মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব। —নিজস্ব চিত্র।
এক নাবালিকা অপহৃত হওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যেই তাকে প্রায় ফিল্মি কায়দায় উদ্ধার করল পুলিশ। একটি ‘থ্রেট মেসেজ’-এর সূত্র ধরেই অপহরণকারীদের খোঁজে যৌথ অভিযানে নেমেছিল বিভিন্ন জেলার পুলিশ। অবশেষে ধরা পড়ে দুই দুষ্কৃতী মনসুর আলম ও এজাজ আহমেদ। মালদহের ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয় উত্তর দিনাজপুর থেকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ বাইকে করে এসে দুই দুষ্কৃতী বছর সাতেকের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে। সাড়ে ১১টা নাগাদ সেই খবর যায় হরিশচন্দ্রপুর থানায়। অপহরণকারীদের খোঁজে তৎপর হয় পুলিশ। সংগ্রহ করা হয় সিসিটিভি ফুটেজ। ৩৩ সেকেন্ডের ফুটেজ দেখার পরে দুষ্কৃতীদের হেলমেট, জ্যাকেট ও নম্বর প্লেটবিহীন বাইকের রং দেখে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। খবর দেওয়া হয় উত্তর দিনাজপুর ও বিহার পুলিশকেও। জায়গায় জায়গায় চলে নাকা চেকিং। এর পরে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ নাবালিকার বাবার মোবাইলে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ‘থ্রেট মেসেজ’ আসে। ওই নম্বরের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ।
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে দুষ্কৃতীদের টাওয়ার লোকেশন দেখায়। সেই মতো জায়গায় জায়গায় করা হতে থাকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ। চলে অভিযান। দুপুর আড়াইটে নাগাদ দেখা যায় অপহরণকারীরা রাস্তা বদল করে করণদিঘিতে গিয়েছে। সেখানেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তারা।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ যাদব জানান, বিভিন্ন জায়গার পুলিশ একজোট হয়ে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে রুদ্ধশ্বাস লড়াই চালিয়েছিল। এর ফলেই নাবালিকাকে উদ্ধার করার পাশাপাশি অপহরণকারীদের পাকড়াও করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে নাবালিকাকে বাইক থেকে ছুড়ে ফেলেছিল অপহরণকারীরা। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় অপহরণকারীরা। নাবালিকার গ্রামেই ধৃতদের বাড়ি। ওই এলাকাতেই এজাজের ওষুধের দোকান আছে। তা ছাড়া সে জমির ব্যবসাও করে। মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের লক্ষ্যেই এই অপহরণ বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।’’
অপহরণকারীদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তারা কোনও গ্যাং-এর সঙ্গে যুক্ত কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতদের আরও জেরা করার জন্য ১৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।