Mystery Death Of TMC Councillor

বাড়ির চিলেকোঠায় মিলল উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের দেহ! নিখোঁজ ছিলেন দু’দিন ধরে

গত দু’দিন ধরে কোনও খোঁজ ছিল না তৃণমূল কাউন্সিলরের। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু মোবাইল রেখে আবার বেরিয়ে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফেরার পর শনিবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:২৫
Satyajit Banerjee

সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে গুলি করে খুনের চেষ্টা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল। তার মধ্যেই উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য। পরিবার সূত্রে খবর, দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর সত্যজিৎ। শুক্রবার বাড়ি ফেরেন। শনিবার সকালে বাড়ির চিলেকোঠা থেকে উদ্ধার হয় দেহ। খুন না আত্মহত্যা, না কি অন্য কারণে মৃত্যু হয়েছে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

সত্যজিতের পরিবার এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত বৃহস্পতিবারের পর থেকে তিনি ‘নিখোঁজ’ ছিলেন। শুক্রবার রাতে অবশ্য বাড়ি ফিরেছিলেন। পরে আবার বাইরে বেরিয়ে যান। পরিবারের কারও সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা বলেননি। মোবাইলটিও বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন। গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন। শনিবার সকালে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির চিলেকোঠা থেকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। ইতিমধ্যে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।

দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল সত্যজিতের। পুরসভায় বৈঠকও করেছেন। তার পর শুনতে পান সত্যজিৎ নিখোঁজ! শনিবার দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে যে বাড়িতে সত্যজিৎ ভাড়া থাকতেন, সেখানে যান মলয়। তাঁর কথায়, ‘‘যে বাড়িতে ভাড়া থাকে তার ছাদ থেকে ওর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর পেলাম। পরশু (বৃহস্পতিবার) একটা মিটিং ছিল। সেখানে দু’ঘণ্টা ও ছিল। কিছুই বুঝতে পারিনি। তার পর শুনলাম নিখোঁজ ছিল। আমার দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সহকর্মী। ১৯৮৪ সাল থেকে জনপ্রতিনিধি ছিল। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পুলিশের তদন্তের উপর ভরসা রাখছি।’’

উল্লেখ্য, ১৩ নভেম্বর ভাটপাড়া এলাকায় খুন হন তৃণমূল নেতা অশোক সাউ। রাজ্যে ছয় বিধানসভায় উপনির্বাচনের দিন চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন ওই নেতা। সেখানে হঠাৎই ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। অশোককে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। চলে বোমাবাজি। বোমায় জখম হন এক নাবালিকা-সহ ছ’জন। ওই ঘটনায় গত বুধবার রাতেই কাইজার আলি ওরফে মোহন নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁকে ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত দেন। খুনের নেপথ্যে ব্যক্তিগত শত্রুতা দায়ী বলে মনে করছে পুলিশ। অন্য দিকে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার কসবায় ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্তের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার চেষ্টা হয়। যদিও নাইন এমএম পিস্তলে গুলি আটকে যাওয়ায় হাতেনাতে ধরা পড়েন আততায়ী। তাঁকে গ্রেফতারের পর এক ট্যাক্সিচালককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই শোরগোলের মধ্যে উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের রহস্যমৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে।

আরও পড়ুন
Advertisement