‘ছোট্’ আসলে একটি বিশেষ ধরনের নৌকা। বাণিজ্য এবং মৎস্য শিকার — মূলত এই দুই কাজেই ব্যবহৃত হত ‘ছোট্’। ৯ ফুট চওড়া এবং সাড়ে ৩ ফুট গভীর এই নৌকা সমুদ্রবক্ষে যে কোনও বিপদের সঙ্গে লড়তে পারত অনায়াসেই। আর এটাই ছিল ‘ছোট্’-এর বিশেষত্ব। স্বাধীনোত্তর ভারতেও মাঝিরা সমুদ্রে মাছ ধরতে এই বিশেষ ধরনের নৌকা ব্যবহার করতেন। তবে কালের নিয়মে অতলে তলিয়েছে ‘ছোট্’।
এখন আর ‘ছোট্’ তৈরি হয় না। আর নতুন করে ‘ছোট্’ তৈরি না হওয়ার কারণে হারাতে বসেছে শতাব্দী প্রাচীন নৌকা তৈরির শিল্পও। অবলুপ্তির পথ থেকে প্রাচীন শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করলেন নৃতত্ত্ববিদ তথা নৌকা বিশারদ স্বরূপ ভট্টাচার্য। ব্রিটেনের ‘এনডেনজার্ড মেটেরিয়াল নলেজ প্রজেক্ট’-এর সৌজন্যে হাওড়ার শ্যামপুর ২ ব্লকের ডিহিমণ্ডল ঘাটে এই ‘ছোট্’ তৈরি করা হল। সময় লাগল একমাস। নৌকার কারিগর হিসেবে কাজ করলেন পঞ্চানন মণ্ডল, তাঁর ছেলে অমল-সহ আরও অনেকে। খরচ হল আনুমানিক ৭ লক্ষ টাকা। বুধবার সেই নৌকা নামল রূপনারায়ণে। সপ্তাহখানেকের ‘ট্রায়াল রান’, সব ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই বাংলার তৈরি ‘ছোট্’ চলে যাবে গুজরাতে। সেখানে জাতীয় জাদুঘরে স্থান পাবে শতাব্দী প্রাচীন শিল্পকলা।
১০ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু হয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ভাবে নৌকা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে ৯ নভেম্বর। ১০ তারিখ সকালে পুজোপাঠের পর নদীর জলে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে নৌকা। এই গোটা প্রক্রিয়াই ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে। যা সংরক্ষিত থাকবে লন্ডনের আর্কাইভে।