তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলরকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ‘প্রত্যাখ্যাত’ হয়েছেন দলেরই যুবনেতা। তা নিয়ে শুক্রবার থেকে শোরগোল এলাকায়। এ নিয়েই উভয়সঙ্কটে পড়েছেন রাজপুর-সোনারপুরের পুরপ্রধান পল্লব দাস। অন্য দিকে, এমন কোনও অভিযোগই তাঁর কানে পৌঁছয়নি বলে জানাচ্ছেন যাদবপুর-ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া হালদারের অভিযোগ, তাঁকে বিয়ে করার জন্য জোর করছেন এলাকার তৃণমূল যুবনেতা তথা পুরসভার প্রাক্তন কো-অর্ডিনেটর প্রতীক দে। এমনকি, তাঁর নামে এলাকায় তোলাবাজি করেছেন। তাঁর বাড়িতে দলবল নিয়ে তাণ্ডব করেছেন প্রতীক। পাল্টা প্রতীকের দাবি, তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন কাউন্সিলর। তাঁদের সম্পর্ক অস্বীকার করে এখন কলকাতা পুলিশের আধিকারিকের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন পাপিয়া। আর তিনি কাউন্সিলর হিসাবে কোনও কাজ করছেন না বলে অভিযোগ প্রতীকের।
এই শোরগোলের মধ্যে পাপিয়া জানান, তিনি যুবনেতার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছেন। দলীয় নেতৃত্বকেও বলেছেন। কিন্তু ভয় এবং আতঙ্কে বাড়ির বাইরে যেতে পারছেন না। তাঁর উদ্দেশে কটূক্তি উড়ে আসছে। ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘এখন এমনই পরিস্থিতি যে, আমি বাড়ির বাইরে বেরোলেই বলছে যে, কারও না কারও সঙ্গে হানিমুন করে আসছি। আর বাড়িতে থাকলে বলছে, কারও সঙ্গে আমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।’’ তৃণমূল কাউন্সিলরের আরও অভিযোগ, তাঁকে ওয়ার্ড বসতে দেওয়া হচ্ছে না। বিষয়টি তিনি পুরপ্রধানকেও জানিয়েছেন।
কিন্তু কাউন্সিলরকে হুমকির বিষয়টি পুরসভা জানেই না। সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লবের কথায়, ‘‘পুর পরিষেবা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে আমরা তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’ বস্তুত, প্রতীকের হাত ধরেই ধীরে ধীরে রাজনীতিতেও আসেন পাপিয়া। এলাকায় দু’জনেই পরিচিত মুখ। তবে এই বিষয়টিকে ব্যক্তিগত হিসাবে দেখছেন পুরপ্রধান। তাঁকে কিছুটা বিরক্তও দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ফোন করেছিল (পাপিয়া)। আমি দেখা করার কথা বলেছি। কিন্তু দেখা করেনি। ওর বাড়ি থেকে বলল, অসুস্থ। সুস্থ হলে আমি আসতে বলেছি।’’ পুর চেয়ারম্যানের সংযোজন, ‘‘পুর পরিষেবা বিঘ্নিত হলে আমি ব্যবস্থা নিতাম। ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করব না।’’ কিন্তু ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরমাতা পাপিয়া যে অভিযোগ করছেন, তিনি ওয়ার্ড অফিসে বসতে পারছেন না? প্রশ্নে পুরসভার চেয়ারম্যানের জবাব, ‘‘ওয়ার্ড অফিস তো খোলাই আছে। হয়তো একটা-দুটো দিন বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন তো ‘দুয়ারে সরকার’-এর পরিষেবা চলছে।’’
অন্য দিকে, প্রতীক বলছেন, দল তদন্ত করতে চাইলে তিনি প্রস্তুত। দলীয় নেতৃত্ব চাইলেই বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করতে পারেন।