Orchha Fort

‘ভুলভুলাইয়া ৩’-এর ভূত মঞ্জুলিকার ডেরায় যেতে চান? কোথায় সেই স্থান, কী ভাবে যাবেন?

‘ভুলভুলাইয়া ৩’ দেখেছেন? বিশাল দুর্গটি দেখে ভয় হয়েছে না কৌতূহল? যাবেন নাকি সেখানে?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৭
ওরছার দুর্গ।

ওরছার দুর্গ। ছবি: সংগৃহীত।

দীপাবলিতে মুক্তি পেয়েছে ‘ভুলভুলাইয়া ৩’। ভৌতিক অথচ মজার এই ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে একটি পুরনো দুর্গ এবং ভূত মঞ্জুলিকাকে ঘিরে।

Advertisement

ছবির সিংহভাগ জুড়েই দেখা গিয়েছে যে প্রাসাদোপম দুর্গটি, সেখানেই কি যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে? তা হলে চলুন মধ্যপ্রদেশে। এই রাজ্যের নিওয়ারি জেলায় নিওয়ারি শহরের কাছেই রয়েছে একটি জনপদ, নাম ওরছা। সেখানেই আছে পুরনো দুর্গটি। পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে বেতয়া নদী।

ওরছা দুর্গ

ওরছার প্রথম রাজা রুদ্র প্রতাপ সিং ওরছার দুর্গ তৈরি করিয়েছিলেন। ১৫০১-১৫৩১ পর্যন্ত চলে এর প্রাথমিক নির্মাণকাজ। ছবিতেই দেখা গিয়েছে কত বড় জায়গা জুড়ে এটি ছড়িয়ে রয়েছে। দুর্গের ভিতরে রয়েছে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ, ঝোলানো বারান্দা। এখানেই রয়েছে চতুর্ভুজ মন্দির। সেটি নির্মাণ করিয়েছিলেন ওরছার রানি। ভিতরে রয়েছে রাজা মধুকর শাহ প্রতিষ্ঠিত রাজ মন্দির। তবে সে সবই তৈরি হয়েছে পরবর্তী সময়ে। এই দুর্গ এক সময়ে অধিকার করেছিল মোগলেরা।

মধ্যপ্রদেশের ওরছা দুর্গ।

মধ্যপ্রদেশের ওরছা দুর্গ। ছবি: সংগৃহীত।

বিশাল এলাকা জুড়ে দুর্গটি। তারই মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মহল। রয়েছে মন্দিরও। দুর্গের মূল প্রবেশদ্বারটি কাঠের। তাতে লাগানো রয়েছে লোহার মোটা কাঁটা। শোনা যায়, দুর্গ দখল করতে এলে রাজারা হাতির সাহায্যে মূল দরজা ভাঙার চেষ্টা করতেন। কাঁটা লাগানো হয়েছিল যাতে হাতি শুঁড়ে করে ধাক্কা দিতে গেলে নিজেই আহত হয়।

দুর্গের ভিতরে রয়েছে রাজা মহল, জাহাঙ্গির মহল, শিস মহল, বাগিচা, মন্দির।

রাজা মহল

নামেই বোঝা যায় এই মহল ছিল নৃপতিদের থাকার স্থান। এই অংশে ছিল রাজ দরবারও। রাজা মহলের বিভিন্ন স্থানে দেওয়ালে, ছাদে দেবদেবী, পশুপাখির মূর্তি, ম্যুরাল রয়েছে। রাজা মহলে চারটি অংশে বিভক্ত। প্রথমটি হল দেওয়ানি আম বা জনতার দরবার। মহলের উপরের অংশে থাকতেন রানিরা। এই অংশটির দেওয়াল এবং ছাদ, কাচ এবং রঙিন কারুকাজে সজ্জিত।

ভুলভুলাইয়া ৩-এর শুটিং হয়েছিল ওরছার দুর্গে।

ভুলভুলাইয়া ৩-এর শুটিং হয়েছিল ওরছার দুর্গে। ছবি: সংগৃহীত।

এই মহলের একটি অংশকেই পরে রামরাজা মন্দিরে রূপান্তরিত করা হয়। এই মন্দিরের আরাধ্য রাম। কথিত আছে, রানি স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির নির্মাণ করিয়েছিলেন। এখানে রাম রাজা হিসাবে পূজিত হন। সে কারণেই রাজার বাহিনী হিসাবে মোতায়েন থাকে পুলিশ। গান স্যালুটও দেওয়া হয় তাঁকে।

এখানে রয়েছে চতুর্ভুজ মন্দিরও। এই মন্দিরের আরাধ্য বিষ্ণু। এই মন্দিরের রয়েছে পাঁচটি শিখর।

জাহাঙ্গির মহল

চারতলা জাহাঙ্গির মহলে মোগল এবং রাজপুত স্থাপত্যরীতির মিশেল দেখা যায়। রয়েছে ঝোলানো বারান্দা। রাজা বীর সিং দেও এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। প্রাসাদের চার দিকে রয়েছে অগুনতি দরজা। মাঝে বড় প্রাঙ্গণ। ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ দেখে থাকলে এই স্থানটি চিনতে অসুবিধা হবে না। এই মহলের এক অংশ এখন সংগ্রহশালা।

ওরছা দুর্গের অংশবিশেষ।

ওরছা দুর্গের অংশবিশেষ। ছবি: সংগৃহীত।

শিস মহল

কাচের কারুকাজ করা এই মহলটির একাংশ এখন বিলাসবহুল হোটেল। রাজা উদয়িত সিং এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন।

ফুল বাগ

নদী তীরবর্তী দুর্গে রয়েছে সুন্দর বাগান। ভিতরে রয়েছে আটটি স্তম্ভের ‘প্যালেস প্যাভিলিয়ান’, ফোয়ারা। এই অংশটি বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে গরমের জন্য। প্রবল গরমেও যাতে কষ্ট না হয় সে জন্য সে ভাবেই নির্মাণকাজ হয়েছিল। ফোয়ারার জল পড়ে যাতে বৃষ্টি বলে মনে হয়, সে জন্য তৈরি করা হয়েছিল চন্দন কাটোরা।

প্রবেশ মূল্য: এই দুর্গে ভারতীয়দের প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।

কী ভাবে যাবেন?

ঝাঁসি জংশন রেল স্টেশন থেকে ওরছার দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। গোয়ালিয়র বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ১৪৩ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে চম্বল এক্সপ্রেস যায় ঝাঁসি। সেখান থেকে গাড়ি করে ওরছা দুর্গ ঘুরে নিতে পারেন।

আরও পড়ুন
Advertisement