সন্দেশখালিকাণ্ডে এ বার অভিযোগ দায়ের হল আক্রান্ত ইডির বিরুদ্ধেই। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিকাণ্ডে এ বার অভিযোগ দায়ের হল আক্রান্ত ইডির বিরুদ্ধেই। ন্যাজাট থানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, সন্দেশখালির ঘটনায় মোট তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি খোদ ইডির বিরুদ্ধে। সন্দেশখালির যে তৃণমূল নেতার বাড়িতে ইডি অভিযানে গিয়েছিল, সেই শাহজাহান শেখের বাড়ির এক কর্মচারী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন। শাহজাহানের ওই কর্মচারীর অভিযোগ, কোনও বৈধ তল্লাশি পরোয়ানা ছাড়া তৃণমূল নেতার বাড়িতে এসে তালা ভেঙেছেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগও দায়ের করেছেন শাহজাহানের কর্মচারী। ন্যাজাট থানায় সেই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
পাশাপাশি, ন্যাজাট থানায় আরও দু’টি এফআইআর হয়েছে। যার মধ্যে, একটি করেছে ইডি। পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইডির তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের কাছে ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিয়োও জমা দিয়েছে ইডি। অন্য দিকে, ঘটনাস্থল ঘুরে এসে পুলিশ একটি স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়ো মোটো) অভিযোগ দায়ের করেছে। প্রতিটি অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে খবর। পুরো বিষয়টি বিশদে খতিয়ে দেখতে পুলিশ তদন্তও শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছে ইডিকে। উন্মত্ত জনতার হাতে মারধর খেয়ে তিন জন ইডি আধিকারিক ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি। সেই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। রেশন বণ্টন নিয়ে দুর্নীতি মামলার সূত্র ধরে শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে অভিযানে গিয়েছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কথায়, তৃণমূল নেতার বাড়ির দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। অনেক ক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করে কারও সাড়া পাওয়া যায়নি। অথচ সেই সময় শাহজাহানের মোবাইলের অবস্থান পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি নিজের বাড়িতেই রয়েছেন। এর পর কিছুটা নিরুপায় হয়েই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে শাহজাহানের বাড়ির দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দাবি, ঠিক সেই সময়েই প্রায় ৮০০-১০০০ সশস্ত্র গ্রামবাসী তাঁদের ঘিরে ধরেন। এঁদের কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে পাথর কারও হাতে ইট ছিল। সে সব নিয়ে ঘটনাস্থলেই ইডির উপর চড়াও হন তাঁরা। জনরোষের মুখে পড়তে হয় ইডি আধিকারিকদের। ইট-পাটকেল, লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের দিকে তেড়ে আসেন স্থানীয় এবং তৃণমূল নেতা শাহজাহানের অনুগামীরা। প্রাণ বাঁচাতে ঘটনাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা। তবে উন্মত্ত জনতার মারের চোটে তিন জন ইডি অফিসার আহত হন। তার মধ্যে এক জন উচ্চপদস্থ কর্তার মাথা ফেটেছে। মাথায় পাঁচ-ছ’টি সেলাই পড়েছে। তাঁরা তিন জনেই সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই সন্দেশখালিকাণ্ডে এ বার আক্রান্ত ইডির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল।