বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগ সম্পূর্ণ কাজে লাগালেন বিরাট কোহলি। এ বারের আইপিএলে প্রথম শতরান এল বিরাট-ব্যাট থেকে। তাঁর শতরানের ইনিংসের দাপটে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ৩ উইকেটে ১৮৩ রান তুলল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল নিয়ে বিতর্কের জবাবও দিয়ে দিল কোহলির ব্যাট।
দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের জন্য ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ় খেলেননি কোহলি। আইপিএলের আগে বেশ কিছু দিন ক্রিকেট থেকে দূরে রেখেছিলেন নিজেকে। অনুশীলনও করেননি। তাতে অবশ্য কোহলির ক্রিকেটীয় দক্ষতায় একটুও খামতি তৈরি হয়নি। চেনা মেজাজেই আইপিএলে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। শনিবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে আইপিএলে নিজের ৫৩তম অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন ৩৯ বলে। জয়পুরের ২২ গজে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে দেখা গিয়েছে কোহলিকে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ট্রেন্ট বোল্টের মতো বোলারেরা তাঁকে থামানোর উপায় খুঁজে পাননি। পরে আইপিএলে নিজের অষ্টম শতরান পূর্ণ করলেন ৬৭ বলে। ১২টি চার এবং ৪টি ছক্কা দিয়ে সাজালেন নিজের ইনিংস। ওপেন করতে নেমে দলের ইনিংসের শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলেন। দায়িত্ব নিয়ে খেললেন প্রতিটি বল। দলকে এক বলের জন্যও চাপে পড়তে দিলেন না। ৭২ বলে ১১৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে জবাব দিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বিতর্কেরও। এই ইনিংসেই আইপিএলে ৭৫০০ রানের মাইলফলকও স্পর্শ করলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। প্রথম ব্যাটার হিসাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করলেন তিনি। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৩৪ রান করার সঙ্গে সঙ্গে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন কোহলি।
কোহলিকে বাদ দিয়ে আসন্ন বিশ্বকাপের দল গঠনের পরিকল্পনা করেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ। তাঁর সেই ভাবনা কত বড় ভুল ছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেল জয়পুরের ২২ গজে। কোহলি প্রমাণ করে দিলেন ২০ ওভারের ক্রিকেটেও তাঁকে থামানো সহজ নয়। তরুণদের ক্রিকেটেও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। বোলারদের শাসন করার বিরাট ভঙ্গি বোর্ড কর্তাদের ভুল ভাঙাতে পারে। ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা আগেই কোহিলকে বাদ দেওয়ার কথা শুনে ‘বিদ্রোহ’ করেছিলেন। সতীর্থের বিদ্রোহকেও শক্তি দিয়ে গেল শনিবার কোহলির শতরানের ইনিংস। কয়েক দিন আগে সাংবাদিকদের কোহলি অনুরোধ করেছিলেন, ‘‘আমাকে কিং বলবেন না।’’ তবু ব্যাট হাতে যে তিনিই ‘রাজা’ তার প্রমাণ আরও এক বার পেল ক্রিকেট দুনিয়া।
কোহলির সঙ্গে মানানসই ছিলেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ডুপ্লেসিও। তিনি ৪৪ রান করলেন ৩৩ বলে। তাঁর ব্যাট থেকে এল ২টি চার এবং ২টি ছয়। প্রথম উইকেটের জুটিতে কোহলির সঙ্গে তুললেন ১৪ ওভারে ১২৫ রান। তিনি আউট হওয়ার পর দলের ইনিংস টানলেন মূলত কোহলি। কারণ তিন নম্বরে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ব্যর্থ (১)। চার নম্বরে নামা সৌরভ চৌহানও রান পেলেন না (৯)। শেষ পর্যন্ত কোহলির সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন ক্যামেরন গ্রিন (৫)।
রাজস্থানের বোলারদের মধ্যে সফলতম চহাল ৩৪ রানে ২ উইকেট নিলেন। ৩৩ রানে ১ উইকেট নান্দ্রে বার্জারের। কোহলির দাপটের সামনে উইকেটহীন থাকতে হল বোল্ট, অশ্বিনদের।