US open

পাঁচ ঘণ্টা ১৫ মিনিট! ইউএস ওপেনে আলকারাজ-সিনার লড়াইয়ে ভবিষ্যতের টেনিসের ঝলক

সিনারকে হারিয়ে ইউএস ওপেনের শেষ চারে পৌঁছে গেলেন আলকারাজ। তাঁর এই উত্তরণের পথ অবশ্য সহজ হল না। প্রতিযোগিতার ইতিহাসে দ্বিতীয় দীর্ঘতম লড়াই জিতলেন পিছিয়ে থেকেও।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৯:৪১
লড়াইয়ের পর শুভেচ্ছা বিনিময় সিনার এবং আলকারাজের।

লড়াইয়ের পর শুভেচ্ছা বিনিময় সিনার এবং আলকারাজের। ছবি: রয়টার্স

পাঁচ ঘণ্টা ১৫ মিনিট লড়াই করে ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে পৌঁছলেন কার্লোস আলকারাজ। কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যারাথন লড়াইয়ে তিনি ৬-৩, ৬-৭ (৭-৯), ৬-৭ (০-৭), ৭-৫, ৬-৩ ব্যবধানে হারালেন ইয়ানিক সিনারকে। ইউএস ওপেনের ইতিহাসে তাঁদের এই লড়াই দ্বিতীয় দীর্ঘতম ম্যাচ।

আলকারাজ এবং সিনার আগামী দিনে পুরুষদের টেনিসকে শাসন করবে বলে মনে করছেন টেনিস বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের অনুমান যে অমূলক নয়, সেটাই যেন প্রমাণ করতে নেমেছিলেন দুই তরুণ। টান টান ম্যাচে কখনও আলকারাজ এগিয়েছেন, কখনও সিনার। ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও পাঁচ সেটের লড়াইয়ে জয় ছিনিয়ে নিলেন স্পেনের ১৯ বছরের তরুণ। ২১ বছরের ইতালীয় শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেও টেনিসপ্রেমীদের মুগ্ধ করল তাঁর লড়াই।

Advertisement

খাতায়কলমে আলকারাজ ইউএস ওপেনের তৃতীয় বাছাই। সিনার ১১তম বাছাই। মুখোমুখি লড়াইয়ে এই ম্যাচের আগে পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন সিনার। সেই লড়াইয়েও সমতা ফেরালেন আলকারাজ। গত দু’দশকে রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচদের রুদ্ধশ্বাস লড়াই বার বার উঠে এসেছে আলোচনায়। তাঁদের টেনিসের লড়াই মুগ্ধ করেছে, বিস্মিত করেছে ক্রীড়াবিশ্বকে। তাঁরা সকলেই টেনিসজীবনের শেষ প্রান্তে। চোট-আঘাতে জর্জরিত। সব প্রতিযোগিতায় খেলেন না। মুখোমুখি সাক্ষাৎও তেমন দেখা যায় না। টেনিসপ্রেমীদের হয়তো আর আক্ষেপ থাকবে না। আলকারাজ, সিনাররা হাজির। দু’জনেই পেশাদার টেনিসে পা রেখেছেন ২০১৮ সালে। সেই অর্থে সবে শুরু তাঁদের পেশাদার টেনিস জীবন। আগামী দিনে পুরুষদের টেনিস যে তাঁরাই শাসন করবেন, সেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন আলকারাজ এবং সিনার।

সিনারকে হারিয়ে আলকারাজ প্রথম বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনালে উঠলেন। সিনার কি হারলেন? আসলে এই লড়াইয়ে জিতল টেনিস। কেবল সময়ের মাপকাঠিতে ইউএস ওপেনের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ম্যাচই শুধু নয়, তাঁদের এই লড়াই আধুনিক টেনিসের উদাহরণও হয়ে থাকল। দ্বিতীয় সেটে চারটি সেট পয়েন্ট বাঁচিয়ে টাইব্রেকে নিয়ে যান সিনার। শেষ পর্যন্ত সেটও ছিনিয়ে নেন। তৃতীয় সেট টাইব্রেকারে গড়ালে আলকারাজকে স্রেফ উড়িয়ে দিলেন। পিছিয়ে পড়েও অবশ্য হাল ছাড়েননি নাদালের দেশের তরুণ। পাল্টা লড়াইয়ে শেষ দু’টি সেট ছিনিয়ে নিয়ে ম্যাচ জিতে নিলেন। দুই তরুণই বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামের শুরু থেকে ভাল ছন্দে ছিলেন। কোয়ার্টার ফাইনালের তীব্র লড়াইয়ে দু’জনেই একাধিক বার অন্যের সার্ভিস ভাঙলেন। শেষ পর্যন্ত আলকারাজ জিতলেন, সিনার হারলেন। আসলে কিন্তু জিতে গেল টেনিস। যে টেনিস ফেডেরার, নাদাল, জোকোভিচদের পর নতুন যুগের সূচনা করল।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের সেমিফাইনালে স্টেফান এডবার্গ এবং মাইকেল চ্যাংয়ের লড়াই হয়েছিল পাঁচ ঘণ্টা ২৬ মিনিট। যা ইউএস ওপেনের ইতিহাসে দীর্ঘতম ম্যাচ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement