উইম্বলডন থেকে
Novak Djokovic

Novak Djokovic: দুরন্ত প্রত্যাবর্তনে ফাইনালে জোকোভিচ

এ দিন ম্যাচের শুরুতেই কিন্তু চমকে দেয় নরি। ভেঙে দেয় জোকোভিচের সার্ভিস। এই সেটে এর পরে দাপট দেখায় নরিই।

Advertisement
জয়দীপ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২২ ০৭:২১
হুঙ্কার: চার সেট লড়ে ফাইনালে ওঠার পরে জোকোভিচ। রয়টার্স

হুঙ্কার: চার সেট লড়ে ফাইনালে ওঠার পরে জোকোভিচ। রয়টার্স

ম্যাচ পয়েন্টটা জিতেই নোভাক জোকোভিচ সেন্টার কোর্টে যে হুঙ্কারটা ছাড়ল, তাতেই বোঝা যাচ্ছিল কতটা চাপে ছিল ছ’বারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন। ব্রিটেনের ক্যামেরন নরি সত্যিই একটা সময় চাপে ফেলে দিয়েছিল জোকোভিচকে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য চার সেট লড়ে আট নম্বর উইম্বলডন ফাইনালে উঠতে জোকোভিচের লাগল ঠিক আড়াই ঘণ্টা। ফল ২-৬, ৬-৩, ৬-২, ৬-৪।

এ দিন ম্যাচের শুরুতেই কিন্তু চমকে দেয় নরি। ভেঙে দেয় জোকোভিচের সার্ভিস। এই সেটে এর পরে দাপট দেখায় নরিই। তার জন্য জোকোভিচের অবদানও কম ছিল না। একের পর এক আনফোর্সড এরর করে যায় শীর্ষবাছাই জোকোভিচ। এর আগে এক বারই জোকোভিচের মুখোমুখি হয়েছিল নরি। গত বছর এটিপি টুর ফাইনালসে। সেখানে স্ট্রেট সেটে জোকোভিচ উড়িয়ে দিয়েছিল নরিকে। তিনটের বেশি গেম জিততে পারেনি নরি। এই ম্যাচটার আগেও ব্রিটিশ খেলোয়াড়ের সমর্থকদের মধ্যে অনেকে চিন্তায় ছিল, নরি প্রথম থেকে ম্যাচে জমিয়ে বসতে পারবে তো! কিন্তু দেখা যায় হচ্ছে উল্টোটা। জোকোভিচকেই ছন্দে দেখাচ্ছিল না। তার মধ্যে কয়েক বার ড্রপ শট ব্যবহার করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়। যার পুরো ফায়দা তুলে নিয়ে নরি প্রথম সেট জিতে হুঙ্কার দিতে থাকে। তার সঙ্গে সেন্টার কোর্টের দর্শকদের প্রবল সমর্থন তো ছিলই।

Advertisement

সবাই যখন ভাবছে দ্বিতীয় সেটে নরি আরও চেপে ধরবে জোকোভিচকে, ঠিক তখনই ছন্দে ফিরতে দেখা যায় ছ’বারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নকে। নরির সবচেয়ে বড় দুটো অস্ত্র হল শক্তিশালী সার্ভিস এবং নিখুঁত গ্রাউন্ড স্ট্রোক। যার জোরে প্রথম সেট জোকোভিচের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পেরেছিল। এর জবাবে এ বার নোভাক উইনার মারার চেষ্টা বেশি না করে র‌্যালিতে জোর দেয়। টেনিস সার্কিটে সবাই জানে, জোকোভিচের বিরুদ্ধে র‌্যালিতে যাওয়া কতটা কঠিন। প্রতিপক্ষের অনেকটা দেওয়ালের মতো মনে হতে পারে ওকে। যে বল মারুক, সেটা ঠিক ফিরে আসবে। নরিও সেই ফাঁদে পড়ে যায়। জোকোভিচও ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছিল। আসলে চ্যাম্পিয়নরা এ রকমই হয়। ঠিক সময় গিয়ারটা পাল্টে ফেলতে পারে। জোকোভিচও সেটাই করল। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ছবিটা পাল্টে যায়। নরি আর বিশেষ চাপে ফেলতে পারেনি ওকে। নরি যে জোকোভিচের বিরুদ্ধে একটা সেট জিততে পেরেছে সেটাই অনেক।

ভেবেছিলাম ফাইনালে জোকোভিচ বনাম রাফায়েল নাদালের লড়াই হবে। কিন্তু নাদালের ভক্তরা চোটের জন্য ওর সেমিফাইনাল থেকে সরে যাওয়া নিয়ে হতাশ। খারাপ লাগছে আমারও। তবে আমার মতে নাদাল একদম ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। টেলর ফ্রিৎজ় এর সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালের সময় ও পেটের পেশিতে চোট পায়। ওই ম্যাচে প্রথম সেট চলার সময়ই ওর মুখ-চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছে। দ্বিতীয় সেটে মেডিক্যাল টাইমআউটও নিতে হয় ওকে। নাদালের বাবা প্লেয়ার্স বক্স থেকে ছেলেকে বারবার বলছিলেন, তুমি ম্যাচটা ছেড়ে দাও। কিন্তু নাদাল কথা শোনেনি। যন্ত্রণা নিয়েই পাঁচ সেট লড়ে ম্যাচটা শেষ করে। জেতেও। কিন্তু এর পরে দুটো ম্যাচ খেলতে পারার মতো শারীরিক অবস্থা ওর নেই। বরং খেললে চোট আরও বেড়েযেতে পারে।

গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে এ ভাবে ওয়াকওভার দেওয়ার ঘটনা কোনও দিন হয়নি। অন্তত আমি দেখিনি। ফ্রিৎজ়-এর জন্য খারাপ লাগছে। ছেলেটা কিন্তু খুব ভাল খেলেছিল ম্যাচটায়। সেন্টার কোর্টে এত দর্শকের মধ্যেও মাথা ঠান্ডা রেখে খেলে যাচ্ছিল। কিন্তু শুধু পারফরম্যান্স দিয়েই এ সব ম্যাচ জেতা যায় না। তার সঙ্গে ভাগ্যের সঙ্গও কিছুটা লাগে। যা ওর সঙ্গে সে দিন ছিল না। যদি থাকত, তা হলে নাদালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওই মুখোমুখি হত নিক কিরিয়সের। কিন্তু নাদাল সরে যাওয়ায় সুবিধে হয়ে গেল কিরিয়সের। খেলোয়াড় জীবনে এই প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে পৌঁছে গেল ও।

খারাপ লাগছে সানিয়া মির্জার জন্যও। মিক্সড ডাবলসের সেমিফাইনালে এত ভাল খেলেও ছিটকে গেল। না হলে নিজের শেষ উইম্বলডনে ফাইনালে খেলতে পারত।

আরও পড়ুন
Advertisement