এই অত্যাধুনিক কৃষি পরিষেবা দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। — প্রতীকী চিত্র।
প্রশাসনিক কাজে ড্রোনের ব্যবহার শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এ বার কৃষিকাজেও নেওয়া হচ্ছে ড্রোনের সুবিধা। সুন্দরবনের চাষিদের সময়, শ্রম এবং অর্থ সাশ্রয়ের জন্য এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করল নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। ড্রোনের মাধ্যমেই চলছে চাষের জমিতে রাসায়নিক সার এবং জৈব কীটনাশক প্রয়োগ।
ভারত সরকারের ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ, দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ভাবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ড্রোনের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক প্রয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই অত্যাধুনিক কৃষি পরিষেবা দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। তার মধ্যে অন্যতম নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। সেখানকার প্রধান বিজ্ঞানী চন্দন কুমার মণ্ডল জানাচ্ছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর ১ এবং ২ নম্বর ব্লক, মথুরাপুর, পাথরপ্রতিমা, কুলতলি, মন্দিরবাজার-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা প্রযুক্তির এই নয়া মাধ্যম কাজে লাগিয়ে জমিতে সার এবং কীটনাশক প্রয়োগের সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন এক একর জমিতে চাষিদের কীটনাশক বা সার প্রয়োগ করতে প্রায় ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা লেগে যেত। ড্রোনের মাধ্যমে মাত্র ৮ মিনিটে এক একর জমিতে কীটনাশক অথবা রাসায়নিক সার স্প্রে করতে পারবেন চাষিরা। এর ফলে তাঁদের সময়, শ্রম এবং অর্থ— তিনটিই সাশ্রয় হবে।’’
গত কয়েক দিন ধরে জয়নগর ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় চলছে পরীক্ষামূলকভাবে এই ড্রোনের ব্যবহার। নতুন পদ্ধতি পেয়ে চাষিরা একই সঙ্গে খুশি এবং কৌতূহলী। জয়নগরের শাহজাদাপুরের প্রবীণ চাষি প্রফুল্ল মাখাল জানান তাঁর এক একর জমিতে তিনি তুলা চাষ করেছেন। গত বছর পর্যন্ত ওই জমিতে সারাদিন ধরে কীটনাশক স্প্রে করেছেন। কিন্তু এ বার মাত্র ৮ মিনিটেই তাঁর পুরো জমিতে রাসায়নিক সার ছড়িয়ে দিয়েছে কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের ড্রোন।
কৃষিবিজ্ঞানী সোমনাথ সর্দার জানাচ্ছেন, ১০ লিটার রাসায়নিক সার অথবা কীটনাশক নিয়ে চাষের জমি থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় ড্রোন পাঠিয়ে মাত্র ৮ মিনিটেই এক একর জমিতে স্প্রে করা যায়। এই ব্যবস্থা কতটা ফলপ্রসূ হয় তা বোঝা যাবে কিছু দিনের মধ্যে।