কেন ওই স্টিকার লাগাতে পারবেন না, সেই প্রশ্ন তুলে তিনি তর্কাতর্কি শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ।

নিচুতলার কর্মীদের একাংশ যদিও মনে করছেন, শব্দ দু’টি নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি বা বাইকে লাগিয়ে অপব্যবহারের পাশাপাশি, বাড়তি সুযোগ নেওয়ার প্রবণতাও বাড়ছিল। তাতে লাগাম টানতেই এই পদক্ষেপ।

পাশাপাশি, লালবাজারের আর একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘কেপি’ লেখা এসএমএস পাঠিয়ে বহু ক্ষেত্রে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ উঠছিল। ভুয়ো মেসেজও পাঠানো হচ্ছিল। তাই এই উদ্যোগ বলে দাবি।

লালবাজারের পুলিশকর্তারা যদিও হঠাৎ স্টিকার খোলার কারণ সম্পর্কে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলতে চাননি। তবে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘সব ধরনের গাড়ি থেকে দ্রুত এই স্টিকার সরানো হবে। প্রয়োজনে জরিমানার পাশাপাশি, আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন