Political Clash

আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষ ভাঙড়ে, শাসকদলের নেতাদের উপস্থিতিতেই এ সব হচ্ছে, দাবি নওশাদের

দুই দলের সংঘর্ষে তৃণমূলের বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে এক জনকে। প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তৃণমূল কর্মীরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:২৫
আইএসএফ এবং তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত ভাঙড়।

আইএসএফ এবং তৃণমূল কর্মীদের সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত ভাঙড়। — নিজস্ব চিত্র।

ফের উত্তপ্ত ভাঙড়। শনিবার আইএসএফ এবং তৃণমূলের সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত স্থানীয় হাতিশালা এলাকা। দুই দলের সংঘর্ষে তৃণমূলের বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে এক জনকে। প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তৃণমূল কর্মীরা। গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। ঘটনায় আইএসএফেরও কয়েক জন কর্মী আহত। গ্রেফতার হয়েছেন চার জন আইএসএফ কর্মী।

শনিবার কলকাতায় দলীয় সভা ছিল আইএসএফের। তাদের অভিযোগ, সেখানে যাওয়ার পথে শনিবার সকালে আইএসএফ কর্মীদের মারধর করেন তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতেই এ সব ঘটেছে বলে দাবি করেছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তৃণমূল সেই অভিযোগ যদিও মানেনি। লেদার কমপ্লেক্স থানা থেকে পুলিশবাহিনী পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে।

Advertisement

নওশাদ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ সক্রিয় হলে এ রকম ঘটত না। আইএসএফ কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে।’’ নওশাদ জানিয়েছেন, গোটা ঘটনায় আইএসএফের কোনও ভূমিকা ছিল না। বরং তৃণমূল তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সুন্দর ভাবে কর্মীদের কলকাতায় নিয়ে যেতে এসেছিলাম। তৃণমূল নেতা জুলদার নেতৃত্বে এ সব হয়েছে। আমরা মারামারি করি না। এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। সবাইকে নিয়ে কলকাতার পথে যাচ্ছি।’’ দুই দলের সংঘর্ষের জেরে চায়ের দোকানে ভাঙচুর হয়েছে। নওশাজ জানিয়েছেন, তিনি নিজে মেরামতের টাকা দেবেন।

নওশাদের অভিযোগ মানেননি দক্ষিণ ২৪ পরগনা ট্রেড ইউনিয়নের ভাইস চেয়ারম্যান জুলফিকার মোল্লা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের উপর হামলা করিনি। ওঁরাই ইট নিয়ে হামলা করেছে। এক সাংবাদিকের উপরও হামলা করেছে। জনসাধারণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এখানে নেতাদের কিছু করার নেই।’’

আর এক তৃণমূল কর্মী কৌশিক মণ্ডল অভিযোগ করেন যে, আগে আইএসএফই হামলা চালায়। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের মিছিল হয়েছিল। আরাবুলের নেতৃত্বে। মিছিল শেষ করে বাড়ি ফিরছিলাম। ওঁরা গাড়ি নিয়ে জনসভায় যাচ্ছিলেন। গাড়ি থেকে ইটবৃষ্টি শুরু করেন। অশ্লীল ভাষায় গালি দিচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভাঙড়ের নেতৃত্বকে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। পতাকা লাগানো নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে তৃণমূল এবং আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে বাধে সংঘর্ষ। আইএসএফ নেতা আবু হোসেন মোল্লার অভিযোগ, ‘‘২১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে আমরা দলীয় পতাকা লাগাচ্ছিলাম। সেই সময় আরাবুল ইসলাম এবং তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম বাইরে থেকে লোকজন এনে আমাদের মারধর করে। অথচ পুলিশ এসে আমাদেরই দু’জনকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। ওরা লাঠি দিয়ে মেরেছে। আমরা আত্মরক্ষা করতে ওদের মেরেছি।’’ সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে যায় কাশীপুর থানার পুলিশ।

তৃণমূল পাল্টা আইএসএফের দিকেই আঙুল তুলেছে। তৃণমূল নেতা হাকিমুল বলেন, ‘‘গতকাল আইএসএফের কিছু নেতা পতাকা টাঙাচ্ছিল। সেই সময় তারা আমাদের এক সমর্থকের বাড়িতে তাদের দলীয় পতাকা টাঙায় এবং আরাবুল ইসলামের নামে গালাগালি দেয়। তার প্রতিবাদ করলে ওরা অতর্কিতে আমাদের উপর হামলা চালায়। ইটবৃষ্টি করে। আমাদের কর্মীদের বন্দুকের বাঁট, ইট, রড দিয়েও মারধর করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement