WB Panchayat Election 2023

দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ ক্যানিংয়ে, থামাতে গিয়ে জখম পুলিশও

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে। তার জেরে উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়। গুলি চালানো এবং বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ১১:৪৪
TMC and CPM supporters engaged in clash at Canning

ক্যানিংয়ে রাস্তায় বোমাবাজি। — নিজস্ব চিত্র।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং। বাসন্তী হাইওয়েতে তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি এবং গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে। তার জেরে সুনীল হালদার নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে ক্যানিংয়ের জোড়াফুল শিবিরের একটি অংশের দাবি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সংঘর্ষে। ক্যানিংয়ের এসডিপিও-সহ কয়েক জন পুলিশ কর্মীও ওই সংঘর্ষে জখম হয়েছেন। এর প্রতিবাদে শুরু হয় বাসন্তী হাইওয়ে অবরোধ। ক্যানিং তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার ব্লক সভাপতি এবং স্থানীয় বিধায়কের গোষ্ঠীর মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে বুধবার ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। এই আবহে ক্যানিং শহরে সিপিএমের একটা অফিসেও হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

ক্যানিং ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়ির অভিযোগ, বুধবার তাঁর অনুগামীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তাঁদের ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড চত্বরে আটকে দেয় দুষ্কৃতীরা। আরও অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক পরেশরাম দাসের অনুগামীরা তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দিচ্ছেন। ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বহু মানুষ জমায়েত করেছেন বলেও অভিযোগ। এই আবহে ক্যানিং হাসপাতাল মোড় এলাকায় তৃণমূলের দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। শুরু হয় দু’দলের মধ্যে ইটবৃষ্টি। তাদের মধ্যে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। গুলিও চলেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে ক্যানিংয়ের হাসপাতাল মোড়ে অনুগামীদের নিয়ে অবরোধ শুরু করেন শৈবাল। তাঁর হুঁশিয়ারি, পরেশরামের অনুগামীদের জমায়েত না সরালে অবরোধ চলবে। অবরোধের জেরে ওই রাস্তায় বড়ালি থেকে ঘটকপুকুর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

শৈবালের তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরেশরাম। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের ছেলেরা কাউকে মারেনি। যারা মারপিট করেছে তারা সকলেই বহিরাগত। ভিডিও ফুটেজ যাচাই করলেই বোঝা যাবে।’’ তাঁর মতে, ক্যানিংয়ের ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়। শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বহিরাগতদের নিয়ে এসে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দু’পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। তার জেরে পিছু হটে দু’পক্ষ। তবে এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। কিছু পরে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। ক্যানিংয়ের এসডিপিও দিবাকর দাস জানিয়েছেন, ওই সংঘর্ষে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ জন্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ নির্বিঘ্নে শুরু হয় বলেও জানান তিনি। দিবাকর জানান, সংঘর্ষে দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং জখম হয়েছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। আঘাত লেগেছে দিবাকরেরও। ক্যানিংয়ে গন্ডগোলের ঘটনায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

মঙ্গলবার ক্যানিংয়ে বিজেপি প্রার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। বুধবার ক্যানিং শহরে সিপিএমের একটি পার্টি অফিসের ভিতরে ঢুকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আক্রমণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। যদিও সিপিএমের তোলা সেই অভিযোগ মানতে নারাজ শাসকদল।

আরও পড়ুন
Advertisement