চেনা-অচেনার পথে। ছবি:সংগৃহীত।
কেউ হাঁটেন সোজা পথে। কেউ আবার চলতি হাওয়ার পরিপন্থী। ভ্রমণপ্রেমী দলেও এমন কেউ কেউ থাকেন, যাঁরা চলতি হাওয়ায় গা ভাসিয়ে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা চান অজানাকে জানতে, অদেখাকে দেখতে। নতুন কিছু খুঁজে বার করাতেই যেন আনন্দ। আপনিও কি তেমন দলেই পড়েন? তা হলে ঘুরে দেখতে পারেন এ দেশেরই বিভিন্ন রাজ্যের স্বল্পচেনা কয়েকটি ঠিকানা।
লেটমসিয়ং, মেঘালয়
মেঘালয়ের আনাচকানাচে বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও লেটমসিয়ঙের নাম অনেকেই শোনেননি। পূর্ব খাসি পাহাড়ে রয়েছে ছবির মতো সাজানো গ্রামটি। ঢেউখেলানো পাহাড়, মেঘের আনাগোনা, অসংখ্য গুহা, ঝর্না নিয়ে নিজের মতো করেই সেজে উঠেছে লেটমসিয়ং। ইদানীং সেখানে কিছু উৎসাহী পর্যটকের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এখানকার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে পড়ে গার্ডেন অফ কেভস, হৃদয়ের আকারের পাথর। এই গ্রামে রয়েছে চুনাপাথরের একাধিক ছোট-বড় গুহা। জঙ্গলের মধ্যে সেই গুহার আশপাশেই দেখা মিলবে ঝর্নার। কোথাও আবার গুহার ছাদের ফাঁকা অংশ দিয়েই ঝরঝরিয়ে নামছে জল। এই গ্রামটিতে মাশরুমের চাষ হয়। তাই ছোটখাটো পর্যটন স্থলগুলি ঘোরার পাশাপাশি মাশরুম চাষের জায়গাগুলিও দেখতে পারেন। কিনতে পারেন এখানকার টাটকা মাশরুম।
কী ভাবে যাবেন?
গ্রামটি শিলং বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থতি। গুয়াহাটি থেকে ১৬০ কিলোমিটার। চেরাপুঞ্জির দিকে এগোলে মিলবে লেটমসিয়ং গ্রাম।
চেট্টিনাড প্যালেস
তামিলনাড়ুর কাড়াইকুদির কাছে রয়েছে সুবিশাল এক প্রাসাদ। এটি চেট্টিনাড বা কানাডুকথন প্যালেস নামে পরিচিত। চেট্টিনাড বা কাড়াইকুদি প্রাকৃতিক ভাবেও সুন্দর। তবে এই রাজকীয় প্রাসাদের স্থাপত্যশৈলী নজরকাড়া। তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার শিবগঙ্গা শহর থেকে স্থানটির দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। ১৯১২ সালে রাজা আন্নামালাই চেট্টিয়ার প্রাসাদোপম ভবনটি তৈরি করেন।
এই প্রাসাদে গেলে শিল্প, স্থাপত্য এবং ভাস্কর্যের অপূর্ব মেলবন্ধন এখানে নজরে আসবে। মার্বেল, কাচ, স্ফটিকের শিল্পকর্ম ফুটে উঠেছে মহলের আনাচকানাচে। কোথাও ভবন উন্মুক্ত, কোথাও আবার রাজকীয় সাজ। ভবনে চেট্টিয়ারদের পুজোর ঘর রয়েছে। পারিবারিক পুজো, বিয়েতে নতুন করে সেজে ওঠে ভবনটি। তবে এখন সেটি বিলাসবহুল হোটেল। যদি হোটেলে থাকার জন্য ঘর বুক করতে পারেন, তা হলে এই প্রাসাদ ঘুরে দেখা যাবে।
কী ভাবে যাবেন?
তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে চেট্টিনাডের দূরত্ব ৪০৭ কিলোমিটার। বেঙ্গালুরু থেকে দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার। বেঙ্গালুরু বা তামিলনাড়ুর যে কোনও বড় শহর থেকে চেট্টিনাড যেতে পারেন। এখানে একাধিক রাজকীয় প্রাসাদ রয়েছে। বেড়াতে গেলে অবশ্যই এখানকার স্থানীয় খাবার খেয়ে দেখবেন।
চালাকুড়ি, কেরল
ঝর্না, জলাধার, হ্রদ, চা-বাগান, সৈকত— সব কিছু নিয়েই কেরলের ত্রিশূর জেলার এই জনপদ। এখান থেকেই দেখে নিতে পারেন কেরলের অন্যতম আকর্ষণ আথিরাপল্লি জলপ্রপাত। ‘গুরু’-সহ একাধিক হিন্দি ছবির শুটিং হয়েছে আথিরাপল্লিতে। কাছেই রয়েছে ভাজহাচল জলপ্রপাত। এখান থেকে ঘুরে নেওয়া যায় থাম্বুরমুঝি জলাধার। চালাকুড়ির সাদা বালুরাশির মুনাক্কাল সৈকতও পর্যটকদের পছন্দের। কেরলের এই স্থান শান্ত, নিরিবিলি।
কী ভাবে যাবেন?
কেরলের শহর কোচি থেকে চালাকুড়ি ট্রেন চলাচল করে। সড়কপথে দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার। কেরলের রাজধানী তিরুঅনন্তপুরম থেকে চালাকুড়ির দূরত্ব ২৪৫ কিলোমিটার।