Sandeshkhali Incident

গোলমাল পাকালে কপালে দুঃখ আছে, অশান্তি হতে দেব না! সন্দেশখালি নিয়ে বার্তা পুলিশের

ডিআইজি জানিয়েছেন, সন্দেশখালিকে আর নতুন করে অশান্ত হতে দেবে না পুলিশ। শুক্রবার রাত থেকে সন্দেশখালি থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ ইন্টারনেট সংযোগ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৪
বারাসতের ডিআইজি সুমিত কুমার।

বারাসতের ডিআইজি সুমিত কুমার। —নিজস্ব চিত্র।

সন্দেশখালিতে নতুন করে গোলমাল বা ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা যাঁরা করবেন, তাঁদের কপালে কষ্ট আছে। শনিবার তেমনটাই জানালেন বারাসতের ডিআইজি সুমিত কুমার। পাশাপাশি ডিআইজি এ-ও জানিয়েছেন, সন্দেশখালিকে আর নতুন করে অশান্ত হতে দেবে না পুলিশ। শুক্রবার রাত থেকে উত্তপ্ত সন্দেশখালি থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বন্ধ ইন্টারনেট সংযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও সুমিত জানিয়েছেন।

Advertisement

ডিআইজির কথায়, ‘‘সন্দেশখালির পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অনেক পদক্ষেপ করছে রাজ্যের পুলিশ। অনেক ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। আমরা আর কোনও গন্ডগোল হতে দেব না।’’

সুমিত আরও জানিয়েছেন, শনিবার মাধ্যমিক পরীক্ষা। সন্দেশখালির পরীক্ষার্থীদের যথাসম্ভব সাহায্য করা হবে। পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে পুলিশ বিশেষ নজর রাখবে। তিনি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে। তাই সন্দেশখালির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যথাসম্ভব সাহায্য করবে পুলিশ। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেটও বন্ধ। কেউ যদি কোনও গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করে, তা হলে তার বিরুদ্ধে যত শক্ত পদক্ষেপ করা যায়, করা হবে। কেউ গন্ডগোলে যাবেন না। ঝামেলা পাকাবেন না। না হলে কপালে কষ্ট আছে।’’

প্রসঙ্গত, নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সন্দেশখালি। এলাকার তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ, শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারকে গ্রেফতার করার দাবিতে সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয়েরা। বুধবার থেকে অশান্ত উত্তর ২৪ পরগনার এই এলাকা। বৃহস্পতিবার শাহজাহানদের গ্রেফতারের দাবিতে দিনভর উত্তপ্ত থেকেছে সন্দেশখালি। বিক্ষোভের নেতৃত্বে মূলত মহিলারা ছিলেন। বাঁশ, দা, কাটারি নিয়ে রাস্তায় নামেন তাঁরা। ঘেরাও করা হয় সন্দেশখালি থানা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, শাসকদলের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় অত্যাচার চালান শাহজাহানেরা। জোর করে জমি দখল করে নেওয়া হয়। কাজ করিয়ে টাকা দেওয়া হয় না। টাকা চাইতে গেলে মারধর করা হয়। তৃণমূল নেতাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে তাই জমি ফেরতের দাবিতে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা। শুক্রবার সকালে শিবুর পোলট্রি ফার্মে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর বাড়ি এবং বাগানবাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। যাকে কেন্দ্র করে সারা দিন অগ্নিগর্ভ ছিল সন্দেশখালির জেলিয়াখালি এলাকা। পরে বিক্ষোভকারীদের পাল্টা মারধরের অভিযোগও উঠেছে তৃণমূল নেতার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় র‌্যাফ নামানো হয়েছিল। সন্দেশখালির ঘটনায় বৃহস্পতিবার পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার আরও আট জনকে গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার সারা দিন ধরেই দফায় দফায় সন্দেশখালি থানার সামনে যৌথ ভাবে বিক্ষোভ দেখায় জমি রক্ষা কমিটি এবং আদিবাসীদের সংগঠন। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ বিক্ষোভ উঠে গেলেও বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি ছিল, শনিবার আবার আন্দোলনে শামিল হবেন তাঁরা। এর পর শুক্রবার রাতেই বিশাল বাহিনী দিয়ে সন্দেশখালি থানা এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। শুরু হয় রুটমার্চ। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও শুক্রবার রাতের মধ্যেই সন্দেশখালি পৌঁছন। এর পর সন্দেশখালি থানা এলাকায় ১৪৪ ধরা জারি করে পুলিশ। শনিবার সকাল থেকেই সন্দেশখালির পরিস্থিতি থমথমে। রাস্তাঘাট শুনশান। বন্ধ রয়েছে ত্রিমোহিনী বাজারের দোকানপাট। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে যেতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন স্থানীয়দের একাংশ।

আরও পড়ুন
Advertisement