বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ। ছবি এআইএফএফ
সবে সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এখনও সব কিছু বুঝে উঠতে পারেননি। তবে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা যে ভাবে কালিমালিপ্ত হয়েছে, তা কাটিয়ে দ্রুত সংস্থার পুরনো গরিমা ফিরিয়ে আনতে মরিয়া সভাপতি কল্যাণ চৌবে। কলকাতায় নিজের প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন, কলকাতার দুই প্রধানের ব্যাপারে আলাদা করে পরিকল্পনা করা হবে। পাশাপাশি, অতীতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা ফেরানোর পরিকল্পনা যেমন তাঁর রয়েছে, তেমনই কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হবে টেকনিক্যাল কমিটির বাইরে থাকা প্রাক্তন ফুটবলারদেরও।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ বলেছেন, “দুই প্রধানের বিরাট জনসমর্থন রয়েছে। ওদের যত জন সমর্থক, তত জনসংখ্যা বোধ হয় অনেক দেশেই থাকে না। আমি নিজেও দুই প্রধানে খেলেছি। এটা বলাই যায়, দুই প্রধানের জন্য আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। তবে আমরা দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা। আমাদের কাছে দুই প্রধানের যেমন গুরুত্ব, তেমনই এরিয়ান বা ভ্রাতৃ সঙ্ঘেরও গুরুত্ব রয়েছে। সবার দিকটাই আমাদের ভেবে চলতে হবে।”
ঐতিহ্যশালী ফেডারেশন কাপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও রোভার্স কাপ-সহ একাধিক প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফেডারেশন কাপ নতুন করে সুপার কাপ হিসাবে চালু করা হলেও ফেডারেশন কাপের গরিমা পায়নি। কল্যাণ জানালেন, প্রাচীন প্রতিযোগিতাগুলি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন তাঁরা। কল্যাণের কথায়, “অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে যেগুলি বিশ্বের যে কোনও ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতার থেকে কোনও অংশে কম নয়। তাই শুধু পুরনো প্রতিযোগিতা ফেরানোই নয়, অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাও ভাল করে করব। সন্তোষ ট্রফি আরও ভাল ভাবে আয়োজন করতে চাই।”
আইএসএল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আইএসএলে কেন অবনমন নেই, আই লিগ নিয়ে কোনও আলাদা ভাবনাচিন্তা রয়েছে কি না, সে প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেছেন, “আমরা আইএসএল আয়োজন করার ব্যাপারে এফএসডিএলের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথাবার্তা বলেছি। ওদের সঙ্গে ২০২৪-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। চেষ্টা করব তার মধ্যেই যদি কিছু সংশোধন করা যায়। আইএসএল সরাসরি আমরা আয়োজন করতে পারি কি না, সেটা নিয়েও কথা হবে। আই লিগের উন্নতির চেষ্টাও করা হবে। চাইব আরও বেশি দল খেলুক।”
ফুটবলার না সভাপতি, কোনটা সবচেয়ে বেশি কঠিন? কল্যাণের সামনে ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল এই প্রশ্ন। তাঁর উত্তর, “আমরা সবাই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিই, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিই। আমরা আরও একটু উঁচুতে গেলে বিএ বা বিএসসি পরীক্ষা দিই। যখন যে বয়সে পরীক্ষা দিই, সেই সময়ে সেটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা। তাই ফুটবলার হিসাবে আমার কাছে অন্য রকম পরীক্ষা ছিল। এটা আর এক রকম পরীক্ষা। আশা করি এটাতেও সাফল্য পাব।”
তাঁর সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়া নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। তবে সভাপতি হিসাবে এআইএফএফ-কে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চান কল্যাণ। সাফ বলেছেন, “আমাদের আগে যারা ছিল তারা জ্যোতিষীর পিছনে ১৬ লাখ টাকা খরচ করেছে। আরও অনেক টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি। আমরা চাই না জনগণের করের টাকা কোনও ভাবে তছরুপ হোক। কেন্দ্রীয় সরকার বা ফিফা যে টাকা দেয়, সেটাকে পুরোপুরি কাজে লাগানোই আমাদের উদ্দেশ্য।”