গরমের ছুটিতে হোক পাহাড়ে ভ্রমণ। ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি দিনের ব্যস্ততার মাঝে মন শান্ত রাখতে মাঝেমাঝে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়া ভাল। একঘেয়ে জীবন থেকে বিরতি নিতে গরমের ছুটিতে সপরিবারে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? আর গরমে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা উঠলেই বাঙালির প্রথমেই মনে পড়ে দার্জিলিং কিংবা গ্যাংটকের কথা। শহুরে কোলাহল থেকে ছুটি নিয়ে আবার ভিড়ে মিশে গেলে খুব যে স্বস্তি পাবেন, তা কিন্তু নয়। তার চেয়ে একটু বাজেট বাড়িয়ে চলে যেতে পারেন নতুন কোনও জায়গায়। রইল তেমন কয়েকটি জায়গার হদিস।
কুর্গ
পশ্চিমঘাট পর্বতের ঢালে কোদাগু জেলায় পাহাড়ঘেরা জায়গার নাম কুর্গ। গরমের দিনেও এই জায়গার শীতল আমেজ সঙ্গে সবুজের আধিক্য এবং কাবিনী নদীর স্নিগ্ধতায় মন ভরে যাবে আপনার। কর্নাটকের এই মনোরম জায়গাটিতে রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, আঁকাবাঁকা পথ, বিরামহীন ছোট ছোট ঝর্না, একরের পর একর জমিতে কফি বাগান। শহুরে কোলাহলের বাইরে যেন এক টুকরো স্বর্গ। মিলবে রিভার রাফটিং, জ়িপলিং, ট্রেকিং ও কায়াকিংয়ের সুযোগও। এখানের ঘুরতে গিয়ে রাজাসিট পার্ক, অ্যাবি ঝর্না, ওমকারেশ্বর মন্দির, তালকাবেরী, নাগরহোল জাতীয় উদ্যান, দুবারে হাতি সংরক্ষালয় কিন্তু ঘুরে দেখতেই হবে।
শ্রীখোলা
হাতে খুব বেশি সময় না থাকলে এবং বাজেট কম হলে ঘুরে আসতে পারেন শ্রীখোলা। সান্দাকফু-ফালুটে ট্রেকিং করতে যেতে চাইলে পথেই পড়বে শ্রীখোলা। রিম্বিক থেকে খুব কাছে, মিনিট পনেরোর রাস্তা। প্রকৃতির সান্নিধ্যে এমন মনোরম পরিবেশে ছুটি কাটাতে মন্দ লাগবে না! এই জায়গায় গেলেই আপনাকে স্বাগত জানাবে শ্রীখোলা নদীর কলরব, নদীর উপরেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে দু’শো বছরের পুরনো ঝুলন্ত ব্রিজ। অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য আর তারই মাঝে ইতিউতি ছড়িয়ে কিছু কাঠের বাড়িঘর। বাড়িগুলি সুদৃশ্য কটেজের মতো দেখতে লাগে। সামনে ছোট ছোট ফুলের বাগান। নদীর ধারে গিয়ে কিছু ক্ষণ বসলে বিশুদ্ধ বাতাসে শরীর-মনের ক্লান্তি উধাও হবে। শ্রীখোলা গ্রামের মাঝেই রয়েছে একটি বৌদ্ধ মন্দির। সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানের পাদদেশে শ্রীখোলা গ্রামের অবস্থান। গ্রামের প্রান্তে রয়েছে বার্চ, পাইনের বন। গাড়ি ভাড়া করে শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং চলে যান। দার্জিলিং থেকে আর একটা গাড়ি ভাড়া করে ঘণ্টা ছয়েকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন শ্রীখোলা।
সোলং ভ্যালি
হিমাচল মানেই সিমলা, কুলু, মানালি নয়। মানালি থেকে লেহ-মানালি হাইওয়ে ধরে রোটাং পাস যাওয়ার পথে ১৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সোলাং ভ্যালি। হিমাচল প্রদেশের আকর্ষণীয় জায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রতল থেকে ৮ হাজার ৪০০ ফুট উঁচুতে এর অবস্থান। রোটাং পাস খোলা থাক বা না থাক, ফেরাবে না সোলাং ভ্যালি। সব সময়ে জমজমাট থাকে এই উপত্যকা। কুলু জেলার সোলাং ভ্যালি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য। পাহাড়ের চূড়া ছুঁয়ে ঘন জঙ্গলের মাথার উপর দিয়ে প্যারাগ্লাইডিং করে ডানা মেলে পাখির মতো ওড়ার মজাই আলাদা! এ ছাড়াও রয়েছে ট্রেকিং, ক্যাম্পিং করার সুযোগ।