গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভবানীপুর-সহ রাজ্যের ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের ঘোষণা না হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হচ্ছে কলকাতা হাই কোর্টে। শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, এই মামলায় ‘পক্ষ’ হিসেবে যুক্ত করা হতে পারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এমনকি, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককেও। আগামী সপ্তাহে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের দায়ের করা মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর প্রায় চার মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু তার পরও রাজ্যের দু’টি কেন্দ্রে নির্বাচন এবং পাঁচটি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কেন্দ্রের বিধায়ক পদ শূন্য হলে, ছ’মাসের মধ্যে সেখানে উপনির্বাচন করা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির উপর বাংলায় তার অন্যথা হতে পারে বলে আশঙ্কা আবেদনকারী আইনজীবীর। সে কারণেই হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করছেন তিনি। রাজ্যের ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ভোটের দাবিও জানাচ্ছেন।
রমাপ্রসাদ জানিয়েছেন, রাজ্যে উপনির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘কোনও কেন্দ্রের বিধায়ক পদ খালি থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেক মানুষ সমস্যায় পড়েন। তাই সংবিধান অনুযায়ী সময়মতো ভোট করানো জরুরি। আর সেই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। এ ক্ষেত্রে উপনির্বাচনের সময়সীমা পেরিয়ে যেতে বসলেও, এখনও ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি কমিশন। তারই বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।’’
সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্রে নির্বাচন এবং ভবানীপুর, খড়দহ, শান্তিপুর, দিনহাটা ও গোসাবায় উপনির্বাচন হওয়ার কথা। ওই কেন্দ্রগুলিতে ভোটের দাবিতে একাধিক বার নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল। আবার অতিমারি পরিস্থিতির যুক্তিতে ভোটগ্রহণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিজেপি। রমাপ্রসাদের মন্তব্য, ‘‘অন্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেক কম। তা ছাড়া, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন মেনে এর আগে যদি আট দফায় ভোট করানো সম্ভব হয়, তা হলে এখন নয় কেন?’’
বুধবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের উপনির্বাচন নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিশনের কর্তারা। সেখানে এ রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এখনই ভোট করাতে তাঁদের কোনও অসুবিধা নেই। সম্ভব হলে এ মাসেই ভোট গ্রহণ করা যেতে পারে। কারণ অক্টোবর মাসে পুজোর ছুটি রয়েছে। উৎসবের মরসুমে ভোট গ্রহণে অসুবিধাও রয়েছে। তার পর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই শেষ হচ্ছে বকেয়া আসনগুলির উপনির্বাচনের সময়সীমা। ফলে ভোট করার পক্ষে সেপ্টেম্বর উপযুক্ত সময়।
তবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা এখনও পর্যন্ত জানানো হয়নি। তারা শুধু ১৭টি রাজ্যের কাছ থেকে উপনির্বাচন করার পক্ষে মত চেয়েছে। অনেকে মনে করছেন, কমিশনের যদি এ মাসেই ভোট করার ইচ্ছে থাকে, তবে দিন কয়েকের মধ্যেই তাদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।