Rajpur Sonarpur Municipality

তৃণমূল কাউন্সিলরকে বিয়ে করতে চেয়ে দলেরই যুব নেতার ‘তাণ্ডব’! সোনারপুরে অভিযোগ ঘিরে হুলস্থুল

রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া হালদারের অভিযোগ, তাঁকে অনেক দিন ধরে বিরক্ত করছেন যুব তৃণমূলের নেতা প্রতীক দে। অভিযোগ, তাঁর নাম করে তোলাবাজিও করেছেন প্রতীক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সোনারপুর শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:২৯
TMC councilor Papiya Haldar

তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার। —নিজস্ব চিত্র।

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তৃণমূল কাউন্সিলরকে হুমকি দেওয়া এবং হেনস্থার অভিযোগ উঠল যুব তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। ওই নেতার বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় অভিযোগ করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলরের দাদা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অন্য দিকে, কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পাল্টা ‘কথা না রাখার’ অভিযোগ করছেন অভিযুক্ত।

Advertisement

রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পাপিয়া হালদারের অভিযোগ, তাঁকে অনেক দিন ধরে বিরক্ত করছেন যুব তৃণমূলের নেতা প্রতীক দে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘২০২০ সালে করোনা পরবর্তী সময় থেকে প্রতীক এবং আরও বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতা অসাধু কাজে যুক্ত হন। এবং আমাকে তাঁদের শিখণ্ডি হিসাবে ব্যবহার করা শুরু করেন।’’ কাউন্সিলরের অভিযোগ, তাঁর নাম করে ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছে। বিভিন্ন খাসজমি দখল এবং বিক্রিতে তাঁর নাম জড়ানো হয়েছে। তার পর প্রতীক তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। পাপিয়ার কথায়, ‘‘প্রতীক আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং আমি তা প্রত্যাখ্যান করি। কিন্তু তার পর থেকে উনি আমাকে নানা ভাবে অপদস্থ করতে থাকেন।’’ কাউন্সিলরের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে মত্ত অবস্থায় লোকজন নিয়ে ঢুকে গালাগালি এবং খারাপ ব্যবহার করা হয়। পাপিয়ার অভিযোগ, ক্রমাগত তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে। গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে হামলা হচ্ছে। সেই সমস্ত প্রমাণ তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি পাপিয়ার এ-ও অভিযোগ, ‘‘আমাকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। সেটা আমি প্রত্যাখ্যান করি। সেই প্রমাণ আমার কাছে আছে।’’ কাউন্সিলরের সংযোজন, ‘‘দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী যেখানে নারী ক্ষমতায়নের উপর জোর দিচ্ছেন, তখন প্রতীকের মতো নেতারা মহিলাদের অপদস্থ করছেন। এটা দেখা প্রয়োজন।’’

অভিযুক্ত প্রতীকের পাল্টা দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলর পাপিয়া কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘উনি দামি গাড়ি চড়ছেন, উইক এন্ডে (সপ্তাহান্তে) পার্টি করছেন। কিন্তু ওয়ার্ডের কোনও কাজ করছেন না। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মী এবং সমর্থকেরা।’’ যুব নেতার অভিযোগ, ‘‘কাউন্সিলর সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

এই ঘটনায় কর্মী এবং সমর্থকেরা আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছেন। একাংশ যেমন প্রতীকের শাস্তির দাবি করছেন, তেমনই আর এক অংশের দাবি, প্রতীককে দেখেই পাপিয়াকে ভোটে জিতিয়েছিলেন তাঁরা। কাউন্সিলর পদ থেকে পাপিয়ার পদত্যাগ দাবি করেছেন তৃণমূলের একাংশ কর্মী-সমর্থকেরা। আর এ নিয়ে কটাক্ষের সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিরোধীরা। বিজেপি নেতা রঞ্জন বৈদ্য বলেন, ‘‘কাউন্সিলর নতুন কিছু করেননি। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। মানুষ সব দেখছেন। সোনারপুরের মানুষ এর জবাব দেবেন।’’

Advertisement
আরও পড়ুন