সূর্যাস্ত দেখতে চলুন রাজস্থানের মরভূমিতে।
দার্জিলিঙের টাইগার হিলের খ্যাতি সূর্যোদয় দেখার জন্য। শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার এক একটি শৃঙ্গে যখন ভোরের প্রথম রবিকিরণ এসে পড়ে, সেই রূপ হয়ে ওঠে ভাষাতীত। সেই সৌন্দর্যের টানেই ভোরবেলায় প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করে ভিড় জমান অগুনতি পর্যটক। তবে শুধু সূর্যোদয় নয়, সূর্যাস্ত দেখতেও এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পর্যটকেরা ছুটে যান। তেমন কোনও জায়গায় যাওয়া হয়নি? জেনে নিন কোথায় গেলে পড়ন্ত বিকেলের অস্তমিত সূর্যের রূপসৌন্দর্য আজীবন মনে রয়ে যাবে।
স্যাম স্যান্ড ডিউনস: রাজস্থানের দুর্গ, প্রাসাদের আকর্ষণ যতই থাকুক না কেন, ‘সোনার কেল্লার’ টান বাঙালির কাছে অমোঘ। রাজস্থানের জয়সলমের আরএখানকার পুরনো দুর্গকে পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে একদম অন্য ভাবে বাঙালি চিনেছিল। রাজস্থানের জয়সলমেরে শুটিং হয়েছিল ফেলুদার রহস্য রোমাঞ্চকর ছবি ‘সোনার কেল্লা’র। সেই শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে মরুভূমি। স্যাম স্যান্ড ডিউনসে ধু ধু মরুপ্রান্তরে উটের পিঠে চেপে যাওয়ার অভিজ্ঞতা যে কোনও পর্যটকের কাছে চিরস্মরণীয়। সেখান থেকেই দেখা যায় অস্তমিত সূর্য। গোধূলিবেলায় আকাশে রং ছড়িয়ে টুপ করে ডুব দেয় লাল টুকটুকে আগুনের বলয়। সূর্যকে দেখে তেমনটাই মনে হয়। সূর্যাস্তের পাশাপাশি জয়সলমেরে পুরনো দুর্গ, হাভেলি (প্রাসাদোপম অট্টালিকা)-সহ অনেক কিছুই দেখার আছে।
কী ভাবে যাবেন: জয়পুর কিংবা জোধপুর বিমানে গিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে জয়সলমের যেতে পারেন। হাওড়া থেকে জয়সলমের যাওয়ার ট্রেন আছে। ভারতের যে কোনও বড় শহর থেকে সড়কপথে জয়সলমের যাওয়া যায়।
রাধানগর বিচ: পাহাড়, ম্যানগ্রোভ, শুভ্র বালুতট। সামনে অতল সাগর। একঝলক দেখলে মনে হবে এ যেন কোনও শিল্পীর আঁকা ছবি। ভারতের অন্যতম সুন্দর সমুদ্রসৈকত আন্দামানের হ্যাভলক দ্বীপের রাধানগর বিচ। সেখানেই পড়ন্ত বিকেলের রূপসৌন্দর্য উপভোগে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকেরা। সমুদ্রসৈকতে দৃশ্যমান ঢেউখেলানো পাহাড় সারি। আকাশে হরেক রং ছড়িয়ে সেই পাহাড়ের আড়ালে ডুবে যায় সূর্য।
হ্যাভলকে থেকে ঘুরে নেওয়া যায় কালাপাথর বিচ, এলিফ্যান্টা বিচ। এখানে স্কুবা ডাইভিংয়ের মতো জলক্রীড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
কী ভাবে যাবেন: বিমানে পোর্টব্লেয়ার বিমানবন্দর। সেখান থেকে জলপথে আসতে হয় হ্যাভলকে।
ভারকালা বিচ: খাড়া পাহাড়, হেলে পড়া নারকেল গাছ, আর নীচে নীল জলরাশি সাদা ফেনা তুলে আছড়ে পড়ছে। সমুদ্রের এমন রূপ দর্শনের ইচ্ছে হলে বেছে নিতে পারেন কেরলের ভারকালা সমুদ্রসৈকত। এখান থেকে অস্তমিত সূর্যের সৌন্দর্য উপভোগের স্মৃতি আজীবন মনে রয়ে যাবে। প্রকৃতির অনিন্দ্যসুন্দর রূপে এখানে কয়েকটা দিন একেবারে নিজের মতো কাটিয়ে দেওয়ার পাশপাশি অবশ্যই এখানকার আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজের অভিজ্ঞতাও মনে থেকে যাবে।
ভারকালা সৈকতে প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেন। এখান থেকে বহু পুরনো জনার্দনস্বামী মন্দির, ওদোয়ম বিচ ঘুরে নিতে পারেন।
কী ভাবে যাবেন: বিমানে তিরুঅনন্তপুরম এসে গাড়িতে ভারকালা বিচ পৌঁছতে পারেন। ট্রেনেও তিরুঅনন্তপুরম আসা যায়। সড়কপথেও এই জেলা দেশের অন্য বড় শহরগুলির সঙ্গে যুক্ত।