বিমান বসু, আব্বাস সিদ্দিকি, অধীর রঞ্জন চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস— দু’পক্ষকেই তাঁর দলের সঙ্গে জোট নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্য আগামী রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারির সময়সীমা বেঁধে দিলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। বাম-কংগ্রেস দু’পক্ষই তাঁর সঙ্গে জোট করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তাতে সম্মতি দেখিয়েছিলেন আব্বাসও। কিন্তু বাম-কংগ্রেস দু’পক্ষই ইতিমধ্যে নিজেদের মধ্যে ১৯৩টি আসনে রফা করে নিয়েছে। ভাগাভাগিতে বামফ্রন্ট ১০১ এবং কংগ্রেস ৯২টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। বাকি এখন আর১০১টি আসনে সমঝোতা।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি বাকি ওই ১০১টির মধ্যেই আসন দেওয়া হবে ফুরফুরা শরিফের ‘ভাইজান’-কে? কিন্তু যে সমস্ত জেলায় আব্বাস তাঁর দল ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’-এর প্রার্থী দেওয়ার ভাবনায় ছিলেন, সেই জেলাগুলিতেই জোটের আসনরফা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে ১৪টি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিশ্চিত করেছে কংগ্রেস। ৪টি আসনে প্রার্থী দেবে বামফ্রন্ট। বাকি চারটি আসন নিয়ে সমস্যা থাকলেও শীঘ্রই তা মিটে যাবে বলে মনে করছেন জোটের নেতারা। আবার মালদহ জেলায় কংগ্রেস ৮টি ও বামফ্রন্ট ৩টি আসনে প্রার্থী দেবে। ইংরেজবাজার আসনটিতে কে প্রার্থী দেবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। এমতাবস্থায় ‘ভাইজান’-কে জোটে আদৌ সামিল করা যাবে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে আব্বাস যেভাবে একের একের পর এক সভায় জনসমর্থন বাড়িয়েছেন, তা ভাবনায় রেখেছে বাম-কংগ্রেসের নেতাদের।
এমন পরিস্থিতিতে বাম-কংগ্রেসের জোট আলোচনার দিকেও নজর রেখে চলেছেন আব্বাস। এই দুই রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে তাঁর জোট আলোচনা যে অনেকদূর এগিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়ে তিনি আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘বাম এবং কংগ্রেস দু’পক্ষের নেতাদের সঙ্গেই আমার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে যে কোনওদিন ভোট ঘোষণা হয়ে যাবে। আমাদের হাতেও বিশেষ সময় নেই। তাই দু’পক্ষকেই আমি ৭ তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছি। ওই দিন পর্যন্ত আসন রফা নিয়ে তাঁরা কোনও সিদ্ধান্ত না নিলে আমরা নিজেদের মতো করে চলব।’’
অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস জোটের বাকি আসনরফা চূড়ান্ত করতে ৭ ফেব্রুয়ারিই বৈঠকে বসছে দু’দল। তাই আব্বাসকে আদৌ জোটে রাখা যাবে কিনা, তা স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই দিনই। বাম-কংগ্রেস দু’পক্ষ থেকেই আব্বাসের সঙ্গে আসনরফার বিষয়ে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরোর নেতা মহম্মদ সেলিমকে। ইতিমধ্যে তাঁর সঙ্গেও আব্বাসের বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। শুধুমাত্র আলোচনা চালিয়ে যেতে নারাজ আব্বাস। তাই আগামী রবিবারই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি, এমনটাই মত ফুরফুরা শরিফে তাঁর ঘনিষ্ঠদের।