Saline Controversy

মেদিনীপুর মেডিক্যালে কর্মবিরতি, রোগী পরিষেবা! জুনিয়র ডাক্তারদের ন’ঘণ্টার জিবিতে কী নিয়ে আলোচনা

স্যালাইন-কাণ্ডে ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার (পিজিটি)। ওই ছয় জুনিয়র ডাক্তারকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩৭
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি জুনিয়র ডাক্তারেরা।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সাংবাদিকদের মুখোমুখি জুনিয়র ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।

পূর্ণ কর্মবিরতির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছিয়ে আসেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুক্রবার সেখানকার জরুরি বিভাগ, আইসিইউ, প্রসূতি ও শিশু বিভাগ তো বটেই, বহির্বিভাগেও পরিষেবা প্রায় স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু এই ছবি দেখা যাবে না। প্রায় ন’ঘণ্টা জিবি (জোনারেল বডি) বৈঠক শেষে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, মানবিকতার কারণে পূর্ব ঘোষণা থেকে সরেছেন। তবে আংশিক কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তাঁরা। ভবিষ্যতে পূর্ণ কর্মবিরতিতেও যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

Advertisement

স্যালাইন-কাণ্ডে ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার (পিজিটি)। ওই ছয় জুনিয়র ডাক্তারকে নিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই স্ত্রীরোগ এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের ২২ জন জুনিয়র ডাক্তার কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে হাসপাতালের বাকি সব বিভাগেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি শুরু হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু শুক্রবার সকালে কর্মবিরতির ছবি দেখা যায়নি মেদিনীপুর মেডিক্যালে। তবে কি আন্দোলনের ডাক দিয়েও পিছু হটলেন ওই হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা? কেন? এমন নানা প্রশ্ন ওঠে। যার জবাবে শুক্রবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘আমরা কর্মবিরতিতেই রয়েছি। তবে এখনও পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি। আংশিক কর্মবিরতি চলছে।’’

কেন আংশিক কর্মবিরতি? জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘মানবিকতার কারণে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য জরুরি ক্ষেত্রে পরিষেবা দেওয়া হবে। হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি আছেন সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারদের অধীনে। এ হেন পরিস্থিতিতে রোগী পরিষেবা যাতে কোনও ভাবে ব্যাহত না হয়, তা নিয়ে আমরা ভেবেছি। আমাদের অধীনে যাঁরা ভর্তি আছেন, তাঁদের ছুটি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আংশিক কর্মবিরতি চালিয়ে যাব। আমাদের কর্মবিরতির কথা সিনিয়রদের জানানো হয়েছে। তাঁদের কিছুটা সময় দিতে চাই। তার পরই পূর্ণ কর্মবিরতিতে যাব।’’ তবে তত দিনে আন্দোলনের ঝাঁঝ তাঁরা আরও বৃদ্ধি করবেন বলে জানান জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘শনিবার হাসপাতালে অবস্থান বিক্ষোভ করব আমরা।’’ উল্লেখ্য, আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা ঠিক করতে শুক্রবার বেলা ৩টে থেকে জিবি বৈঠকে বসেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই বৈঠক চলে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত। তার পরই নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানান জুনিয়র ডাক্তারেরা।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পাঁচ প্রসূতি। অভিযোগ, স্যালাইন নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। পরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অসুস্থ হয়ে পড়া প্রসূতিদের এক জনের সন্তানও প্রাণ হারায়। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের দিকে আঙুল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির পরেও ওই প্রসূতি এবং শিশুকে বাঁচানো যায়নি। কারণ, চিকিৎসকেরা তাঁদের কর্তব্য পালন করেননি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘যাঁদের কাছে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়, যাঁদের হাতে সন্তান জন্মায়, তাঁরা দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে মা এবং সন্তানকে বাঁচানো যেত।’’

Advertisement
আরও পড়ুন