Kolkata Knight Riders vs Sunrisers Hyderabad

রিঙ্কু, রানার রান্নায় জমল হায়দরাবাদি বিরিয়ানি! ৫ রানে জিতে প্লে-অফের দৌড়ে টিকে কেকেআর

হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জিতে প্লে-অফে যাওয়ার দৌড়ে রইল কলকাতা। ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট পেয়েছে তারা। আট নম্বরেই রয়েছে কলকাতা। বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদকে ৫ রানে হারায় তারা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ ২৩:২২
Andre Russell

হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৬১ রানের জুটি গড়েন রিঙ্কু এবং রানা। ছবি: আইপিএল

হায়দরাবাদের বিরিয়ানির স্বাদ চেখে মাঠে নেমেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটাররা। সেই স্বাদ আরও বেড়ে গেল বৃহস্পতিবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৫ রানে হারিয়ে। ব্যাট হাতে রিঙ্কু সিংহ এবং নীতীশ রানার লড়াই ব্যর্থ হতে দেননি শার্দূল ঠাকুররা। প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা ১৭১ রান তোলে। হায়দরবাদের ইনিংস শেষ ১৬৬ রানে।

টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেন নীতীশ রানা। বৃষ্টি হয়েছিল হায়দরাবাদে। পিচ ঢেকে রাখার কারণে কিছুটা মন্থর হবে বলেই মনে করা হয়েছিল। সেই কারণে স্পিনারদের এই ম্যাচে সুবিধা পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল ম্যাচ শুরুর আগে। কেকেআরের ব্যাটাররা যদিও স্পিনার, পেসার কোনও বোলারকেই সামলাতে পারলেন না। তাঁরা এলেন এবং ফিরে গেলেন। এর মাঝে ব্যতিক্রম রিঙ্কু সিংহ এবং নীতীশ।

Advertisement

পুরো আইপিএলেই ধারাবাহিক ভাবে রান পাচ্ছেন রিঙ্কু। কেকেআরের হয়ে নিয়মিত রান করা রিঙ্কু না থাকলে এই ম্যাচে ১৫০ রান পার করা কঠিন হত। ৩১ বলে ৪২ রান করা নীতীশ তিনটি ছক্কা এবং তিনটি চার মারেন। অর্থাৎ ছ’বলে ৩০ রান করেন তিনি। বাকি ১২ রান করতে নেন ২৫ বল। রিঙ্কু সেখানে চার, ছয় নয়, বরং সিঙ্গলস নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখার কাজটি করছিলেন। তাঁরা ৬১ রানের জুটি গড়েন। যা কেকেআর-কে লড়াই করার মতো জমি তৈরি করে দিয়েছিল।

এই ম্যাচে কলকাতা দলে ছিলেন জেসন রয় এবং রহমানুল্লা গুরবাজ। কিন্তু দুই বিদেশি ওপেনারের কেউই কলকাতাকে ভরসা দিতে পারলেন না। গুরবাজ কোনও রান না করেই আউট হয়ে যান। তিনি প্রথম বলেই ছক্কা মারতে গেলেন। মার্কো জানসেনের বলে তাঁর ব্যাট দেরিতে আসে। ক্যাচ উঠে যায় মিডউইকেটে। শুরুতেই এমন ভুল কলকাতাকে ধাক্কা দেয় দ্বিতীয় ওভারেই। জেসন করেন ২০ রান। ১৯ বল খেলেন তিনি সেই রান তুলতে। বেঙ্কটেশ আয়ার মাত্র ৭ রান করে আউট হন। জানসেনের বাউন্সার সামলাতে না পেরে আউট হন তিনি। ৩৫ রানের মধ্যে কলকাতার প্রথম তিন ব্যাটার সাজঘরে ফিরে যান।

আন্দ্রে রাসেল ১৫ বলে ২৪ রান করেন। দু’টি ছক্কা মারেন তিনি। কিন্তু বেশির ভাগ ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও বড় রান এল না তাঁর ব্যাট থেকে। ইনিংস গড়ার মতো নির্ভরতা এখন আর রাসেলের থেকে পাচ্ছে না কলকাতা। ব্যাট হাতে নির্বিষ সুনীল নারাইনও। ২ বলে মাত্র ১ রান করে আউট তিনি। যে ভাবে আউট হলেন তা অবাক করার মতো। ভুবনেশ্বর কুমারের মন্থর বল বুঝতে না পেরে ব্যাট চালালেন বলের লাইনে না গিয়েই। এক্সট্রা কভারে দাঁড়িয়ে থাকা মায়াঙ্কের হাতে ক্যাচ চলে যায়। শার্দূল ঠাকুর করেন ৮ রান।

হায়দরাবাদের হয়ে উইকেট নেওয়া শুরু করেছিলেন মার্কো জানসেন। তাঁর প্রথম ওভার থেকেই উইকেট হারাতে থাকে কলকাতা। পাওয়ার প্লে-তেই তিন ওভার বল করেন তিনি। কিন্তু জানসেনকে দিয়ে পরে আর বল করানো হল না। যা অবাক করার মতোই সিদ্ধান্ত। পিচের চরিত্র ভুজে অধিনায়ক এডেন মার্করাম নিজে স্পিন বল করতে শুরু করেন। যা কাজেও লাগে হায়দরাবাদের। নীতীশ রানার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটা তিনিই নেন। নিজের বলে ছুটে মিড অনের দিকে গিয়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন মার্করাম। এ বারের আইপিএলের অন্যতম সেরা ক্যাচগুলি তালিকায় ঢুকে পড়তে পারে এই ক্যাচ। হায়দরাবাদের হয়ে দু’টি করে উইকেট নেন জানসেন এবং টি নটরাজন। একটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর, কার্তিক তিয়াগি, মার্করাম এবং মায়াঙ্ক মারকান্ডে।

১৭২ রানের লক্ষ্য মাথায় নিয়ে খেলতে নেমে হায়দরাবাদ শুরু থেকেই উইকেট হারাচ্ছিল। কিন্তু তার মাঝেও রান তুলে যাচ্ছিলেন মার্করামরা। হায়দরাবাদের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার রাহুল ত্রিপাঠী ৯ বলে ২০ রান করেন। তিনি যে ভাবে খেলতে শুরু করেছিলেন তাতে এক সময় মনে হচ্ছিল সহজেই জিতে যাবে হায়দরাবাদ। কিন্তু অল্প রানেই তাঁকে ফেরান রাসেল। দু'টি উইকেট নেন শার্দূল ঠাকুর। যিনি শেষ ওভারে বল করতে এলেও নীতীশ তাঁর হাত থেকে বল নিয়ে দেন বরুণ চক্রবর্তীকে। শেষ ওভারে ম্যাচ জেতালেন তিনিই।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে হায়দরাবাদের প্রয়োজন ছিল ৯ রান। কিন্তু মাত্র ৩ রানই করতে পারল হায়দরাবাদের। সেটার কৃতিত্ব অবশ্যই বরুণের। বিস্ময় স্পিনার শেষ ওভারে গতির হেরফের করে বুঝিয়ে দিলেন এখনও ম্যাচ জেতাতে পারেন।

আরও পড়ুন
Advertisement