(বাঁ দিক থেকে) তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ এবং শঙ্কর আঢ্য। —ফাইল চিত্র।
একই জেলার দুই জায়গা। দূরত্ব মোটামুটি ১০০ কিলোমিটার। তবে ‘মডেল’ এক। রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে সন্দেশখালিতে গিয়ে মার খান ইডির আধিকারিকেরা। গাড়ি আটকানোর চেষ্টা হয় তাঁদের। অন্য দিকে, বনগাঁতেও একই মামলায় প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতারের সময় ‘জনতা’র ক্ষোভের মুখে পড়ে ইডি। সন্দেশখালির মতো বনগাঁতেও ইডিকে সামনে থেকে বাধা দেন মহিলারা। শঙ্করকে গাড়িতে তোলার সময় একটা থান ইট গিয়ে পড়ে ইডির গাড়িতে। সেই আক্রমণে ইডির গাড়ির কাচ ভেঙেছে কি না, মধ্যরাতের অন্ধকারে পরিষ্কার নয়। তবে সন্দেশখালি এবং বনগাঁ, তদন্তকারীদের বাধা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল একই। পার্থক্য একটাই। সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ এখনও বেপাত্তা। বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর গ্রেফতার হয়েছেন। এবং তিনি তদন্তকারীদের সাহায্য করবেন বলেও জানিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকেরা পৌঁছনোর আগেই ঘিরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তার মধ্যে তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁকে ডাকাডাকি করেন ইডি আধিকারিকেরা। ভিতর থেকে সাড়াশব্দ না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা হয়। ঠিক সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ। সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। এর পর ইডি আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন শাহজাহানের অনুগামীরা। ভাঙচুর চলে গাড়িতে। সেই সময়েই তিন ইডি আধিকারিক জখম হন। বর্তমানে তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্য দিকে, রেশন দুর্নীতি মামলায় টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর জ্যোতিপ্রিয়ের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শঙ্করকে যখন ইডি গ্রেফতার করে তখন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা। ওই মধ্যরাতেও খানিক বাধার মুখে পড়েন ইডির আধিকারিকেরা। তদন্তকারীদের উদ্দেশে গালিগালাজ করা হয়। সন্দেশখালির মতো সেখানেও ইডিকে আটকানোর চেষ্টা করেন মহিলারা। পিছনে ছিলেন বেশ কয়েক জন পুরুষ। ইট-পাটকেল ছোড়া হয় ইডি আধিকারিকদের গাড়িতে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জও করে বলে খবর। শেষমেশ অবশ্য শঙ্করকে নিয়ে ইডির গাড়ি চলে যায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে।
শনিবার সকালে জোকা ইএসআই হাসপাতালে শঙ্করের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়। সকালেই তাঁকে আদালতে তোলা হতে পারে। অন্য দিকে, শাহজাহান এখনও অধরা।