Marble Rock Jabalpur

প্রবল গর্জনে ঝাঁপিয়ে পড়া ধুঁয়াধর আর রঙিন মার্বেলের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষা করছে জবলপুর

ধুঁয়াধর ও মার্বেল রকের অনুপম সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঘুরে আসুন মধ্যপ্রদেশের জবলপুর থেকে। এই শহরে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৪ ১১:০১
মধ্যপ্রদেশের  ধুঁয়াধর জলপ্রপাত।

মধ্যপ্রদেশের ধুঁয়াধর জলপ্রপাত। ছবি: সংগৃহীত।

মনে পড়ে শাহরুখ ও করিনা অভিনীত ‘অশোক’ ছবির গানটির দৃশ্যায়ন! রাত কা নশা আভি…

Advertisement

দু’পাশে খাড়া মার্বেল পাথরের দেওয়াল। তারই মাঝে নাচের দৃশ্য। সেই গানের দৃশ্যায়ন হয়েছিল মার্বেল রকে। মধ্যপ্রদেশের জবলপুর। এই শহরের আনাচকানাচে রয়েছে ইতিহাস, মন্দির, জলপ্রপাত। একই শহরের এত বৈচিত্রপূর্ণ ঘোরার জায়গা কম জায়গাতেই আছে।

মধ্যপ্রদেশের অন্যতম জনবহুল শহর জবলপুর। অনেকে বলেন, জব্বল আরবি শব্দ। এর অর্থ পাথর। আবার অনেকে বলেন, ঋষি জাবালি নাকি এই স্থানে এসে নর্মদার তীরে তপস্যা করেন। সেই জাবালির নাম থেকে এই স্থানের নাম হয়েছিল জবলপুর।

এখানেই রয়েছে রানি দুর্গাবতীর দুর্গ, ব্যালেন্সিং রক, চৌষট্টি যোগনি মন্দির। তবে জবলপুরে যে দুই জায়গা না দেখলেই নয়, তা হল ধুঁয়াধর জলপ্রপাত ও মার্বেল রক। ৩০ মিটার উঁচু থেকে প্রবল জলরাশি যখন পাথুরে জমিতে আছড়ে পড়ে, তৈরি হয় প্রবল বাষ্প। চারপাশ যেন মনে হয় ধোঁয়ায় ভরে উঠেছে। সেই থেকেই এর নাম ‘ধুঁয়াধর’। ‘ধুঁয়া’ হল বাষ্প আর ‘ধর’ হল প্রবাহ। বর্ষায় সেই রূপ হয়ে ওঠে অনবদ্য। তবে বর্ষা শেষেও কয়েকটি মাস সেই জলস্রোত পাওয়া যায়। পাখির চোখে জলপ্রপাতের রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় রোপওয়েতে।

ধুঁয়াধর যদি ভাল লাগার এক নাম হয়, তা হলে আর এক নাম অবশ্যই মার্বেল রক। ধুঁয়াধরের অদূরে ভেদাঘাটেই রয়েছে মার্বেল রক। ৮ কিমি বিস্তৃত গিরিখাতের সৌন্দর্য মনোগমুগ্ধকর। অশোক থেকে হৃত্বিকের মহেঞ্জোদরো, অসংখ্য হিন্দি ছবির শুটিং হয়েছে মার্বেল রক-এ। কোথাও দুধ সাদা পাথর, কোথাও তার রং গোলাপি, কোথাও আবার গায়ে লেগেছে হলুদের ছোঁয়া। মার্বেল পাথরের সেই খাতের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে নর্মদা নদী। বর্ষা ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ে নৌ বিহারের ব্যবস্থা থাকে। পড়ন্ত বিকেলে পাথরের উপর যখন সূর্যের সোনালি আলো এসে পড়ে, সে এক অনুপম রূপ। ভারতের অন্য কোথাও মার্বেলের এমন সৌন্দর্য দেখা যায় না।

তবে মার্বেল রকের অপূর্ব সৌন্দর্য সবচেয়ে ভাল উপভোগ করা যায় পূর্ণিমা রাতে। জ্যোৎস্না যখন সাদা মার্বেল পাথরে চুঁইয়ে পড়ে, তখন পাথরে পাথরে আলো প্রতিফলিত হয়ে এক অপার্থিব সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।

জবলপুরের মার্বেল রক।

জবলপুরের মার্বেল রক। ছবি: সংগৃহীত।

এই শহরেই রয়েছে মদন মহল, যা রানি দুর্গাবতীর দুর্গ নামেও পরিচিত। জঙ্গলঘেরা পথ দিয়ে চড়াই ভেঙে উঠলে দেখা মিলবে দুর্গের। চারপাশ শান্ত ও সুন্দর। দুর্গ থেকে শহরের আশপাশ দেখা যায়। পাহাড় চড়তে যে কষ্ট হয়, তা নিমেষে লাঘব হয়ে যাবে দুর্গের বাতায়ন দিয়ে আসা ঠান্ডা হাওয়ায়। দুর্গের পরিচ্ছন্ন পাথুরে মেঝেতে দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতে পারেন। জবলপুরের আর একটি দর্শনীয় স্থান চৌষট্টি যোগনি মন্দির। ভেদাঘাটে মার্বেল রকের কাছেই রয়েছে বহু প্রাচীন মন্দিরটি।

কোথায় থাকবেন?

জবলপুর বড় শহর। এখানে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। ভেদাঘাটে মার্বেল রকের কাছে সরকারি ও বেসরকারি থাকার জায়গাও পেয়ে যাবেন।

কী ভাবে যাবেন?

হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে জবলপুর যাওয়া যায়। শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস, হামসফর এক্সপ্রেস ছাড়াও কয়েকটি ট্রেন আছে। আকাশপথেও যেতে পারেন জবলপুর। এখানে রয়েছে বিমানবন্দর। সড়কপথেও জবলপুর যাওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement