(বাঁ দিকে) উত্তর ব্যারাকপুরের ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতে পুলিশ। মৃত ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কোনও ভিডিয়ো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে? তাই কি তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন? বাড়ির চিলেকোঠা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে আড়াই পাতার একটি চিঠিও মিলেছে। যা ‘সুইসাইড নোট’ বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেখানে থেকেই এ সব প্রশ্ন উঠছে।
শনিবার সকালে বাড়ির চিলেকোঠা থেকে উদ্ধার হয় উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিতের দেহ। মৃতের পরিবার এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবারের পর থেকে তিনি ‘নিখোঁজ’ ছিলেন। শুক্রবার রাতে অবশ্য বাড়ি ফিরেছিলেন। পরে আবার কিছু ক্ষণের জন্য বাইরে বেরোন। পরিবারের কারও সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলেননি। মোবাইলটিও বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন।
গভীর রাতে আবার বাড়ি ফেরেন সত্যজিৎ। শনিবার সকালে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয় চিলেকোঠা থেকে। সেই সঙ্গে একটি চিঠিও মিলেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, দেহের পাশ থেকে মেলা চিঠি আড়াই পাতা জুড়ে লেখা। সেটি ‘সুইসাইড নোট’ বলে মনে করা হচ্ছে। চিঠিতে মোট চার জনের নাম রয়েছে।
সত্যজিতের পরিবারের দাবি, মোবাইলে ভুয়ো ভিডিয়ো দেখিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলর তথা উত্তর ব্যারাকপুরের উপ-পুরপ্রধানকে ব্ল্যাকমেলিং করা হয়েছিল। মৃতের ছেলে সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, বাবার ‘সুইসাইড নোটে’ এ নিয়ে বিস্তারিত লেখালিখি হয়েছে। যে চার জনের নাম রয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জনকে তাঁরা চেনেন। যে ভিডিয়ো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, সেটি আসল না ভুয়ো, তা পরীক্ষা করে দেখবে পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (উত্তর) গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরো ঘটনা আস্তে আস্তে পরিষ্কার হবে। এখনই এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’
সত্যজিতের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার তত্ত্বই জোরদার হচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই। উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল সত্যজিতের। পুরসভায় বৈঠকও করেছেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ছিলেন একসঙ্গে। তিনি কিছুই ঠাহর করতে পারেননি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও চাইছেন সত্য উদ্ঘাটিত হোক এবং সকলেই পুলিশি তদন্তের উপর ভরসা রাখছেন।