Budge Budge

স্কুলের সামনে মাদকের কারবার, প্রতিবাদ করায় বজবজে প্রধানশিক্ষকের মুখে ঠুসে দেওয়া হল গাঁজা!

মঙ্গলবার দুপুরে টিফিনের সময় প্রধানশিক্ষক স্কুলের বাইরে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, তখন মাদক ব্যবসায়ী শঙ্কর এবং তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্য বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রধানশিক্ষকের উপর চড়াও হন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বজবজ শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪ ১১:৩৭

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

স্কুল থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে চলে মাদক কারবার। এক দিকে পঞ্চায়েত অফিস। খানিক দূরেই পুলিশ ফাঁড়ি। কিন্তু প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি জমি দখল করে মাদকদ্রব্য বিক্রি হত বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষককে চরম হেনস্থা করলেন অভিযুক্তরা। তাঁর মুখের সামনে গাঁজার প্যাকেট ধরে খাওয়ার জন্য জোর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে পড়ুয়ারা স্কুলের বাইরে পোস্টার সাঁটল বুধবার। যা ঘিরে উত্তেজনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ-২ ব্লকের বুড়ুল হাই স্কুলে।

Advertisement

পড়ুয়া এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, বজবজ-২ ব্লকের বুড়ুলে পঞ্চায়েত এবং পুলিশ ফাঁড়ির ঢিলছোড়া দূরত্বে সরকারি স্কুলের জমি দখল করে মাদক কারবার চলছিল। বেশ কিছু দিন ধরে সেখানে মদ-গাঁজার অবৈধ ব্যবসা চলছিল। নেশার ঠেক থেকে স্কুলের শিক্ষিকা এবং ছাত্রীদের উদ্দেশে অশ্লীল ইঙ্গিত করা হত। উত্তরোত্তর এই সব উপদ্রব বাড়তে দেখে ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক তুষারকান্তি মণ্ডল এর প্রতিবাদ করেন। তাতেই শুরু হয় গন্ডগোল। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, জনৈক শঙ্কর নস্কর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা জমি দখল করে অবৈধ ব্যবসার বহর আরও বাড়াচ্ছিলেন। স্কুলের পাশে আর একটি চালাঘর বাঁধবার চেষ্টা করছিলেন। তখন স্থানীয় প্রশাসন এবং অভিভাবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেই অস্থায়ী দোকানঘর তৈরি রুখে দেন তুষারবাবু। কিন্তু, তার পর থেকে ‘গাঁজা ব্যবসায়ী’ শঙ্কর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা স্কুলের পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, সবাইকে নিয়মিত হুমকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। স্কুলের পক্ষ থেকে লিখিত ভাবে এ নিয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে টিফিনের সময় প্রধানশিক্ষক স্কুলের বাইরে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ,তখন শঙ্কর এবং তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্য বাঁশের লাঠি নিয়ে প্রধানশিক্ষকের উপর চড়াও হন। প্রধানশিক্ষকের মুখে গাঁজার প্যাকেট ঠুসে ধরে বলা হয় খাওয়ার জন্য। স্থানীয় কয়েক জন ব্যক্তি তখন ছুটে এসেছিলেন। তাঁদের বাধায় শঙ্কর তাঁর দলবল নিয়ে চলে যান। এর মধ্যে স্কুলের পক্ষ থেকে পুনরায় প্রশাসনে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু স্কুল ছুটির পরে বাড়ি ফেরার সময়ে পুলিশের সামনেই প্রধানশিক্ষকের উপর বাঁশ-লাঠি নিয়ে পুনরায় ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্তেরা। ওই সময় উপস্থিত পড়ুয়ারা সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ করে। নেশার ঠেকটি তারা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। কিন্তু বুধবারও ওই ঘটনার রেশ চলছে। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রীরা। পড়ুয়াদের দাবি, দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা না হলে তারা রাস্তা অবরোধ করবে।

এই ঘটনায় বুড়ুল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের যুক্তি, ‘‘দোকানটি বামফ্রন্ট আমলে করা হয়েছিল। কাদের ইন্ধনে করা হয়েছিল, তা জানা নেই। নতুন করে অস্থায়ী যে দোকানটি নির্মাণ করা হচ্ছিল, সেই দোকানটি ভাঙার বিষয়ে থানা এবং স্কুলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে।’’ প্রধানশিক্ষককে হেনস্থার কথা স্বীকার করে নিয়ে উপপ্রধান বলেন, ‘‘যা হয়েছে, তা দুঃখজনক। নতুন দোকানটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement