দাপোলির সমুদ্রসৈকত। ছবি: সংগৃহীত।
পাহাড় ভালবাসেন না সমুদ্র? উত্তর যা-ই হোক না কেন, এ স্থানে মিলবে দুই-ই। উজাড় করা প্রকৃতি, সবুজের সমারোহ, ইতিহাস, সংস্কৃতি— একটি পর্যটনকেন্দ্রে গিয়ে পর্যটকেরা যা যা খোঁজেন তার সবই রয়েছে কোঙ্কনের এই সমুদ্রতীরে। একাধিক সাহিত্যিকের রচনায় ঠাঁই পাওয়া পর্যটনকেন্দ্রটির নাম দাপোলি।
কর্মসূত্রে কিংবা বেড়ানোর জন্য মুম্বই এলে লোকজন এলিফ্যান্টা কেভস, লোনাভালা, মহাবালেশ্বর বেছে নেন ঘোরার জন্য। চট করে কেউ দাপোলি যান না। অথচ সড়কপথে মুম্বই থেকে এর দূরত্ব ২৪০ কিলোমিটার, পুণে থেকে ১৮০ কিলোমিটার। মুম্বই থেকে ট্রেনে গেলে পৌঁছনো যায় ঘণ্টা চারেকেই। নিকটবর্তী রেলস্টেশন খেড়।
মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার দাপোলিতে ছুটি কাটাতে আসেন পর্যটকেরা। সবুজ অনুচ্চ পাহাড়, পাথুরে বালুকাবেলায় সমুদ্রের অবিরাম ঢেউ ভাঙার রূপ উপভোগে প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে আপনিও চলে আসতে পারেন এখানে। গুহা, মন্দির, দুর্গ, সমুদ্রসৈকত— ঘুরে বেড়ানোর জায়গার অভাব নেই এখানে।
লাদঘর সৈকত: হেলে পড়া নারকেল গাছ, পাহাড় এবং সমুদ্রের অপূর্ব মেলবন্ধন চোখে পড়ে লাদঘর সৈকতে। পরিচ্ছন্ন নির্জন সৈকতে রকমারি জলক্রীড়ারও সুযোগ রয়েছে। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চেপে যাওয়া যায় ডলফিনের কসরত দেখতেও। দাপোলিতে এলে সারাটা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায় লাদঘরে। তবে একটি নয়, মুরুদ, কার্দে, কেলসি-সহ একাধিক সৈকত রয়েছে এখানে।
আনজারলে: কোঙ্কন উপকূলের সাদা বালুরাশির এই সৈকতটি পর্যটকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। দাপোলি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে যোগ নদীর কাছেই এই সৈকত। গ্রামে পাহাড়ের মাথায় রয়েছে গণপতির মন্দির। ২৫০টি সিঁড়ি পেরিয়ে মন্দির পৌঁছলে দেখা যায় দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র এবং সবুজে ঘেরা সৈকতের রূপ।
সুবর্ণ দুর্গ: কোঙ্কন উপকূলে ছোট্ট গ্রাম হারনাই। তারই অদূরে সমুদ্রের উপর একটি দ্বীপে রয়েছে সুবর্ণ দুর্গ বা গোল্ডেন ফোর্ট। ছত্রপতি শিবাজি এই দুর্গটি তৈরি করিয়েছিলেন। এক সময় ব্রিটিশ এবং শত্রুদের প্রবেশ ঠেকাতে, আক্রমণ প্রতিহত করতে তা ব্যবহার করা হত। শোনা যায়, সুড়ঙ্গপথে বন্দরের সঙ্গে যুক্ত ছিল বিশাল দুর্গটি। তবে এখন সেই পথ নেই। প্রাচীন দুর্গে যাওয়ার জন্য নৌকাই ভরসা।
পনহালাকাজি গুহা: দাপোলির অদূরে মুম্বই থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে পাহাড়ের কোলে পানহালাকাজির প্রাচীন গুহা। শোনা যায় হিন্দু এবং বৌদ্ধদের প্রায় ৩০টি গুহা ছিল সেখানে। তবে কালের গর্ভে লুপ্ত হয়েছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি। ১০ নম্বর গুহায় মেলে বৌদ্ধ দেবী মহাচন্দ্রারোশনার মূর্তি। ১৯ নম্বর গুহায় রয়েছে শিবলিঙ্গ। ১৪ এবং ২৯ নম্বর গুহায় রয়েছে নাথ সম্প্রদায়ের দেবতাদের মূর্তি।
আনহাভারে: দাপোলি থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে রায়গড় জেলায় রয়েছে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ। স্নানের জন্য বাঁধানো চত্বরও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে এখানে।
এ ছাড়াও একাধিক মন্দির। ট্রেক করা যায় নিকটবর্তী জঙ্গলে।
থাকার জায়গা: একাধিক হোটেল, রিসর্ট, গাছবাড়ি রয়েছে দাপোলিতে থাকার জন্য।
কী ভাবে যাবেন?
নিকটবর্তী রেলস্টেশন খেড়। বিমানবন্দর রত্নগিরি। দাপোলি থেকে দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। মুম্বই-গোয়া ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসা যায় এই স্থানে। বাস পরিষেবাও রয়েছে।