Subrata Mukherjee

Subrata Mukherjee Death: ছাত্রনেতা থেকে বাংলার সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী, সুব্রতর প্রয়াণে এক সোনালি অধ্যায়ের অবসান

এ রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী কিংবা কলকাতার মেয়র, দুর্গাপুজোয় একডালিয়া এভারগ্রিনের উদ্যোক্তা— সুব্রতর জীবন ছিল আক্ষরিক অর্থেই বর্ণময়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২১ ২৩:৩৫
০১ ১১
ষাটের দশকের দামাল ছাত্রনেতা থেকে বাংলার রাজনীতির অন্যতম স্তম্ভ। রাজ্য রাজনীতিতে তড়িৎগতিতে উত্থান হয়েছিল সদ্যপ্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের।

ষাটের দশকের দামাল ছাত্রনেতা থেকে বাংলার রাজনীতির অন্যতম স্তম্ভ। রাজ্য রাজনীতিতে তড়িৎগতিতে উত্থান হয়েছিল সদ্যপ্রয়াত পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের।

০২ ১১
এক সময় এ রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী অথবা দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর বিশ্বস্ত কিংবা কলকাতার মেয়র, আবার দুর্গাপুজোয় শহরের অন্যতম নামী ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিনের উদ্যোক্তা— সুব্রতর জীবন ছিল আক্ষরিক অর্থেই বর্ণময়।

এক সময় এ রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী অথবা দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর বিশ্বস্ত কিংবা কলকাতার মেয়র, আবার দুর্গাপুজোয় শহরের অন্যতম নামী ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিনের উদ্যোক্তা— সুব্রতর জীবন ছিল আক্ষরিক অর্থেই বর্ণময়।

০৩ ১১
সুব্রতর জন্ম হয়েছিল শহরতলিতে। ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন, বজবজ এলাকার সারেঙ্গাবাদে। তবে মফস্‌সলের গণ্ডি ছাড়িয়ে কলকাতার বৃহৎ পরিসরেও অনায়াসে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

সুব্রতর জন্ম হয়েছিল শহরতলিতে। ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন, বজবজ এলাকার সারেঙ্গাবাদে। তবে মফস্‌সলের গণ্ডি ছাড়িয়ে কলকাতার বৃহৎ পরিসরেও অনায়াসে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement
০৪ ১১
ষাটের দশকে ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি সুব্রতর। শিয়ালদহের বঙ্গবাসী কলেজে পড়াশোনার করার সময় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেই সূত্রেই ঘনিষ্ঠতা বাংলার রাজনীতির আর এক দামাল চরিত্র প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে। সত্তরের দশকে বাংলার ছাত্র রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত নাম হয়ে উঠেছিল ‘প্রিয়-সুব্রত’ জুটি। এ জুটির সঙ্গেই উচ্চারিত হত সোমেন মিত্রে নামও।

ষাটের দশকে ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি সুব্রতর। শিয়ালদহের বঙ্গবাসী কলেজে পড়াশোনার করার সময় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। সেই সূত্রেই ঘনিষ্ঠতা বাংলার রাজনীতির আর এক দামাল চরিত্র প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে। সত্তরের দশকে বাংলার ছাত্র রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত নাম হয়ে উঠেছিল ‘প্রিয়-সুব্রত’ জুটি। এ জুটির সঙ্গেই উচ্চারিত হত সোমেন মিত্রে নামও।

০৫ ১১
সত্তরের দশকেই রাজনীতিতে বার বার শিরোনামে আসেন সুব্রত। ১৯৭১ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েই জয় ছিনিয়ে নেন। সে সময় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের সভাপতিও হয়েছিলেন সুব্রত। ’৭২-এ ফের বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয়। সে জয়ের পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যও হন সুব্রত। বাংলার সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হওয়ার সে নজির আজও ভাঙা হয়নি কোনও রাজনীতিকের।

সত্তরের দশকেই রাজনীতিতে বার বার শিরোনামে আসেন সুব্রত। ১৯৭১ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়েই জয় ছিনিয়ে নেন। সে সময় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের সভাপতিও হয়েছিলেন সুব্রত। ’৭২-এ ফের বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয়। সে জয়ের পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যও হন সুব্রত। বাংলার সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হওয়ার সে নজির আজও ভাঙা হয়নি কোনও রাজনীতিকের।

Advertisement
০৬ ১১
জয়ের পাশাপাশি হারের মুখও দেখেছেন। ১৯৭৭ সালের ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের সময় হেরে যান সুব্রতও। পরে দলবদল করে যোগ দেন সে সময়কার তরুণ তুর্কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলে। সালটা ছিল ২০০০। সে বছরই কলকাতার পুরভোটে কংগ্রেসের বিধায়ক পদ ধরে রেখেই ৮৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে দাঁড়ান। জিতে কলকাতার মেয়র হন তিনি। ২০০১ সালে ফের বিধায়ক হয়েছিলেন সুব্রত, তৃণমূলের টিকিটে লড়ে। ২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে হেরে যান কলকাতা উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের লড়াইতে।

জয়ের পাশাপাশি হারের মুখও দেখেছেন। ১৯৭৭ সালের ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের সময় হেরে যান সুব্রতও। পরে দলবদল করে যোগ দেন সে সময়কার তরুণ তুর্কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলে। সালটা ছিল ২০০০। সে বছরই কলকাতার পুরভোটে কংগ্রেসের বিধায়ক পদ ধরে রেখেই ৮৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে দাঁড়ান। জিতে কলকাতার মেয়র হন তিনি। ২০০১ সালে ফের বিধায়ক হয়েছিলেন সুব্রত, তৃণমূলের টিকিটে লড়ে। ২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে হেরে যান কলকাতা উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রের লড়াইতে।

০৭ ১১
তৃণমূলের সঙ্গে সুব্রতর সম্পর্ক সব সময় যে মধুর ছিল, তা বলা যাবে না। ২০০৫ সালে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে তৃণমূল ছেড়ে পৃথক মঞ্চ গড়েন সুব্রত। এক সময় কংগ্রেসেও ফিরে গিয়েছিলেন। তবে প্রত্যাবর্তনও করেছিলেন তৃণমূলে। ২০০৮ সালে কংগ্রেসে থাকাকালীন সিঙ্গুরে মমতার ধর্নামঞ্চে যোগ দিয়ে অনেককেই চমকে দেন তিনি। এর বছর দুয়েক পর ২০১০-এ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন। আমৃত্যু সে দলেই ছিলেন সুব্রত।

তৃণমূলের সঙ্গে সুব্রতর সম্পর্ক সব সময় যে মধুর ছিল, তা বলা যাবে না। ২০০৫ সালে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে তৃণমূল ছেড়ে পৃথক মঞ্চ গড়েন সুব্রত। এক সময় কংগ্রেসেও ফিরে গিয়েছিলেন। তবে প্রত্যাবর্তনও করেছিলেন তৃণমূলে। ২০০৮ সালে কংগ্রেসে থাকাকালীন সিঙ্গুরে মমতার ধর্নামঞ্চে যোগ দিয়ে অনেককেই চমকে দেন তিনি। এর বছর দুয়েক পর ২০১০-এ কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন। আমৃত্যু সে দলেই ছিলেন সুব্রত।

Advertisement
০৮ ১১
লোকসভায় সাংসদ পদ অধরা থাকলেও একাধিক বার রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন সুব্রত। কংগ্রেসে থাকাকালীন সে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি পদের দায়িত্বও সামলেছেন।

লোকসভায় সাংসদ পদ অধরা থাকলেও একাধিক বার রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন সুব্রত। কংগ্রেসে থাকাকালীন সে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি পদের দায়িত্বও সামলেছেন।

০৯ ১১
রাজনীতির আপাতগম্ভীর পরিসরে থাকলেও বেজায় মজার মানুষ ছিলেন সুব্রত। কঠিন পরিস্থিতিতেও মজা করে উত্তর দিতেন তিনি। ‘মুশকিলআসান’ সুব্রত বহু জটিল পরিস্থিতিও অনেক সহজ করে দিতেন। এমনই মত তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের। ভোজনরসিক হিসাবেও কম নামডাক ছিল না। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৌরলা মাছ খেতে দারুণ ভালবাসতেন সুব্রত’দা।’’ ফুটবলপ্রিয় সুব্রত আগাগোড়াই ছিলেন মোহনবাগানের কট্টর সমর্থক।

রাজনীতির আপাতগম্ভীর পরিসরে থাকলেও বেজায় মজার মানুষ ছিলেন সুব্রত। কঠিন পরিস্থিতিতেও মজা করে উত্তর দিতেন তিনি। ‘মুশকিলআসান’ সুব্রত বহু জটিল পরিস্থিতিও অনেক সহজ করে দিতেন। এমনই মত তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের। ভোজনরসিক হিসাবেও কম নামডাক ছিল না। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৌরলা মাছ খেতে দারুণ ভালবাসতেন সুব্রত’দা।’’ ফুটবলপ্রিয় সুব্রত আগাগোড়াই ছিলেন মোহনবাগানের কট্টর সমর্থক।

১০ ১১
রাজনীতির আঙিনার পাশাপাশি কলকাতার অন্যতম সেরা দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা হিসাবেও স্বকীয়তার ছাপ রেখেছিলেন সুব্রত। যা আজও বজায় রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের পুজোকে কেন্দ্র করে বহু বাঙালির উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো।

রাজনীতির আঙিনার পাশাপাশি কলকাতার অন্যতম সেরা দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা হিসাবেও স্বকীয়তার ছাপ রেখেছিলেন সুব্রত। যা আজও বজায় রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের পুজোকে কেন্দ্র করে বহু বাঙালির উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো।

১১ ১১
কালীপুজোর রাতে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে অবসান হল রাজ্য রাজনীতির এক সোনালি অধ্যায়ের। আলোর উৎসবের মাঝে রাজনীতির আঙিনায় নেমে এল বিষাদের ছায়া।

কালীপুজোর রাতে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে অবসান হল রাজ্য রাজনীতির এক সোনালি অধ্যায়ের। আলোর উৎসবের মাঝে রাজনীতির আঙিনায় নেমে এল বিষাদের ছায়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি