Poila Baisakh 2024

নববর্ষের শাড়ি কেনা এখনও বাকি? শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার আগে দেখে নিন কী বলছে এ বছরের ‘ট্রেন্ড’

বৈশাখের সাজ হতে হবে মরসুমের সঙ্গে মানানসই। কেমন হবে সেই শাড়ি? চোখে পড়বে, কিন্তু জমকালো হবে না। বৈশাখী আমেজ থাকবে তাতে। আবার থাকবে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়াও। চিরাচরিত সুতির শাড়ি যতই পছন্দের হোক, নতুন চমকও চায় আধুনিকার মন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৩২
বৈশাখী সাজে থাকুক আরামের ছোঁয়া!

বৈশাখী সাজে থাকুক আরামের ছোঁয়া! ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

আর পাঁচটা দিনে জিন্‌স-টপ, লেগিংস-কুর্তি পরতে স্বচ্ছন্দবোধ করলেও দুর্গাপুজোর অষ্টমী আর সরস্বতী পুজোর মতোই বাংলা বছরের শুরুর দিনটায় বাঙালি তরুণীদের নতুন শাড়ি পরা চাই-ই-চাই! তবে এ তো পুজোর শাড়ি নয়। পয়লা বৈশাখের সাজ হতে হবে মরসুমের সঙ্গে মানানসই। কেমন হবে সেই শাড়ি? চোখে পড়বে, কিন্তু জমকাল হবে না। বৈশাখী আমেজ থাকবে তাতে। আবার থাকবে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়াও। চিরাচরিত সুতির শাড়ি যতই পছন্দের হোক, নতুন চমকও চায় আধুনিকার মন।

Advertisement

সুতির শাড়িতে নয়া চমক আনার প্রয়াস চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। নতুন মোড়কে কখনও আসছে চিরাচরিত তাঁত-জামদানি। কখনও লিনেন-খাদির জমিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এক্কেবারে অচেনা কোনও ছাপা। নতুন বছরের প্রথম দিনটায় পরার জন্য কেমন শাড়ি পছন্দ করেন এ কালের তরুণীরা? এ বছরের পয়লা বৈশাখের ট্রেন্ড নিয়ে কী বলছেন শহরের পোশাকশিল্পীরা?

আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করল পোশাকশিল্পী সন্দীপ জয়েসওয়ালের সঙ্গে। সন্দীব বলেন, ‘‘আমার কাছে এ বারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে মলমল শাড়ির। প্যাস্টেল শেডের মলমল শা়ড়ির উপর সুতো দিয়ে সামান্য নকশা করা, ক্রুসের বর্ডার সঙ্গে ডিজ়াইনার ব্লাউজ— এমন কম্বিনেশনই বেশি খোঁজ করছে তরুণীরা। এই শাড়িগুলি খুব যে টেকসই হবে তা কিন্তু নয়, তবুও তাঁদের পছন্দ মলমলই। তাদের মতে এক শাড়ি তারা দু’বার পরে না, তাই গরমে পরে আরাম হবে সঙ্গে স্টাইল করাও হবে এমন শাড়িই তাদের চাই।’’

পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়ের মতও খানিকটা সে রকমই। অভিষেক বলেন, ‘‘সত্যি বলতে গরমে নরম শাড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আগে তরুণীরা শিফন, জর্জেটের মতো শাড়ি পছন্দ করলেও এখন কিন্তু তারা সুতির হ্যান্ডলুম শাড়ির দিকেই বেশি ঝুকছে।’’

আপনারও কি এই গরমে নরম শাড়ি পরার শখ হয়েছে? বাজারে যাওয়ার আগে দেখে নিন পছন্দের তালিকায় কোন কোন শাড়ি রাখতে পারেন।

কটন ইক্কত: গরমের সময়ে সুতির শাড়ির চাহিদাই বাজারে সবচেয়ে বেশি। সুতির মধ্যেও এ বার তরুণীদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে কটন ইক্কত। ওড়িশার এই শাড়ির বিক্রি এ বছর কলকাতার বাজারগুলিতে বেশ বেড়েছে। কেবল বয়স্করাই নয়, তরুণীরাও পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে পরার জন্য ইক্কতের দিকে ঝুঁকছেন। তবে ইক্কত মানেই সাদা, কালো, ধূসর কিংবা হালকা রং নয়, এ বছর বাজারে রংচঙে ইক্কতের রমরমা। হালকা রঙের তুলনায় সবুজ, হলুদ, টারকোয়িশ ব্লুয়ের মতো রংগুলির নরম সুতির কাপড়ে বোনা ইক্কতের চাহিদা বেশি। এ ধরনের শাড়ির দাম ২০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে, তবে চৈত্র সেলের বাজারে দরদামের সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।

ব্লক প্রিন্টেড খাদি: হাতে করা ছাপা থেকে সাবেক স্বাদের বেগমপুরি শাড়ি, এ ব‌ছর ‘ট্রেন্ডিং’-এ রয়েছে খাদির রকমারি ডিজ়াইন। বৈশাখের পার্বণী সাজের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ডিজ়াইনার বুটিকগুলিতে খাদির উপরে হরেক কায়দার ব্লক প্রিন্ট এ বারের গরমের ফ্যাশনে দারুণ ‘ইন’। একরঙা খাদির শাড়িতে কোথাও কলকাতার ট্যাক্সির ব্লক প্রিন্ট কিংবা বসন্তের পলাশ, বোগেনভিলিয়ার মতো ফুলেল ব্লক প্রিন্ট করা শাড়ি কিনে দেখতে পারেন এ বছর। প্রিন্টেড খাদির সঙ্গে পিঠখোলা হাতাকাটা ব্লাউজ় আর অক্সিডাইজ় গয়না, ব্যস্, বৈশাখী সাজ হবে একেবারে নজরকাড়া। এই ধরনের শাড়ির দাম পড়বে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে।

মসলিন জামদানি: সনাতনী ঢাকাই জামদানির বদলে যদি একটু আধুনিক ধাঁচের শাড়ি পরতে চান, তা হলে বেছে নিতেই পারেন মসলিন জামদানি। গরমকালের জন্য আদর্শ। তবে মসলিনের নাম শুনেই মনে হতে পারে, সে তো অনেক টাকার ব্যাপার। আসল বাংলাদেশি ঢাকাই মসলিনের দাম শুরু প্রায় ১৫০০০ টাকা থেকে। তবে এ বছর বাজারে স্বল্প দামের ঢাকাই মসলিনের ছড়াছড়ি। ২০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন জামদানির কারুকাজ করা মসলিন শাড়ি! দাম অনুযায়ী কাপড়ের গুণমানও বেশ ভাল, সেই শাড়ি পরলে কিন্তু মোটেই ফুলে থাকবে না। আকাশি, গোলাপি, হলুদ, সাদা— যে রং খুঁজবেন সেটাই পেয়ে যাবেন বাজারে।

কলমকারি, বাগড়ু প্রিন্ট, ইন্ডিগো কটন: অফিস হোক কিংবা কারও বাড়িতে আমন্ত্রণ— এই গরমে শাড়ি পরতে হলে কিন্তু কলমকারি, বাগড়ু কিংবা ইন্ডিগো প্রিন্টেড শাড়ি ইদানীং বেশ পছন্দ করছেন তরুণীরা। পয়লা বৈশাখের জন্য শাড়ির বাজেট ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা হলে কিন্তু এই ধরনের শাড়ি চোখ বন্ধ করে কিনে ফেলতে পারেন। অনলাইন স্টোরগুলিতে দাম খানিকটা বেশি নিলেও গড়িয়াহাট, দক্ষিণাপনের বাজারে এই শাড়ি ৮০০- ৯০০ টাকাতেও পেয়ে যাবেন। সঙ্গে একটা ডিজ়াইনার সুতির ব্লাউজ় পরে নিলেই কেল্লাফতে!

সিকো গাদোয়াল: এই শাড়িতে সিল্ক ও কটন দু’রকমই সুতো মেশানো থাকে। দাম খুব বেশি না হলেও কিন্তু তা দেখে বোঝা যায় না। ১০০০ টাকার মধ্যে ভাল শাড়ি কিনতে হলে সিকো গাদোয়ালও রাখতে পারেন পছন্দের তালিকায়। বড়বাজারে সব দোকানেই এই শাড়ি পেয়ে যাবেন। দাম ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকার মধ্যে। কলেজ স্ট্রিটের প্রিয় গোপাল বিষয়ী, গড়িয়াহাটে ভোজরাজ, ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়, শাড়িঘর, ট্রেডার্স অ্যাসেম্বলিতে ঢুঁ মারলে ৯৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যেই এই শাড়ি পেয়ে যাবেন।

আরও পড়ুন
Advertisement