পালামৌর পাহাড়ি অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর অঞ্চল হল নেতারহাট। ছবি- সংগৃহীত
শীত তো এসে গেল সূপর্ণা! এ বারের ছুটিতে কোথায় যাবেন ঠিক করেছেন? পাহাড়, জলপ্রপাত, জঙ্গল, অভয়ারণ্য সব কিছু একসঙ্গে পেতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ঝাড়খণ্ড থেকে। শাল, পিয়াল, মহুয়ায় ঘেরা রাস্তা দিয়ে যেতে হঠাৎই দেখা পেয়ে যেতে পারেন গজরাজের। যাঁরা পাখি পর্যবেক্ষক, তাঁদের জন্য এখানে রয়েছে ১৭৪ প্রজাতির ভিন্ রাজ্যের পাখি। ঝাড়খণ্ড মূলত খনি অঞ্চল। তবুও এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, সবুজের সমাহার আপনার মন ভরিয়ে দেবে।
ঝাড়খণ্ড গিয়ে কী কী দেখবেন?
১) রাঁচী
পাহাড়ের কোলে ছোট্ট শহর রাঁচী, ঝাড়খণ্ডের রাজধানীও। বিরসা মুণ্ডা চিড়িয়াখানা, রক গার্ডেন ছাড়াও রয়েছে দশম, হুড্রু, জোনহা জলপ্রপাত। রয়েছে পালামৌ অভয়ারণ্য। ঘুরে দেখতে ভুলবেন না কেচকি অভয়ারণ্য। এই অরণ্যেই পরিচালক সত্যজিৎ রায় তাঁর বিখ্যাত ছবি ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবির শুটিং করেছিলেন।
২) হাজারিবাগ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মনোরম জলবায়ু এবং নির্জনতাই এখানকার সম্পদ। হাজারিবাগ জাতীয় উদ্যানটি পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের কারণ। চাইলে এখানে নৌকাবিহারও করতে পারেন। এ ছাড়াও রয়েছে সতীর ৫১ পিঠের একটি পিঠ রাজারাপ্পা। সেখানে মা ছিন্নমস্তা পূজিত হন।
৩) নেতারহাট
পালামৌর পাহাড়ি অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর অঞ্চল হল নেতারহাট। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত বিষয়টির মধ্যে নতুনত্ব না থাকলেও পাহাড়, সমুদ্র, মালভূমি, মরুভূমি প্রত্যেকটি জায়গা থেকেই তার সৌন্দর্য, তার ব্যপ্তি কিন্তু আলাদা। নেতারহাটের বিশেষত্ব কিন্তু তার সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের জন্যই। এ ছাড়াও রয়েছে ম্যাগনোলিয়া ভিউ পয়েন্ট। রয়েছে কোয়েল নদী। সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘পালামৌ-এর পথে’ এবং বুদ্ধদেব গুহর লেখা ‘কোয়েলের কাছে’ বই দু’টি যদি আগে থেকে পড়ে ফেলতে পারেন, চেখের সামনে ছবির মতো ভেসে উঠবে।
কী করে যাবেন?
হাওড়া থেকে রাঁচী যাওয়ার অনেক ট্রেন আছে। শিয়ালদহ থেকেও ট্রেন ছাড়ে। আগের দিন রাতে ট্রেনে চেপে পরের দিন ভোরবেলা পৌঁছে যাওয়া যায় রাঁচী।
বিমানে গেলে নামতে হবে বিরসা মুণ্ডা বিমানবন্দরে।
রাস্তাও খুব সুন্দর। কলকাতা থেকে রাঁচীর দূরত্ব প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার। গাড়িতে কলকাতা থেকে রাঁচী যেতে সময় লাগে ১০ ঘণ্টা মতো।
কোথায় থাকবেন?
রাঁচী, হাজারিবাগে থাকার জন্য সরকারি, বেসরকারি বহু হোটেল আছে। তবে নেতারহাটে থাকার জায়গা বিশেষ নেই। তাই আগে থেকে সরকারি বন বাংলো বুক করে রাখতে পারেন। ভরা সময়ে হোটেল না পাওয়া গেলে রাঁচী থেকে ভোর ভোর বেরিয়ে ঘুরে, আবার হোটেলে ফিরে আসা যায়।