ঋতুস্রাব চলাকালীন পেটের অসহ্য যন্ত্রণা নিরাময় করতে পারে হলুদ। ছবি: সংগৃহীত।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব উদ্বেগের। অতিরিক্ত রক্তপাত ভাল নয়। আবার, প্রতি মাসে নিয়ম মেনে ঋতুস্রাব হলেও পেটের অসহ্য যন্ত্রণাও স্বাভাবিক নয়। এই ধরনের ঋতুস্রাবজনিত কষ্টে কুঁকড়ে থাকেন মাসের কয়েকটি দিন। ব্যাঘাত ঘটে বাইরের কাজকর্মে। শারীরিক দুর্বলতা এতটাই থাকে যে, বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা থাকে না। পিসিওএস থাকলে এই উপসর্গগুলি আরও কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে। নিরাময় পেতে অনেকেই এই সময় বিভিন্ন ওষুধ খান। তবে এই ব্যথানাশক ওষুধ শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তার চেয়ে ঘরোয়া উপায়ে সুস্থ থাকার উপায়গুলি জেনে নিতে পারেন।
হলুদ কেন উপকারী?
১) রক্তে প্রোস্টাগ্ল্যানডিন্স নামক উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে জরায়ুর পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণ বেড়ে যায়। প্রদাহজনিত সমস্যাও বাড়তে থাকে। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন। ‘ডাভপ্রেস’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই কারকিউমিন হল একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা ঋতুস্রাব চলাকালীন শারীরিক অস্বস্তি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
২) ঋতুস্রাব চলাকালীন পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হয় অনেকের। ‘কোরিয়ান জার্নাল অফ ফ্যামিলি মেডিসিন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, হলুদ প্রদাহনাশক হিসাবে দারুণ কাজের। পেশি শিথিল করতেও হলুদের ভূমিকা রয়েছে।
৩) হলুদে প্রাকৃতিক ভাবে ‘অ্যান্টিস্প্যাসমোডিক’ উপাদান রয়েছে। এই উপাদানটি জরায়ুর পেশি শিথিল করতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। অতিরিক্ত সঙ্কোচন-প্রসারনের ফলে পেটে যন্ত্রণা হয়। ঘরোয়া টোটকা হিসাবে ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটে হলুদ মিশিয়ে খেলে উপকার মিলবে।
৪) হরমোনের সমতার অভাব হলেও ঋতুস্রাবজনিত কষ্ট বৃদ্ধি পায়। হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন। এই উপাদানটি ইস্ট্রোজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৫) ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার বেশ কিছু দিন আগে অনেকের পেটফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা হয়। অনেকের মনমেজাজ বিগড়ে থাকে, ক্লান্তি গ্রাস করে। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার দিন দশেক আগে থেকে এক চিমটে হলুদ খেতে শুরু করলে এই ধরনের সমস্যা অনেকটা এড়ানো যায়।
কী ভাবে খাবেন হলুদ?
সবচেয়ে সহজ পন্থা হল ঈষদুষ্ণ জলে এক চিমটে হলুদ মিশিয়ে খাওয়া। অনেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঈষদুষ্ণ দুধে হলুদ মিশিয়ে খান। চাইলে স্মুদিতে এক টুকরো কাঁচা হলুদ মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।