Hunger Strike

জুনিয়র ডাক্তারদের ভরসা জোগাতে ধর্মতলায় প্রতীকী অনশনে সিনিয়রেরাও! সঙ্গী নাগরিক মঞ্চের প্রতিনিধিও

জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চের পাশে শুরু হয়েছে প্রতীকী অনশনও। তিন জন সিনিয়র ডাক্তার এবং নাগরিক সমাজের এক প্রতিনিধি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৫
রবিবার প্রতীকী অনশনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি (বাঁ দিকে) তুলিকা অধিকারী এবং বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দেবব্রত বেরা (ডান দিকে)।

রবিবার প্রতীকী অনশনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি (বাঁ দিকে) তুলিকা অধিকারী এবং বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দেবব্রত বেরা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

সিনিয়রদের পরামর্শ মেনে এবং সাধারণ মানুষের কথা ভেবে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন। তবে শনিবার থেকে তাঁরা আন্দোলনকে নতুন রূপ দিয়েছেন। শুরু করেছেন আমরণ অনশন। ধর্মতলায় তাঁদের অনশনমঞ্চের ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে। আরজি কর-কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে শুরু থেকেই থেকেছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। এ বার অনশন কর্মসূচিতেও তাঁদের মানসিক ভরসা জোগাতে পাশে এলেন সিনিয়রেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্তে পৃথক ভাবে প্রতীকী অনশনে বসেছেন তিন সিনিয়র ডাক্তার। ধর্মতলায় ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। সিনিয়র ডাক্তারের সঙ্গে এই প্রতীকী অনশনে অংশ নিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও।

Advertisement

বর্তমানে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি ‘সমর্থনের অনশনে’ বসছেন আরও চার জন। তিন জন সিনিয়র চিকিৎসক এবং ‘এয়ারপোর্ট নাগরিক মঞ্চ’ নামে এক নাগরিক সংগঠনের এক প্রতিনিধি। প্রতীকী অনশনে বসেছেন রায়গঞ্জ মে়ডিক্যালের সিনিয়র ডাক্তার রাজর্ষি বিশ্বাস, সিউড়ি জেলা হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার সোমা ঘোষ এবং কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক দেবব্রত বেরা। দেবব্রত এনআরএসের প্রাক্তনী। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে শুরু থেকে সমর্থন দিয়েছেন সাধারণ মানুষেরাও। তাঁরাও ডাক্তারদের সঙ্গে মিছিলে হেঁটেছেন, রাত জেগেছেন। সেই নাগরিক সমাজের অন্যতম প্রতিনিধি তুলিকা অধিকারীও ধর্মতলায় ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে বসেছেন। অতীতে ‘রাত দখল’-এর কর্মসূচিতেও অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা।

আপাতত ১২ ঘণ্টার জন্য এই প্রতীকী অনশন চলছে। তবে চিকিৎসক দেবব্রতের বক্তব্য, এর পরে অনশনমঞ্চে থাকতে না পারলেও জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে বার্তা দিয়ে অনশনে থেকেই তিনি ডিউটি করবেন। প্রসঙ্গত, রবিবার সকালেই ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস’-এর তরফে জানানো হয়েছিল, জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে তাঁরাও অনশনে বসবেন। কবে থেকে এবং কোথায় তাঁরা অনশনে বসবেন, সেই বিষয়ে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন তাঁরা। তবে রবিবার সন্ধ্যায় তিন সিনিয়র ডাক্তারের প্রতীকী অনশনের সঙ্গে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস’-এর সিদ্ধান্তের কোনও প্রত্যক্ষ যোগ নেই। এই তিন চিকিৎসক একক ভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রতীকী অনশনের।

কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সময়েই জুনিয়র ডাক্তারেরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আন্দোলনের পন্থায় বদল হবে। শুক্রবার ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে সেখানেই অবস্থানে বসে পড়েছিলেন তাঁরা। ১০ দফা দাবি পূরণের জন্য সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। অবস্থানমঞ্চে বসিয়ে দিয়েছিলেন ঘড়ি। জানিয়েছিলেন, প্রতিটি ঘণ্টার হিসাব হবে। ২৪ ঘণ্টা পার হতেই শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। অবস্থানমঞ্চ রূপ নেয় অনশনমঞ্চের।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

শনিবার রাত থেকে অনশনে বসেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পিডিটি অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, তনয়া পাঁজা এবং ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট স্নিগ্ধা হাজরা বসেছেন অনশনে। এ ছাড়াও এসএসকেএমের পিডিটি অর্ণব মুখোপাধ্যায়, এনআরএসের পিজিটি পুলস্ত্য আচার্য এবং কেপিসি হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা অনশনে বসেছেন। প্রথম পর্যায়ে অনশনকারীদের তালিকায় আরজি করের কেউ ছিলেন না। তবে এ বার আরজি করও যোগ দিচ্ছেন অনশনে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আরজি কর থেকে অনিকেত মাহাতো এবং আশফাকউল্লাহ নাইয়া পৌঁছে গিয়েছেন অনশনমঞ্চের সামনে।

আরও পড়ুন
Advertisement