সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শিবু হাজরা। —ফাইল চিত্র।
তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে উত্তাল সন্দেশখালি। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় মহিলাদের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগও শোনা যাচ্ছে এলাকায় কান পাতলে। এই পরিস্থিতিতে সন্দেশখালির গোপন ডেরা থেকে মুখ খুললেন শিবু হাজরা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তিনি। শাহজাহান শেখের একান্ত ঘনিষ্ঠ। তাঁকে গ্রেফতার করার দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়েছে।
বুধবার সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন শিবু। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সবই ভিত্তিহীন অভিযোগ। এর নেপথ্যে রয়েছেন সিপিএমের নিরাপদ সর্দার এবং বিজেপির বিকাশ সিংহ। ওঁরা মানুষকে উত্ত্যক্ত করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে উস্কে দিচ্ছেন। মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।’’
দিলীপ মল্লিক নামের এক জনের বিরুদ্ধেও চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন শিবু। তিনি জানান, দিলীপ একসময় সিপিএম করতেন। প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আবার নিরাপদদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করছেন সন্দেশখালিতে।
শিবুর দাবি, অশান্তি নয়, সন্দেশখালিতে শান্তি ফিরিয়েছেন তাঁরাই। সেই শান্তি বজায়ও রেখেছেন। বলেন, ‘‘নিরাপদ বিধায়ক থাকাকালীন সন্দেশখালিতে দিনেদুপুরে খুন হত। আমি তৃণমূল করি বলে আমার উপর অত্যাচার করা হত। আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দিত না। নদীর ধারেও কত রাত কাটিয়েছি আমি। এখন ওরা ক্ষমতায় আসতে পারছে না, তাই মানুষকে উস্কানি দিচ্ছে। বিজেপি, সিপিএমের এই যৌথ স্বপ্ন পূরণ হবে না।’’
মহিলাদের উপর অত্যাচারের দাবি উড়িয়ে দিয়ে শিবু বলেছেন, ‘‘আমি কখনওই কাউকে রাতে ডাকিনি। কেন ডাকতে যাব? দলের মিটিং থাকলে খবর দেওয়া হত। সেখানে থাকার জন্য কাউকে জোর করা হয়নি কখনও।’’
শিবুর পোলট্রি ফার্মে গত বৃহস্পতিবার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করে তাঁর বাড়ি, বাগানবাড়ি। অভিযোগ, এলাকায় জমি জবরদখল করে শিবু, শাহজাহান, উত্তমরা মাছের ভেড়ি তৈরি করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন মূলত মহিলারা। বঁটি, কাটারি, বাঁশ, লাঠি হাতে তাঁরা সন্দেশখালি থানার সামনে বসে পড়েছিলেন। সেই ঘটনার পর ১১৭ জনের বিরুদ্ধে শিবু থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় নিরাপদ-সহ বেশ কয়েক জনকে। শিবুর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ এখনও করা হয়নি।