কিরিয়সের ঘটনাকে ‘বোকার মতো কাজ’ বলে রায় দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট। —ফাইল চিত্র
তিনিই প্রাক্তন বান্ধবীকে নিগ্রহ করেছেন। স্বীকার করে নিলেন নিক কিরিয়স। কিন্তু তাঁর কোনও শাস্তি হল না। ২৭ বছরের অস্ট্রেলীয় টেনিস তারকার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল ক্যানবেরা কোর্টে। ২০২১ সালে কিরিয়স তাঁর প্রাক্তন বান্ধবী চিয়ারা পাসারিকে নর্দমায় ঠেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনাকে ‘বোকার মতো কাজ’ বলে রায় দিলেন ম্যাজিস্ট্রেট।
কিরিয়স মেনে নিয়েছেন, ২০২১ সালে তিনি এবং পাসারি গাড়ি করে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিলেন বান্ধবীকে। ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি সেই ঘটনা ঘটে। সেই সময় পুলিশের কাছে অভিযোগ করেননি পাসারি। তাঁদের সম্পর্ক পরে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সম্পর্ক ভেঙে যায়। তার পরেই কিরিয়সের নামে অভিযোগ করেন পাসারি।
এই প্রথম নয়। এর আগেও কিরিয়সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে গিয়েছিলেন অ্যানা পালুস নামে ইংল্যান্ডের এক টেনিসপ্রেমী। উইম্বলডন ফাইনালে ওই মহিলা টেনিসপ্রেমীর বিরুদ্ধে তাঁকে বিরক্ত করার অভিযোগ তুলেছিলেন অস্ট্রেলীয় টেনিস খেলোয়াড়। নোভাক জোকোভিচের বিরুদ্ধে উইম্বলডনের ফাইনাল খেলার সময় আম্পায়ারকে কিরিয়স বলেছিলেন, “সামনের সারিতে বসা এই মহিলাকে দেখে মনে হচ্ছে ৭০০ পেগ মদ্যপান করে খেলা দেখতে এসেছেন।” সেই অভিযোগের কারণে ওই মহিলাকে মাঠ থেকে কিছু ক্ষণের জন্য বার করে দেওয়া হয়। সেই মহিলাই আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন কিরিয়সকে। অ্যানার আইনজীবী ব্রেট উইলসন জানিয়েছিলেন, কিরিয়সের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন তাঁর মক্কেল।
বিতর্কে শুধু এক বার নয়, বার বার জড়িয়েছেন কিরিয়স। বছর চারেক আগে মেক্সিকোর আকাপুলকো ওপেনে খেলতে গিয়েছিলেন কিরিয়স। প্রথম রাউন্ডের খেলা শুরু হওয়ার আগে ব্যালকনিতে ঘোরাফেরা করতে করতেই নিজেকে শেষ করার ভাবনা মাথায় আসে তাঁর। নীচের দিকে তাকিয়ে ভেবেছিলেন, এ বার তা হলে ঝাঁপ দেওয়া যাক? শেষ করে দেওয়া যাক সব কিছু? এত কষ্ট, এত যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় তো খুবই সহজ।
বিতর্ক এবং কিরিয়স সমার্থক। যখনই মনে হয়েছে এ বার তাঁর চূড়োয় ওঠার সময়, কোনও না কোনও বিতর্ক তাঁকে পিছু টেনে নামিয়েছে নীচে। সহজ ম্যাচ অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা করে হেরে বসেছেন। ম্যাচ নিজের নিয়ন্ত্রণে না থাকলে এমন সব কাজ করেছেন, যাতে বিরক্ত হয়েছেন দর্শকরা। উড়ে এসেছে ব্যঙ্গাত্মক শিস। কখনও প্রতিপক্ষকে গালি দিচ্ছেন, কখনও আম্পায়ারের সঙ্গে ঝগড়া করছেন, কখনও দর্শকদের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন, কখনও ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে হেরে যাচ্ছেন, কখনও বোতল নিয়ে স্বমেহন করার মতো অশ্লীল আচরণ করছেন — তালিকা থামার নয়।