Honeymoon Destination

পাহাড়, জঙ্গল, অবাধ বনভূমি আর মধুচন্দ্রিমা! ঠিকানা হতেই পারে আসানবনি

মধুচন্দ্রিমা যাপনের জন্য যে খরচা করে সব সময় খুব দূরে কোথাও যেতে হবে তার কোনও মানে নেই। মনের মিল আর মনোরম, নির্জন পরিবেশ থাকলেই হল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:২৮
ঝাড়খণ্ড রাজ্যে দলমা পাহাড়ের কোলে ছোট্ট একটি শহর আসানবনি।

ঝাড়খণ্ড রাজ্যে দলমা পাহাড়ের কোলে ছোট্ট একটি শহর আসানবনি। ছবি- সংগৃহীত

বিয়ে নিয়ে নানা রকম পরিকল্পনা আগে থেকেই করা ছিল প্রান্তিকের। সে সব করতে গিয়ে খরচ হয়েছে ভালই। কিন্তু বিয়ের পরে মধুচন্দ্রিমা বাজেটে টান পড়েছে। বিয়ের পর পাহাড়ে ঘুরতে যেতে চায় বলে জানিয়েছিল ঈশানি। কিন্তু প্রান্তিকের পছন্দ জঙ্গল। বিয়ের আগে বহু বার দার্জিলিং গিয়েছে বলে, সেখানে আর যেতে চায় না। তাই বৌভাতের পরের দিন থেকেই প্রান্তিক আকাশ-পাতাল খুঁড়ে এমন জায়গা খুঁজতে শুরু করেছে যেখানে পাহাড় থাকবে, আবার জঙ্গলও। আরে, এমন একটি জায়গা তো রাজ্যের পাশেই আছে। সাধ্যের মধ্যে স্বাদপূরণের মুশকিল আসান ঝাড়খণ্ডের ‘আসানবনি’।

Advertisement

ঝাড়খণ্ড রাজ্যে দলমা পাহাড়ের কোলে ছোট্ট একটি শহর আসানবনি। আবার শহর বললেও ভুল হয়। পাহাড় কেটে তৈরি জাতীয় সড়কের পাশে আসানবনি একটি জনপদ। গরম ছাড়া বছরের যে কোনও সময়েই আসা যায়। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, মনোরম পরিবেশ কর্মব্যস্ত জীবনে দু’দণ্ড শান্তির ঠিকানা হয়ে উঠতেই পারে। ভোরবেলা যদি ঘুম থেকে উঠতে পারেন, তবে পাহাড়ের কোলে সূর্যোদয়ের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভালই লাগবে। আদিবাসী গ্রাম ঘুরে, সেখানকার সহজ জীবনযাপনের সঙ্গে একাত্ম হতে পারলে সে এক অন্য ‘নিজেকে’ খুঁজে পাবেন এখানেই। চোখজুড়ানো, মনোরম পরিবেশ, পাহাড়ের ধাপ কেটে বানানো সর্পিল মসৃণ রাস্তা ধরে, হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে প্রিয়জনের সঙ্গে হারিয়ে যেতেই পারেন।

দলমা পাহাড় ঘুরে একটু বিকেল বিকেল ঘুরে আসতে পারেন ডিমনা লেক থেকে।

দলমা পাহাড় ঘুরে একটু বিকেল বিকেল ঘুরে আসতে পারেন ডিমনা লেক থেকে। ছবি- সংগৃহীত

কী কী দেখবেন?

আসানবনি থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দলমা পাহাড়। সকালে জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন জঙ্গল ভ্রমণে। দলমা অভয়ারণ্যে হাতি এবং হরিণের সংখ্যা বেশি হলেও ভালুক বা চিতাবাঘের ভয়ও রয়েছে। জঙ্গলে প্রবেশ করতে গেলে আগে থেকে যাবতীয় নথি এবং পরিচয়পত্র জমা দিয়ে অনুমতি নিতে হয়।

দলমা পাহাড় ঘুরে একটু বিকেল বিকেল ঘুরে আসতে পারেন ডিমনা লেক থেকে। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই লেক স্থানীয়দের কাছে চড়ুইভাতির আদর্শ জায়গা। শীতে নানা জায়গা থেকে পরিযায়ী পাখিরা এসে ভিড় করে এখানে।

পরের দিন সকালে ঘুরে আসুন স্থানীয় জয়দা মন্দির, সাইবাবার মন্দির থেকে। বিকেলটা রাখুন চান্ডিল বাঁধের জন্য। আসানবনি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বাঁধে নৌকাবিহার উপভোগ করার মতো। তবে তার আগে যদি পাশের জাদুঘরটি থেকে ঘুরে আসতে পারেন তা হলে এই অঞ্চলটি সম্পর্কে অনেক পুরনো ইতিহাস জানতে পারবেন। নিজের গাড়ি না থাকলেও অসুবিধে নেই। যে হোটেলে থাকবেন, সেখানে বলে রাখলে তারাই গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবেন।

অভয়ারণ্যে প্রবেশের মূল পথ।

অভয়ারণ্যে প্রবেশের মূল পথ। ছবি- অঙ্কিতা দাশনিয়োগী।

কোথায় থাকবেন?

পাহাড়ের কোলে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য রিসর্ট, হোটেল। সারা দিন ঘুরে বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত হোটেলের বারান্দায় বসে থাকলেই সময় কেটে যাবে।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া থেকে টাটানগরগামী যে কোনও এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে নামতে হবে ওই স্টেশনেই। সময় লাগে ঘণ্টা চারেক মতো। সেখান থেকে গাড়িতে আসানবনি পৌঁছতে সময় লাগে আধ ঘণ্টার মতো।

এ ছাড়া সড়ক পথেও যেতে পারেন। এসপ্ল্যানেড থেকে প্রতি দিন জামসেদপুরের বাস ছাড়ে। সরকারি এবং বেসরকারি দু’রকম বাসই আছে। এ ছাড়া নিজের গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন। বম্বে রোড, খড়্গপুর হয়ে, জাতীয় সড়ক ১৬ এবং ১৮ ধরে টাটানগর পৌঁছতে সময় লাগে ছ’ঘণ্টার মতো।

আরও পড়ুন
Advertisement