IPL 2024

অধিনায়ক থেকে নায়ক, নেতৃত্বের তাজ খুলে মাঠে নামা ধোনিই নেতা! চেনা ফর্মে ৪২ বছরের ‘বুড়ো’

মঞ্চে আইপিএল ট্রফি আনলেন, টস করলেন রুতুরাজ। অথচ মাঠে নেমে বার বার ছুটলেন ধোনির কাছে। তাঁর পরামর্শে দল পরিচালনা করলেন। চেন্নাইয়ের মাঠ যেন অধিনায়কত্বের কর্মশালায় পরিণত হল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৪ ২৩:৫৬
picture of MS Dhoni

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ছবি: আইপিএল।

নেতৃত্বের তাজ খুলে আইপিএল খেলতে নেমেছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। স্বেচ্ছায় ছেড়েছেন চেন্নাই সুপার কিংসের নেতৃত্ব। ছাড়লেই কি আর ছাড়া যায়! ধোনিও পারলেন না। আইপিএলের প্রথম অন্তত দেখিয়ে দিয়ে গেল, ৪২ বছরের ‘বুড়ো’ই পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নদের ভরসা।

Advertisement

গত বছর আইপিএল খেলেছিলেন হাঁটুর চোট নিয়ে। পায়ের সমস্যার জন্য নিজেকে ক্রমাগত ব্যাটিং অর্ডারের নীচে নামিয়ে নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। উইকেটের পিছনেও চেনা স্বাচ্ছন্দ সাজঘরে রেখে মাঠে নামতে হচ্ছিল ধোনিকে। শুক্রবার ২৯৮ দিন পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে দেখা গেল ধোনিকে। আগের ম্যাচেই তিনি ছিলেন অধিনায়ক। এ দিন নামলেন দলের এক সাধারণ ক্রিকেটার হিসাবে। সেই সাধারণ ক্রিকেটারের কাছেই বার বার ছুটলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। এশিয়ান গেমসে সোনাজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক পরামর্শ চাইলেন ধোনির কাছে। বোলিং পরিবর্তন থেকে ফিল্ডিং সাজানো— সব কিছুই যেন হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছিলেন ধোনি। কয়েক বার ফিল্ডারদের নিজে থেকেই নির্দেশ দিলেন চেন্নাইয়ের সদ্য প্রাক্তন অধিনায়ক। রুতুরাজের ভূমিকা তখন নেহাতই দর্শকের।

অভিজ্ঞ ধোনি এ বার অনেক বেশি তরতাজাও। উইকেটের পিছনে চেনা ঝলক দেখা গেল একাধিক বার। বয়স থাবা বসাতে পারেনি তাঁর রিফ্লেক্সেও। বেঙ্গালুরুর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে নিশ্চিত চার বাঁচালেন। ব্যাটার ফ্যাফ ডুপ্লেসি অসহায়ের মতো দেখলেন। আবার তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বল। দীপক চাহারের বাউন্সার ডুপ্লেসির মাথার অনেক উপর দিয়ে চলে গেল। ওয়াইড বলে চার যেন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু উইকেটের পিছনে যে ধোনি। সময় মত লাফিয়ে থামিয়ে দিলেন বল। ধোনির লাফ দেখে সিংহ গর্জন চেন্নাইয়ের ৩৪ হাজারের গ্যালারিতে।

পঞ্চম ওভারের শেষ বলেও আবার চেনা মেজাজের ধোনি। মুস্তাফিজুর রহমানের বল রজত পটীদারের ব্যাট ছুঁয়ে চলে গেল ধোনির বিশ্বস্ত দস্তানায়। এই ক্যাচকে ছাপিয়ে গেল তিন পর ধরা আর একটি ক্যাচ। প্রথম ক্যাচে ধোনির রিফ্লেক্স দেখা গিয়েছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে দেখা গেল তাঁর নিখুঁত অনুমান ক্ষমতা। দীপক চাহারের বল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক এবং প্রথম স্লিপের মাঝামাঝি জায়গা দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। অন্য যে কোনও উইকেটরক্ষক হয়তো ঝাঁপিয়ে বল তালুবন্দি করতেন। ধোনি তা করলেন না। দু’তিন পা ডান দিকে সরে গিয়ে সহজ করে নিলেন ক্যাচ। উইকেটের পিছনে পুরো সময়ই কি নিখুঁত ছিলেন ধোনি? না। বেঙ্গালুরুর ইনিংসের ১৯ ওভারের চতুর্থ বলে তুষার দেশপাণ্ডের ওয়াইড বল এক বারে ধরতে পারলে আরও এক রান দৌড়ে নিতে পারতেন না অনুজ রাওয়াত। বল ফস্কে নিজের উপর বিরক্তি প্রকাশ করলেন ধোনি। আবার সেই খামতিই পুষিয়ে দিলেন ইনিংসের শেষ বলে। তুষারের বল ধরেই উইকেট ভেঙে দিলেন। দ্রুত দৌড়ে, ঝাঁপ দিয়েও ক্রিজ়ে পৌঁছতে পারলেন না অনুজ। শেষ রানটা হল না বেঙ্গালুরুর।

ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ধোনির। তাঁর সেই স্টাইলে মুগ্ধ হয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ় মুশারফও। ক্রিকেটজীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়ানো ধোনি আবার লম্বা চুলে। কেশর ফুলিয়েই হয়তো প্রিয় ২২ গজকে বিদায় জানাবেন ঝাড়খণ্ডের সিংহ। থুরি, চেন্নাইয়ে থালা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement